হুগলি : কখনও দলীয় নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করছেন। কখনও চেনা ভঙ্গিতে তৃণমূলকে আক্রমণ করছেন। আবার মধ্যাহ্নভোজ সারছেন দলের কর্মীর বাড়িতেই। পাশাপাশি জন সংযোগ করতে আদিবাসীদের সঙ্গে নাচ করছেন। সোমবার এমনই একাধিক ভূমিকায় দেখা গেল হুগলির বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়কে।
এদিন প্রথমে মগরায় স্থানীয় নেতাদের নিয়ে বৈঠক করেন লকেট। পরে আকনায় দলীয় কর্মীর বাড়িতে মধ্যাহ্নভোজ সারেন। খাওয়া দাওয়ার পর আদিবাসীদের সঙ্গে নাচের তালে পা মেলান তিনি। চেনা ভঙ্গিতে এদিন ফে়র তৃণমূলকে এক হাত নেন বিজেপি সাংসদ। চুঁচুড়ায় বিজেপি জেলা অফিস থেকে শাসক দলকে আক্রমণ করেন তিনি।
বাংলায় নারী নির্যাতন বৃদ্ধির অভিযোগ সহ একাধিক ইস্যুকে হাতিয়ার করে তৃণমূল সরকারকেও বেঁধেন লকেট। তাঁর বক্তব্য, নারী নির্যাতনে পশ্চিমবঙ্গ প্রথম। মহিলা মুখ্যমন্ত্রীর আমলে মহিলারাই সুরক্ষিত নন। আওয়াজ উঠেছে, ‘বঙ্গে চোর ডাকাতরা দিদির সঙ্গে’, আওয়াজ উঠেছে ‘বঙ্গে চাল চোর তৃণমূল দিদি’র সঙ্গে। বাংলার মহিলারাই মহিলা মুখ্যমন্ত্রীকে তাড়াতে এবার বুথ আগলাবেন। ঘটনাচক্রে আজই ‘উঠেছে আওয়াজ বঙ্গে, মহিলারা দিদির সঙ্গে’ শিরোনামে কর্মসূচি নিয়েছে তৃণমূল। ১২ তারিখ হাওড়ার প্রচারও শুরু করবে বঙ্গজননী বাহিনী। লকেট এভাবেই পাল্টা কটাক্ষ ছুঁড়ে দিলেন।
তবে শ্রীরামপুরের তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় লকেটকে নিশানা করে বলেন, উনি নিজের দোষগুলো অন্যের ঘাড়ে দিতে চাইছেন। আমি তো শুনেছি, উনি নাকি বলেছেন ২০২১ মমতা বন্দোপাধ্যায় আবার মুখ্যমন্ত্রী হবেন। তাই ২০২৪ এ তাঁকে জিততে হলে আবার তৃণমূলে ফিরতে হবে। শুধু তা-ই নয়, বিজেপি সাংসদের জনসংযোগকে কটাক্ষ করেছেন তিনি। কল্যাণ বলেন, উনি ভালো অভিনয় করতেন। অভিনেত্রী হিসাবে খুব ভালো। এখন আদিবাসীদের বাড়ি গিয়ে খাবার খাবেন ফটোশ্যুট করবেন। করোনার সময় কোথাও আদিবাসীদের পাশে দেখতে পাওয়া যায়নি।
উল্লেখ্য, ২০১৯-এর লোকসভা ভোটে হুগলি কেন্দ্রটি তৃণমূলের থেকে ছিনিয়ে নেয় বিজেপি। লোকসভা ভোটের বিধানসভাওয়াড়ি ফল অনুযায়ী, হুগলি লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত ৭টি বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে বিজেপি এগিয়ে ছিল ৫টি আসনে। তৃণমূল এগিয়ে ছিল ২টি আসনে। এবার পাখির চোখ বিধানসভা ভোটের দিকে। তাই ভোটকে সামনে রেখে হুগলির মানুষের মন জয় করতে মরিয়া তৃণমূল-বিজেপি দু’পক্ষই। কে জিতবে মানুষের মন? জবাব দেবে ব্যালট বাক্স।