নয়াদিল্লি: দিল্লির ভোটে বিপর্যয় সত্ত্বেও অরবিন্দ কেজরিবালকে টার্গেট করা অব্যাহত বিজেপির। ভোটের আগে তাঁকে ‘সন্ত্রাসবাদী’ বলতে দ্বিধা করেননি এক বিজেপি নেতা। এবার তাঁর ভোটের প্রচারের সময় একটি চ্যানেলের অনুষ্ঠানে হনুমান চালিশা পাঠ, হনুমান মন্দিরে পুজো দেওয়ার প্রসঙ্গ টেনে বিজেপির অন্যতম শীর্ষনেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয় ট্যুইটে দিল্লির সব স্কুল, মাদ্রাসা ও অন্য যাবতীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে হনুমান চালিশা পড়া চালু করার দাবি করলেন। কেজরিবালকে নির্বাচন জয়ের অভিনন্দন জানিয়ে কৈলাস লিখেছেন, কোনও সন্দেহ নেই, হনুমানজি তাঁর কাছে যে-ই যায়, তাকেই আশীর্বাদ করেন। এবার সময় হয়েছে, সব স্কুল, মাদ্রাসা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যাতে হনুমান চালিশা আবৃত্তি করা হয়। দিল্লির পড়ুয়ারা কেন তাঁর আশীর্বাদ লাভে বঞ্চিত হবে?


গতকাল আপের চোখধাঁধানো নির্বাচনী সাফল্যের পর কেজরিবাল তাঁর ওপর ভগবান হনুমানের আশীর্বাদ বর্ষণ হয়েছে বলে মন্তব্য করেন। এরপরই বিজয়বর্গীয়র এই ট্যুইট, যাতে ধর্মীয় রং দেওয়া হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
কেজরিবালের ভোটের আগে চ্যানেলে বসে হনুমান চালিশা পাঠ, কনট প্লেসের হনুমান মন্দির দর্শন ঘিরে বিরাট হইচই হয়েছিল।
সদ্য ফল বেরনো দিল্লি বিধানসভা ভোটের প্রচারে বিজেপির প্রচারে নেতৃত্ব দেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। কেন্দ্রের শাসক দলের বিরুদ্ধে প্রচারে সাম্প্রদায়িক রং চড়ানো, হিন্দুত্বের জিগির,পাকিস্তান-বিরোধিতার সঙ্গে ধর্মকে মেশানোর অভিযোগ ওঠে। শেষ পর্যন্ত গতবারের চেয়ে মাত্র ৫টি বেশি আসন পেয়েছে তারা। ৭০-এর মধ্যে ৬২টি আসনে জিতে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অটুট রয়েছে তাদের।
বিজয়বর্গীয়র ট্যুইটের প্রতিক্রিয়ায় মধ্যপ্রদেশ কংগ্রেসের মুখপাত্র নরেন্দ্র সালুজা হনুমান তাঁর কাছে গেলে সবাইকে আশীর্বাদ করেন, এটা সত্যি বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেছেন, ভোটপ্রচারে কৈলাস বিজয়বর্গীয়ও ভগবান হনুমানের কাছে গিয়েছিলেন, কিন্তু মনে হয়, উনি জুতো খুলতে ভুলে গিয়েছিলেন, তাই ওনার দল ভোটে দেবতার আশীর্বাদ পায়নি। বিজেপির এই বিরাট হার থেকে শিক্ষা নিয়ে বিভেদমূলক অ্যাজেন্ডা থেকে দূরে থাকা উচিত। ওরা এখনও স্কুল, মাদ্রাসায় পড়ে আছে। প্রচারে ওরা ভারত-পাকিস্তান নিয়ে মাতামাতি করল, কিন্তু ফল কী হয়েছে, সেটা তো সবাই দেখতে পাচ্ছেন।