আহমেদাবাদ : ধর্ষণ, ধর্ষণই। তা যদি একজন পুরুষ তার স্ত্রীকেও করে, তাহলেও তা ধর্ষণই। জানিয়ে দিল আদালত ( Gujarat High Court ) । বিচারকের পর্যবেক্ষণ, মহিলাদের উপর যৌন নির্যাতন নিয়ে এখনও যে লুকোছাপা, রাখঢাক-গুড়গুড়, তা ভেঙে ফেলার সময় এসেছে। 


গুজরাত হাইকোর্টের বিচারপতি দিব্যেশ যোশীর পর্যবেক্ষণ ( Justice Divyesh Joshi ), সারা দেশে নারী নির্যাতনের যত অভিযোগ নথিভুক্ত হয়, তার থেকে আসল সংখ্যাটা অনেক বেশি। মহিলাদের হিংসা সয়ে যেতে হয়, এমনকী অত্যাচারের পরিবেশে থেকেও যেতে হয়। 

হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণে বলা হয়েছে, মহিলাদের  প্রতি কুদৃষ্টি দেওয়া, নানারকম মৌখিক ও শারীরিক হেনস্থাকে ছোটখাটো অপরাধ হিসেবে দেখে সমাজ। এমনকী সিনেমার মতো জনপ্রিয় গণমাধ্যমে এই বিষয়গুলিকে তুচ্ছ করে বা স্বাভাবিক হিসেবেই দেখানো হয়ে থাকে, সেগুলিকে রোম্যান্টিক বিষয় হিসেবেও দেখানো হয় । এটা সত্যিই অনুশোচনা করার মতো বিষয়।  


"boys will be boys" - এই মনোভাব থেকে অনেকে এই অপরাধগুলিকে দেখে ও ক্ষমা করে দেয়, তার ফলে নির্যাতিতাদের উপর একটি  দীর্ঘস্থায়ী এবং ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে। 


যে মামলার পরিপ্রেক্ষিতে এই পর্যবেক্ষণ তা হল,  পূত্রবধূকে ক্রমাগত নির্যাতন করা ও ভয় দেখানোর অভিযোগে এক মহিলাকে গ্রেফতার করা হয়। অভিযোগ, তার ছেলে ও স্বামী মিলে পুত্রবধূকে ধর্ষণ করত ও সেই ভিডিও তুলে পর্ণোগ্রাফির সাইটে পোস্ট করে টাকাও রোজগার করত তারা। আর পুরো ঘটনায় সামিল ছিল ওই মহিলাও। নির্যাতিতাকে ভয় দেখানো, অত্যাচার করা, কিছুই করতে বাদ রাখেনি সে। এই মামলায় জামিনের আবেদন করে অভিযুক্ত শাশুড়ি। তার জামিনের আর্জি নাকচ করে দেয় আদালত ও এই পর্যবেক্ষণ সামনে রাখেন বিচারপতি। 


তিনি আরও বলেন, "অধিকাংশ ক্ষেত্রে দেখা যায় (একজন মহিলার উপর অত্যাচার বা ধর্ষণের ক্ষেত্রে) অত্যাচারী পুরুষটি যদি নির্যাতিতার স্বামী হয় এবং অন্য পুরুষের মতো একই কাজ করলেও, শুধুমাত্র স্বামী হওয়ার জন্যই সে ছাড়া পেয়ে যায়। আমার বিবেচনায়, একজন পুরুষ একজন পুরুষ। একটি কাজ একটি কাজ। যে কোনও ধর্ষণ,ধর্ষণই।  সেটা যে করেছে সে তার স্বামী হলেও।' 


 অর্থনৈতিক নির্ভরতা এবং সামাজ থেকে একঘরে হয়ে যাওয়ার ভয়ে অনেক মহিলারা অভিযোগ করেন না বলে মনে করে আদালত। তাই  ভারতে মহিলাদের উপর হিংসার প্রকৃত ঘটনার সংখ্যা সম্ভবত নথিভুক্ত তথ্যের চেয়ে অনেক বেশি। পর্যবেক্ষণ আদালতের।