শিলিগুড়ি : রাজ্যে ভোট পরবর্তী হিংসা নিয়ে তিনি বারবার সরব হয়েছেন। ফের সুর চড়ালেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। আজ বাগডোগরায় সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে রাজ্যপাল বলেন, এরাজ্যে ২ মে-র পর যেসব ঘটনা ঘটছে তাতে আমি চিন্তিত। নন্দীগ্রাম, অসমে গিয়ে মানুষের সঙ্গে কথা বলেছি। এরকম ঘটনা আমাদের ব্যবস্থার উপর প্রশ্ন তুলে দেয়। আমি অবাক হয়ে যাচ্ছি যে, সাত সপ্তাহ কেটে যাওয়ার পরও এরকম ভয়ানক পরিস্থিতিকে অবহেলা করা হচ্ছে। 


রাজ্যপাল বলেন, স্বাধীনতার পর এত ভয়ানক ভোট পরবর্তী হিংসা, এমন বর্বরতা, এত আতঙ্ক কখনও দেখিনি। প্রজাতন্ত্রে সব থেকে জরুরি বিষয়- উন্নতি, জনকল্যাণ, মানুষের মনে যেন আতঙ্ক না থাকে। কিন্তু, এখন এত আতঙ্ক যে, আতঙ্কে আতঙ্ক নিয়ে চর্চা শুধু করতে পারছেন না মানুষ। সরকারকে বলছি, ৭ সপ্তাহেও এনিয়ে কেন কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হল না। মুখ্যমন্ত্রী কেন চুপ রয়েছেন? কোনও ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়নি। কী করে সরকার চোখ ফিরিয়ে নিতে পারে ? কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি, খোঁজ করা হয়নি-এটা ভাল সংকেত নয়। রাজ্য সরকারের কাছে আবেদন, এনিয়ে আপনারা আত্ম-বিশ্লেষণ করুন। 


রাজভবনের বারান্দায় বিজেপি বিধায়ক-সহ বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে বৈঠক, তারপর মুখ্যমন্ত্রীকে তিন পাতার কড়া চিঠি লিখে দিল্লি সফর। দু'দফায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর সঙ্গে বৈঠকের পর আরও একবার ভোট পরবর্তী হিংসা নিয়ে রাজ্যকে আক্রমণ করলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। দিল্লি থেকে ফেরার পর আজ উত্তরবঙ্গে সফরে যান তিনি। বাগডোগরা পৌঁছে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন। ভোট পরবর্তী হিংসা নিয়ে রাজ্য সরকারকে নিশানা করেন।


এদিকে ভোট পরবর্তী সন্ত্রাসের মামলায় আজই আদালতে অস্বস্তির মুখে পড়ে রাজ্য। প্রসঙ্গত, গত ১৮ জুন কলকাতা হাইকোর্টের পাঁচ বিচারপতির বৃহত্তর বেঞ্চ নির্দেশ দিয়েছিল, ভোট পরবর্তী হিংসার ঘটনায় জাতীয় মানবাধিকার কমিশন একটি বিশেষ কমিটি গঠন করবে। তারা এরাজ্যে এসে গোটা প্রক্রিয়াটা অনুসন্ধান করে দেখে কলকাতা হাইকোর্টের কাছে একটি রিপোর্ট পেশ করবে। সেই নির্দেশের পুনর্বিবেচনার আর্জি জানিয়ে রাজ্যের তরফে কলকাতা হাইকোর্টে এই পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চের কাছে আবেদন করা হয়েছিল। সেই আবেদন আজ খারিজ হয়ে যায় হাইকোর্টে।