ম্যানিলা: কোভিডের প্রকোপে নতুন করে অতিমারির আশঙ্কা মাথাচাড়া দিচ্ছে। সেই নিয়ে শোরগোলের মধ্যেই, ফিলিপিন্সে নীরবে থাবা বসিয়ে চলেছে এইচআইভি (HIV). সেখানে কম বয়সিদের মধ্যে HIV সংক্রমণে ৫০০ শতাংশ বৃদ্ধি চোখে পড়ছে এই মুহূর্তে। জানা যাচ্ছে, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে মার্চ মাসের মধ্যে রোজ অন্তত পক্ষে ৫৭ জনের শরীরে HIV সংক্রমণ ধরা পড়েছে ফিলিপিন্সে। (HIV Surge in Philippines)

পরিস্থিতি এমন জায়গায় পৌঁছেছে যে দেশের স্বাস্থ্য়মন্ত্রক সরকারের কাছে ‘স্বাস্থ্যজনিত জরুরি অবস্থা’ ঘোষণার সুপারিশ করেছে। মঙ্গলবার দেশের স্বাস্থ্যমন্ত্রক বিবৃতি দিয়ে জানায়, নিশ্চিত ভারে রোগ নির্ধারণ করা গিয়েছে এমন রোগীর সংখ্যা উদ্বেগজনক জায়গা পৌঁছেছে। জানুয়ারি থেকে মার্চের মধ্যে রোজ ৫৭ জনের শরীরে মিলেছে HIV সংক্রমণ। সবমিলিয়ে ৫০০ শতাংশ বৃদ্ধি চোখে পড়ছে HIV সংক্রমণে, যা পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের মধ্যে সর্বাধিক। (HIV Cases on the Rise

উদ্বেগ বাড়ার আরও একটি কারণ রয়েছে। HIV-র বিরুদ্ধে বরাবরই লড়াই করে আসছে ফিলিপিন্স। কিন্তু ২০১৪ সালে সেখানে দিনে ২১ জন HIV সংক্রমিত রোগীর সন্ধান পাওয়া গেলেও, বর্তমানে সেই সংখ্যা দ্বিগুণ হওয়ার পথে। ফিলিপিন্স স্বাস্থ্য়মন্ত্রক জানিয়েছে, ২০০২ থেকে ২০০৫ সালের মধ্যে মূলত ৩৫ থেকে ৪৯ বছর বয়সিদের মধ্যে সংক্রমণ বেশি দেখা গেলেও, ২০০৬ সাল থেকে পরিস্থিতি বদলাতে শুরু করে। ২৫ থেকে ৩৪ বছর বয়সিদের মধ্য়েই HIV সংক্রমণ বেশি দেখা যায়। বর্তমানে ১৫ থেকে ২৫ বয়সিদের মধ্যে সংক্রমণে ৫০০ শতাংশ বৃদ্ধি চোখে পড়ছে।

ফিলিপিন্সের স্বাস্থ্যমন্ত্রকের তরফে সাধারণ মানুষকে HIV পরীক্ষা করাতে আর্জি জানানো হয়েছে। বিনামূল্যেই HIV পরীক্ষা করানো যাবে, সবকিছু গোপন রাখার আশ্বাসও দেওয়া হয়েছে। HIV সংক্রমণ এড়াতে বেশ কিছু বিধিনিষেধও জারি করা হয়েছে, যার মধ্যে সঙ্গমের সময় সাবধানতা অবলম্বনের পাশাপাশি, HIV প্রতিরোধের ওষুধও নিতে বলা হয়েছে।

HIV-র বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ফিলিপিন্সে কাজ করছে একাধিক বেসরকারি সংস্থাও। কিন্তু আমেরিকার ভূমিকা সেখানে মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। HIV মোকাবিলায় এতদিন ফিলিপিন্সকে আর্থিক সাহায্য় জোগাত আমেরিকা সরকার। কিন্তু দ্বিতীয় বার ক্ষমতায় এসে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ট ট্রাম্প সেই অনুদানে কাটছাঁট করেছেন। ফেব্রুয়ারি মাস থেকেই কাটছাঁট হয়েছে অনুদানে। ফলে HIV, ম্যালেরিয়া, যক্ষ্মার বিরুদ্ধে লড়াই কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে HIV ও AIDS-এর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে জয়ী হওয়া নিয়ে আত্মবিশ্বাসী ফিলিপিন্স সরকার।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) জানিয়েছে, HIV ভাইরাস সরাসরি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার উপর আঘাত হানে। রক্তের শ্বেতকণিকাগুলিকে নিশানা করে শরীরকে দুর্বল করে দেয়। ফলে শরীর একেবারে ভেঙে পড়ে, যক্ষ্মা, ক্যান্সার, অন্য সংক্রমণও থাবা বসায় শরীরে। সাধারণ আলিঙ্গন, চুম্বন, করমর্দন বা খাবার ভাগাভাগি করে খেলে সংক্রমণ ছড়ায় না। বরং রোগীর শরীরের তরল অন্যের শরীরে গেলে, আক্রান্ত রোগী স্তন্যপান করালে, তা থেকেও সংক্রমণ ছড়াতে পারে। অ্যান্টিরেট্রোভাইরাল