চণ্ডীগড়: দিল্লির রাস্তায় তাঁকে নিয়ে টানা-হ্যাঁচড়ার দৃশ্য এখনও তরতাজা। প্যারিস অলিম্পিক্সে ওজন নিয়ে বিতর্ক যখন তুঙ্গে, তাঁর বিধ্বস্ত চেহারা দেখে চোখের জল ফেলেছিলেন অনেকেই।  প্রাক্তন কুস্তিগীর বিনেশ ফোগাতের রাজনীতিতে পদার্পণের সিদ্ধান্ত সকলের মনঃপুত হয়নি যদিও। কিন্তু প্রথম বার নির্বাচনে নাম লিখিয়ে বাজিমাত করলেন ৩০ বছরের তিনি। কংগ্রেস প্রার্থী হিসেবে হরিয়ানা বিধানসভা নির্বাচনে জয়ী হলেন তিনি। (Vinesh Phogat)


হরিয়ানার জুলানা আসনে বিনেশকে প্রার্থী করেছিল কংগ্রেস। বিজেপি প্রার্থী করে ভারতীয় সেনার ক্যাপ্টেন যোগেশ বৈরাগীকে। আম আদমি প্রার্থীর তরফে প্রার্থী হন প্রাক্তন কুস্তিগীর কবিতা দালাল। তাঁদের পরাজিত করে জয়ী হয়েছেন বিনেশ। এবার বিধায়ক হিসেবে হরিয়ানা বিধানসভায় প্রবেশ করতে চলেছেন তিনি। এদিন জয় নিশ্চিত হওয়ার পর বিনেশ বলেন, "এটা প্রচ্যেক মেয়ের লড়াই, প্রত্যেক মহিলা, যাঁরা লড়াইয়ের রাস্তা বেছে নেন, তাঁদের জয়। সংগ্রাম, সত্যের জয় হয়েছে। দেশের মানুষ যে ভালবাসা দিয়েছেন আমাকে, যেভাবে বিশ্বাস করেছেন, আমি তার মর্যাদা রাখব।" (Vinesh Phogat Election Victory)


গত এক বছরেরও বেশি সময়ে বিভিন্ন কারণে বার বার খবরের শিরোনামে উঠে এসেছেন বিনেশ। ভারতীয় কুস্তি ফেডারেশনের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট তথা বিজেপি-র তদানীন্তন সাংসদ ব্রিজভূষণ শরণ সিংহের বিরুদ্ধে যৌন নিগ্রহের অভিযোগ নিয়ে সরব হন তিনি। অন্য কুস্তিগীরদের সঙ্গে দিল্লিতে ধর্নায় বসেন। ধর্নাস্থল থেকে বিনেশ এবং বাকিদের যেভাবে টেনে-হিঁচড়ে নিয়ে যায় পুলিশ, তা দেখেছিল গোটা দেশ। (Haryana Assembly Elections 2024)



এর পর, প্যারিস অলিম্পিক্সে বিনেশের ওজন নিয়ে বিতর্ক বাধে। অলিম্পিক্স থেকে ছিটকেও যান তিনি। সেই সময়ও ষড়যন্ত্রের তত্ত্ব সামনে আসে। এর পরই একেবারে শেষ মুহূর্তে, গত ৬ সেপ্টেম্বর কংগ্রেসে যোগ দেন বিনেশ। কয়েক ঘণ্টার মধ্যে দলের প্রার্থিতালিকায় জায়গা করে নেন। রাজনীতিতে আসার সিদ্ধান্ত নিয়ে বিনেশ বলেন, "নতুন ইনিস শুরু করছি। আমি চাই, খেলোয়াড়দের যেন আমার মতো পরিস্থিতির মধ্যে পড়তে না হয়।" বিজেপি ছাড়া দুঃসময়ে বাকি সকলকেই পাশে পেয়েছিলেন বলে জানান বিনেশ। এর পর প্রচারে ঝাঁপিয়ে পড়েন তিনি। এবার হাতেনাতে পরিশ্রমের ফল পেলেন।


বুথফেরত সমীক্ষায় হরিয়ানায় কংগ্রেসের জয়ের ইঙ্গিত মিলেছিল যদিও। এদিন সকালে গণনা শুরু হওয়ার পরও এগিয়েছিল কংগ্রেস। কিন্তু বেলা বাড়তে এগিয়ে যায় বিজেপি। সেই নিয়ে যদিও নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ জানিয়েছে কংগ্রেস। গণনার গতি হঠাৎ শ্লথ হয়ে যাওয়ার পই বিজেপি কী করে এগিয়ে গেল, প্রশ্ন তুলেছে তারা। দুপুর ২.৩০টে পর্যন্ত প্রাপ্ত হিসেব অনুযায়ী, হরিয়ানায় বিজেপি এগিয়ে রয়েছে ৫০টি আসনে, কংগ্রেস ৩৪ আসনে। গণনা শেষ হওয়া পর্যন্ত এই ধারা বজায় থাকলে, বিজেপি তৃতীয় বারের জন্য রাজ্যে ক্ষমতা দখল করতে চলেছে।