কলকাতা: 'মানুষ বড় সস্তা, কেটে, ছড়িয়ে দিলে পারতো', শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের কবিতার পঙতিই যেন 'অমোঘ' সত্য হয়ে নেমে এসেছে ইজরায়েল (Israel)-গাজার (Gaza) প্রতিটি পথের বাঁকে বাঁকে। একটি করে মোড়, আর একটি করে মৃত্যু। রকেট-গুলি-বোমাবর্ষণে যখন উত্তপ্ত ইজরায়েল, সেই সময়ই একটি ভিডিও প্রকাশ্যে এসেছিল। যেখানে দেখা যায় এক জার্মান (German) মহিলার ক্ষতবিক্ষত নগ্ন দেহ নিয়ে ইজরায়েলের রাস্তা পরিদর্শন করছে হামাস (Hamas) জঙ্গিরা।
সেই ভিডিওর সত্যতা যাচাই করেনি এবিপি আনন্দ। তবে সেই ঘটনাকে বর্বর আখ্যা দিয়ে নিন্দার ঝড় উঠেছিল বিশ্বে। প্রাথমিকভাবে জঙ্গি গোষ্ঠী হামাস দাবি করেছিল ওই মহিলা ইজরায়েলি সেনার সদস্য। যদিও ছবি প্রকাশ্যে আসতেই ওই মহিলার দিদি জানিয়েছিলেন তাঁর বোন, যিনি হামাসের হাতে অপহৃত, নাম শানি লুক, একজন জার্মান নাগরিক। তবে প্রাথমিকভাবে শানি লুকের মৃত্যুর খবর নিয়ে একাধিক তথ্য প্রকাশ্যে এলেও, এদিন ইজরায়েল সরকার এবং শানি লুকের পরিবার জানায় যে, মৃতদেহ তাঁরা শনাক্ত করেছে অবশেষে।
গাজায় যুদ্ধে রত ইজরায়েলি সেনাদের একটি দল তাঁর দেহ উদ্ধার করেছে বলে সরকারিভাবে জানান হয়েছে। এই খবর শানি লুকের দিদি আদি লুক সোশাল মিডিয়াতেও জানিয়েছেন। তিনি লেখেন, 'আমরা মন থেকে ভেঙে পড়েছি। সেই হৃদয়বিদারক মন নিয়েই আমার বোনের মৃত্যুর খবর জানাচ্ছি সকলকে।'
জানা যায়, গাজা সীমান্তের কাছে সুপারনোভা মিউজিক ফেস্টিভালে যোগ দিতে এসেছিলেন ২৩ বছরের শানি লুক। সেই সময়ই হামাস জঙ্গি গোষ্ঠীর হাতে বন্দি হন শানি। সোশাল মিডিয়ায় শানির প্রতি হামাসের 'বর্বরতা'র ভিডিও ভাইরাল হতেই তাঁর মা রিকার্ডা লুক জার্মান সরকার এবং ইজরায়েলি সরকারের কাছে আর্জি জানিয়েছিলেন মেয়েকে উদ্ধারের জন্য।
ওই ভিডিওতে দেখা গিয়েছিল জার্মান ওই তরুণীর দেহ একটি পিকআপ ভ্যানে রাখা ছিল। জঙ্গিদের সেই গাড়ির পিছু নিয়েছিল এক দল মানুষ। তাঁরা চিৎকার করছিল। ইজরায়েলের উদ্দেশে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করছিল। পিক আপ ভ্যানে শুইয়ে রাখা মহিলার দেহে আবার ঘৃণাভরে থুতুও ছেটাচ্ছিল তারা। সেই ভিডিওতে মেয়ের মুখাবয়ব এবং ট্যাটু দেখে তাঁকে শনাক্ত করেছিল লুক পরিবার।
তবে শুধু পরিবার নয়, শানির লুকের মৃত্যুর খবর জানিয়েছে ইজরায়েল সরকারও। তাদের তরফে X হ্যান্ডেলে জানান হয়, 'শানি, যাকে একটি মিউজিকাল ফেস্টিভাল থেকে অপহরণ করে নিয়ে গিয়ে অত্যাচার করা হয় এবং তাঁর দেহ নিয়ে প্যারেড করে হামাস জঙ্গিরা, সেই মৃতদেহটিকে আমরা উদ্ধার করে শনাক্ত করেছিল। তরুণীর অকল্পনীয় মৃত্যু হৃদয়বিদারক।'
সোশাল মিডিয়ায় এই পোস্ট হতেই খবর প্রকাশ্যে আসে। ফের নিন্দার ঝড় ওঠে। যদিও সেই পোস্টের সত্যতা যাচাই করেনি এবিপি আনন্দ।