সন্দীপ সরকার, কলকাতা : রাজ্য সরকারের বদলি নীতি নিয়ে প্রশ্ন তুলে ফেসবুক পোস্টের আধঘণ্টার মধ্যেই আত্মহত্যা! এক সরকারি চিকিৎসক অবন্তিকা ভট্টাচার্য আত্মঘাতী হওয়া ঘিরে তোলপাড় চিকিৎসক মহলে। চিকিৎসক সংগঠনগুলির অভিযোগ, স্বাস্থ্য দফতরের বদলিতে স্বজনপোষণ হয়, তার জেরেই মানসিক অবসাদ থেকে আত্মহত্যা করেছেন ওই চিকিৎসক। এদিকে IMA-র রাজ্য সম্পাদক তথা তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ শান্তনু সেন বলেছেন, ‘সরকারের বদলি নীতি স্বচ্ছ, স্বজনপোষণ হয় না। চিকিৎসকের মৃত্যু দুর্ভাগ্যজনক।এই মর্মে অভিযোগ জমা পড়লে নিরপেক্ষ তদন্ত হবে।'


১৬ অগাস্ট বিকেল সাড়ে ৩টেয় নিজের ফেসবুক পেজে একটি পোস্ট করেন চিকিৎসক অবন্তিকা ভট্টাচার্য। সেখানে তিনি লেখেন, ‘কীভাবে শান্তি পাব, চাকরি থেকে ইস্তফা দিলে? ৮ বছর প্রান্তিক এলাকায় কাজ করার পর, আবার একটা প্রান্তিক জায়গায় ঠেলে দেওয়া হল, তাও আবার একই কাজে। আর নিতে পারছি না। অভিযোগ, এই ফেসবুক পোস্টের আধঘণ্টা পর গায়ে আগুন দেন অবন্তিকা। ষাট শতাংশ পোড়ার ক্ষত নিয়ে রবিবার রাতে এসএসকেএমে তাঁর মৃত্যু হয়।


পরিবার সূত্রে খবর, দীর্ঘ ৮ বছর মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে কমিউনিটি মেডিসিন বিভাগে সহকারী চিকিৎসক হিসেবে কর্মরত ছিলেন অবন্তিকা। সেখান থেকে তাঁকে বদলি করা হয় ডায়মন্ডহারবার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। অবন্তিকার চিকিৎসক স্বামী মুর্শিদাবাদে কর্মরত। তাঁদের আট বছরের মেয়ে অটিজমে আক্রান্ত। 


অবন্তিকার পারিবারিক বন্ধু ও চিকিৎসক অভীক ঘোষ বলেছেন, 'সরকারের উচিত তদন্ত করা। আমরা বন্ধু হিসেবে ব্যাচমেট হিসেবে চাইব, কেন অবন্তিকা এমন করল তার নিরপেক্ষ তদন্ত হোক। চাইব অবন্তিকা সুবিচার পাক।' স্বাস্থ্য দফতরের বদলি নীতি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে চিকিৎসক মহলের একাংশ। অ্যাসোসিয়েশন অফ হেলথ সার্ভিস ডক্টর্স-র রাজ্য সম্পাদক মানস গুমটা বলেছেন, 'গত ১০ বছর ধরে বদলি নিয়ে স্বাস্থ্য প্রশাসনে যা চলছে তা নিয়ে নিন্দার ভাষা নেই। আগে চিকিৎসক হোমল্যান্ডে ফিরে আসতে পারতেন। এখন আর পারছেন না। এক জেলা থেকে আরেক জেলায় ঠেলা হচ্ছে। আমরা বহুবার জানিয়েছি। কেউ শোনেনি।'



সম্প্রতি বদলির প্রতিবাদে পাঁচ এসএসকে শিক্ষিকা বিকাশ ভবনের সামনে বিক্ষোভ দেখানোর সময় বিষপান করে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। এবার বদলি নীতিতে ক্ষোভ জানিয়ে আত্মঘাতী হলেন চিকিৎসক।