কলকাতা: মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ৫ পাতার চিঠির প্রাপ্তি স্বীকার করে রাজ্যপাল ধনকড় পাল্টা ট্যুইট করলেন। লিখলেন, আপনার চিঠি তথ্যগতভাবে ভুল এবং সাংবিধানিকভাবে দুর্বল। সন্ধে ৭ টা ৪৫ এ প্রাথমিক ভাবে এর উত্তর দেবেন। রাজ্যের আসল ছবিটা জানা দরকার সকলের। ট্যুইট ধনকড়ের।




করোনা-আবহে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে ধারাবাহিকভাবে আক্রমণ শাণাচ্ছিলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। বৃহস্পতিবার সংঘাতের আঁচ আরও বাড়িয়ে রাজ্যপালকে পাঁচ পাতার একটি চিঠি পাঠালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

তার প্রতিটি লাইনে মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যপালকে মনে করিয়ে দিয়েছেন তাঁর সাংবিধানিক ক্ষমতা। মনে করিয়ে দেন ১৯৪৯ সালের ৩১ মে বাবাসাহেব অম্বেডকর সংবিধান সভায় রাজ্যপালের ক্ষমতা সম্পর্কে ঠিক কী বলেছিলেন।

মুখ্যমন্ত্রী লিখেছেন, ‘আপনি আমাকে সরাসরি আক্রমণ করছেন। আমার মন্ত্রী এবং অফিসারদের আক্রমণ করেছেন। আপনার বলার ভঙ্গি, শব্দচয়ন অসাংবিধানিক।’

হালে করোনা পরিস্থিতিতে রাজ্য সরকারের ভূমিকা নিয়ে বারবার খোঁচা দেন রাজ্যপাল। কখনও তাঁর ট্যুইটে উঠে আসে করোনা-পরীক্ষার প্রসঙ্গ, কখনও রেশন বণ্টনের কথা। কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলকে সহায়তা করার আর্জি জানিয়েও ট্যুইট করেন জগদীপ ধনকড়।

রাজ্যপালের ভূমিকা নিয়ে তৃণমূলের নেতারাও পাল্টা জবাব দেন। কিন্তু এবার একেবারে সরাসরি সংবিধানে রাজ্যপালের ক্ষমতা কতটা সীমাবদ্ধতাই বা কী, তা নিয়ে লিখিত জবাব দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

তিনি লেখেন, ‘মনে হয় ভুলে গেছেন, আমি নির্বাচিত মুখ্যমন্ত্রী। মনে হয় ভুলে গেছেন আপনি মনোনীত রাজ্যপাল। আমার ও মন্ত্রিসভার পরামর্শ অগ্রাহ্য করতে পারেন। কিন্তু অম্বেডকরের কথা উপেক্ষা করা আপনার উচিত নয়। আপনার মন্তব্য আমার অফিসকে অপমান করেছে।’

রাজ্যপালকে তাঁর এক্তিয়ার স্মরণ করিয়ে দিয়ে, মুখ্যমন্ত্রী চিঠিতে লিখেছেন, ১৯৪৯ সালের ৩১ মে বাবাসাহেব অম্বেডকর সংবিধান সভায় বলেছিলেন, ‘আমরা মনে করি, রাজ্যপালের ক্ষমতা এতই সীমাবদ্ধ, এতই নগণ্য, রাজ্যপালের জায়গা এতটাই আলঙ্কারিক যে, তাঁদের মধ্যে খুব কম সংখ্যক ব্যক্তি ভোটে লড়তে এগিয়ে আসবেন।’

চিঠিতে সারকারিয়া কমিশনের সুপারিশেরও উল্লেখ করেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই সুপারিশে স্পষ্ট উল্লেখ, দেশের শাসক দলের কোনও নেতা অন্য দল শাসিত রাজ্যের রাজ্যপাল নিযুক্ত হবেন না, এটাই কাঙ্খিত।