ইসলামাবাদ: সন্ত্রাসে অর্থসাহায্যের অভিযোগে দুটি মামলায় বুধবার হাফিজ সঈদকে দোষী ঘোষণা করে ৫ ও ৬ বছর করে মোট ১১ বছরের কারাদণ্ড দিল পাকিস্তানের সন্ত্রাসবাদ দমন আদালত। এই প্রথম কোনও সন্ত্রাস মামলায় দোষী ঘোষিত হলেন সঈদ।
গত ডিসেম্বর ২০০৮ এর মুম্বই সন্ত্রাসবাদী হানার মাস্টারমাইন্ড সঈদ ও তার সঙ্গীদের ৬টি সন্ত্রাসবাদে অর্থ ঢালার মামলায় অভিযুক্ত করে আদালত। হাফিজ নিজের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসে আর্থিক মদতের ৬টি মামলার সবকটিই একসঙ্গে জুড়ে দেওয়ার আবেদন করেছিলেন মঙ্গলবার। তা মেনে নেয় আদালত। পাক মিডিয়া জানায়, লাহোরের সন্ত্রাস দমন আদালত যাতে বাকি চারটি মামলার বিচার চলা পর্যন্ত বিচার শেষ হওয়া দুটি মামলায় রায় ঘোষণা না করে, সেই আর্জি জানিয়েছিলেন সঈদ ও তাঁর ঘনিষ্ঠ সঙ্গীরা। তাতে সম্মত হয় আদালত।
সঈদ, তাঁর সহযোগীদের বিরুদ্ধে পঞ্জাব প্রদেশের বিভিন্ন শহরে সন্ত্রাসে আর্থিক মদতের অভিযোগে গত বছর ১৭ জুলাই ২৩টি এফআইআর দায়ের করেছিল সন্ত্রাসদমন শাখা। তাঁকে লাহোরের কোট লাখপত জেলে রাখা হয়েছে।
সঈদ, বাকিদের বিরুদ্ধে লাহোর, গুজরানওয়ালা ও মুলতানে মামলাগুলি দায়ের করা হয় আল আনফাল ট্রাস্ট, দাওয়াতুল ইরশাদ ট্রাস্ট ও মুয়াজ বিন জাবাল ট্রাস্ট সহ একাধিক ট্রাস্ট ও অ-লাভজনক সংগঠনের নামে থাকা সম্পত্তি মারফত সন্ত্রাসবাদে ঢালার জন্য় তহবিল, অর্থ সংগ্রহের অভিযোগে।
প্রায় ১২ বছর আগে মুম্বইয়ের বুকে নজিরবিহীন সন্ত্রাসের বলি হয়েছিলেন ১৬৬জন। যে লস্কর-ই-তৈবা আর্থিক মহানগরীর বুকে হত্যালীলা চালিয়েছিল, সঈদের জামাত-উদ-দাওয়া তারই সামনের সারির শাখা বলে মনে করা হয়।
সন্ত্রাস দমনে আর্থিক মদত বন্ধ করায় তাদের ভূমিকা খতিয়ে দেখে ফিনান্সিয়াল অ্যাকশন টাস্ক ফোর্স (এফএটিএফ) পাকিস্তান সম্পর্কে সিদ্ধান্ত ঘোষণার দিনকয়েক আগে সাজা ঘোষণা হল সঈদের। তাঁর আইনজীবীরা সাংবাদিকদের কাছে দাবি করেন, এফএটিএফের চাপেই শাস্তি দেওয়া হল তাঁকে। পাকিস্তানকে কোন তালিকায় ফেলা হবে, সিদ্ধান্ত নেবে এফএটিএফ। পাকিস্তান ধূসর তালিকা থেকে নাম কাটানোর চেষ্টা করছে। পাকিস্তান আন্তর্জাতিক মহলকে বোঝাতে মরিয়া, সন্ত্রাসে আর্থিক মদত দমনে তারা তত্পর।