নয়াদিল্লি: ভারত ও চিনের মধ্যে সীমান্ত সংঘাত ঘিরে উত্তেজনার মধ্যেই চিনা সেনাবাহিনী পিপলস লিবারেশন আর্মি (পিএলএ)-র জওয়ানদের প্রশিক্ষণ দিতে তিব্বতে ২০ জন মার্শাল আর্ট প্রশিক্ষককে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছে সেদেশের সংবাদ মাধ্যম। গত ১৫ জুন লাদাখের গালওয়ান উপত্যকায় সংঘাতের আগেও চিন সেনা ডিভিশনে তিব্বতের স্থানীয় ক্লাবগুলি থেকে স্থানীয় মার্শাল আর্ট প্রশিক্ষকদের নিয়োগ করেছিল।
তবে ভারতও মার্শাল আর্ট প্রশিক্ষিত চিনা সেনার মোকাবিলায় ঘাতক কমান্ডোদের মোতায়েন করেছে। সংবাদমাধ্যমের খবর, এক সেনা আধিকারিক জানিয়েছেন, একজন ঘাতক কমান্ডোকে কর্ণাটকের বেলগামে ৪৩ দিনের বিশেষ কমান্ডো ট্রেনিং কোর্স করতে হয়। এই ট্রেনিং অত্যন্ত কঠিন। এর মধ্যে রয়েছে ৩৫ কেজি ওজনের বস্তু নিয়ে একটানা ৪০ কিলোমিটার দৌড়। যা কমান্ডোদের শারীরিক দিক শক্তিশালী করে তোলে।
অস্ত্র প্রশিক্ষণ ছাড়াও হাতাহাতি লড়ার প্রশিক্ষণও দেওয়া হয় কমান্ডোদের। তাঁরা মার্শাল আর্টেও বিশেষজ্ঞ। কোনও ইউনিটে মোতায়েন থাকলেও তাঁরা সেখানেও ট্রেনিং করেন। উঁচু ও মরু এলাকার জন্য ভিন্ন ভিন্ন প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।
১৯৯৬-এ ভারত ও চিনের চুক্তি অনুযায়ী, প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখার দুই কিলোমিটার ব্যাসের মধ্যে গোলাগুলি চলবে না, কোনও ধরনের বিপজ্জনক রাসায়নিক অস্ত্র, বন্দুক বা কোনও ধরনের বিস্ফোরকের ব্যবহার না করার ব্যাপারে সহমত হয়েছিল দুটি দেশ।
সেনার এক আধিকারিক বলেছেন, ঘাতক কমান্ডো ইউনিটে একজন অফিসার, একজন জেসিও সহ থাকেন ২২ জওয়ান। তবে প্রায় সব ক্ষেত্রেই ব্যাক আপ হিসেবে থাকে পুরো একটি দল। সেই সূত্রে, একটি ইউনিটে সর্বদা ৪০-৪৫ জন কমান্ডো থাকেন।
ভারতীয় সেনার প্রত্যেক পদাতিক অফিসারকে প্রশিক্ষণের মধ্য দিয়ে যেতে হয় এবং বাছাই করা সৈনিকদেরই প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়ে থাকে। প্রত্যেক বছর প্রতিটি ইউনিটে ৩০-৪০ জন নতুন জওয়ান আসেন এবং এই নতুন জওয়ানদের কয়েকজনকে কমান্ডো টিমে রাখা হয়। এভাবে ঘাতক কমান্ডো দল ছাড়াও ইউনিটে ৫০ শতাংশ এমন সেনা থাকেন, যাঁরা এতে দক্ষ।
এরই মধ্যে খবর, এলএসি-তে উত্তেজনা প্রশমনের উপায় খুঁজে বের করতে ভারত ও চিন প্রতি সপ্তাহে একবার করে আলোচনায় বসতে রাজি হয়েছে। সরকারি সূত্র উল্লেখ করে সংবাদমাধ্যমে জানানো হয়েছে যে, পূর্ব লাদাখ সীমান্ত ইস্যু নিয়ে আলোচনার জন্য ওয়ার্কিং মেকানিজম ফর কনসাল্টেশন অ্যান্ড কোঅর্ডিনেশন (ডব্লুএমসিসি)-ক বৈঠক প্রতি সপ্তাহে একবার করার ব্যাপারে দুটি দেশ সহমত হয়েছে। এই বৈঠকের জন্য ভারতীয় দলে থাকছেন বিদেশ, প্রতিরক্ষা ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রর ও নিরাপত্তা বাহিনীর প্রতিনিধিরা।