আমদাবাদ: চিকিৎসা গাফিলতির চূড়ান্ত নিদর্শন। কোভিড-১৯ অতিমারী এই আবহে আমদাবাদ সিভিল হাসপাতালের তরফে রোগীর পরিবারকে বলা হল, তিনি দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠছেন। অথচ, সেই রোগীর মৃত্যু হয়েছে শুধু তাই নয়। ফোন আসার কয়েক ঘণ্টা আগে ওই ব্যক্তিকে দাহ পর্যন্ত করে এসেছেন তাঁর পরিবার-পরিজনরা।


খবর, করোনা উপসর্গ দেখা দেওয়ায় দেবরামভাই ভিশিকরকে গত ২৮ তারিখ আমদাবাদের সিভিল হাসপাতালের কোভিড-১৯ বিভাগে ভর্তি করা হয়। পরের দিন দুপুরে রোগীর বাড়িতে ফোন যায় হাসপাতালের তরফে। সেখানে বলা হয়, দেবরামভাই  মারা গিয়েছেন। সঙ্গে সঙ্গেই হাসপাতালে পৌঁছে যায় পরিবারের সদস্যরা।


দেবরামভাইয়ের ছেলে নীলেশ বাবার দেহ নিয়ে যাবতীয় নিয়ম মেনে কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই সৎকার সেরে ফেলে। কিন্তু, এরপর যা ঘটে, তা মহা-বিষ্ময়ের। রাত একটা নাগাদ নীলেশের স্ত্রীর মোবাইলে একটি ফোন আসে। এত রাতে অপরিচিত নম্বর থেকে ফোন আসায় তিনি তা গ্রহণ করেননি।


পরের দিন সকালে, হাসপাতাল থেকে আরেকটি ফোন আসে। সেখানে বলা হয়, দেবরামভাইয়ের অবস্থার উন্নতি হয়েছে। তাঁর কোভিড পরীক্ষা নেগেটিভ এসেছে এবং তাঁকে শীঘ্রই ছেড়ে দেওয়া হবে।


এই খবর শুনে মৃতের পরিবার স্তম্ভিত হয়ে যায়। একইসঙ্গে বিভ্রান্তও। ঠিক কী ঘটেছে, তা জানতে তাঁরা ফের হাসপাতালে পৌঁছে যান। সেখানে তাঁদের বলা হয়, হাসপাতালের কন্ট্রোল রুমের দায়িত্বে থাকা কর্মী ভুল করেছেন। ৭১ বছরের দেবরামভাই মারাই গিয়েছেন।


এখানেই শেষ নয়। ওই পর্ব কাটিয়ে দুপুরে বাড়ি ফিরলে ফের হাসপাতাল থেকে আবার একটি ফোন আসে দেবরামভাই-য়ের পরিবারের কাছে। আবারও বলা হয়, দেবরামভাই ভাল আছেন।


এই প্রেক্ষিতে হাসাপাতালের অধিকর্তা জানান, জ্বর সর্দি  ও গলা সংক্রমণ নিয়ে হাসপাতালের ট্রমা সেন্টারে ভর্তি হন দেবরামভাই। রোগীর মধ্যে কোভিড-১৯ সংক্রমণের যাবতীয় উপসর্গ থাকায় তাঁকে ১২০০ শয্যার কোভিড কেয়ার ফেসিলিটিতে রাখা হয়। নমুনাও সংগ্রহ করা হয়। কিন্তু, সেই রিপোর্ট আসার আগেই, তাঁর মৃত্যু হয়। যেহেতু, রিপোর্ট আসেনি, তাই পরিবারের হাতে দেহ তুলে দেওয়া হয়।


পরের দিন রিপোর্ট আসে। ততক্ষণে রোগী মারা গিয়েছেন। কিন্তু, কন্ট্রোল রুমের কাছে সম্ভবত সেই তথ্য ছিল না। যে কারণে, ওই ধন্দের সৃষ্টি হয়। এর আগেও, বিতর্কের সম্মুখীন হয়েছে আমদাবাদ সিভিল হাসপাতাল। ৪০০ কোভিড-১৯ রোগী মারা যাওয়ায় গত সপ্তাহে হাসপাতালের তীব্র সমালোচনা করে গুজরাত হাইকোর্ট।