ইম্ফল: জ্বলছে মণিপুর(Manipur Violence) , এই মুহূর্তে ন্যায়বিচারের দাবিতে!
জনরোষ এতটাই যে নারী-নিগ্রহের (Manipur Viral Video) ঘটনায় ধৃত মূল অভিযুক্ত (Main Accused In Naked Women Parade Case), হুইরেম হেরোদাস মেইতেইয়ের বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। সেই বাড়ি এখন জ্বলেপুড়ে ছাই। আগুন লাগানোর একটি ভিডিও সোশ্য়াল মিডিয়ায় ভাইরালও হয়েছে। তাতে দেখা যাচ্ছে, ক্ষুব্ধ প্রতিবাদীদের একাংশ হুইরেমের বাড়ি জ্বালিয়ে দিতে উদ্য়ত। বিক্ষোভকারীদের বেশিরভাগই মহিলা। 


আর যা...
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মূল অভিযুক্ত ছাড়া আরও তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সব মিলিয়ে এখন ধৃতের সংখ্যা ৪। বৃহস্পতিবারই মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংহ, আশ্বাস দিয়েছিলেন যে ওই ঘটনার বিশদ তদন্ত করা হচ্ছে। সঙ্গে এও জানান, যে রাজ্যের তরফে অভিযুক্তদের জন্য ফাঁসির সাজার আর্জি জানানো হবে। শুধু তিনি নন। স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, সংসদের বাদল অধিবেশন শুরুর আগে বিষয়টি নিয়ে কড়া বার্তা দেন। দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিতে মণিপুরের মুখ্য়মন্ত্রীকে ফোন করেন কেন্দ্রীয় নারী ও শিশুকল্যাণমন্ত্রী স্মৃতি ইরানি। কিন্তু জনরোষ যে এত সহজে শান্ত হওয়ার নয়, তা বোধহয় টের পায়নি মণিপুর প্রশাসন। প্রথমে ওই নারকীয় ঘটনার প্রতিবাদ, তার পর মূল অভিযুক্তের বাড়ি পুড়িয়ে দেওয়ার মতো ঘটনা ঘটেছে বৃহস্পতিবার। সব মিলিয়ে শুক্রবারও পরিস্থিতি স্বাভাবিক নয় উত্তর-পূর্বের এই রাজ্যে। 


কী ঘটেছিল?
গত ৩ মে থেকে জনজাতি সংঘর্ষে রণক্ষেত্র হয়ে রয়েছে মণিপুর। মেইতেই জনজাতির তফশিলি উপজাতিভুক্ত হওয়ার দাবির বিরোধিতায় মণিপুরের পার্বত্য এলাকায় যে 'ট্রাইবাল সলিডারিটি মার্চ' হয়েছিল, সেখান থেকেই সংঘর্ষের শুরু। তার পর থেকে দফায় দফায় জ্বলছে ওই রাজ্য। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কখনও কার্ফু জারি করতে হয়েছে, কখনও ইন্টারনেট বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন। কিন্তু এত দিন পেরিয়েও সেখানে শান্তি ফেরেনি। ১৫০ মানুষের মৃত্যুর খবর শোনা গিয়েছে, বহু বাসিন্দা আশ্রয়হীন। এমন পরিস্থিতিতে গত বুধবার একটি ভিডিও ভাইরাল হয়। তাতে দেখা যায়, দুই মহিলাকে সম্পূর্ণ বিবস্ত্র করে রাস্তায় হাঁটানো হচ্ছে। এতেই শেষ নয়। নির্যাতিতারা যখন রেহাইয়ের আর্জি জানিয়ে কাঁদতে কাঁদতে হাঁটছেন, তখনও তাঁদের দেদার 'শ্লীলতাহানি' চলেছে। হিংসা-জর্জরিত মণিপুরে নারী-নিগ্রহের এমন ভিডিও ভাইরাল হতেই শিউরে ওঠে গোটা দেশ। পরে জানা যায়, তাঁদের গণধর্ষণও করা হয়েছিল। ভিডিও ভাইরাল হতে তুমুল আলোড়ন শুরু হয় দিকে দিকে। কেন্দ্রের ফোনে টনক নড়ে মণিপুর প্রশাসনের। তদন্তে জানা যায়, ঘটনাটি আড়াই মাস পুরনো।পুলিশের তরফে প্রেস নোট জারি করে জানানো হয়, '২০২৩-র ৪ মে, ২ মহিলাকে অজ্ঞাতপরিচয় সশস্ত্র দুষ্কৃতীদের সম্পূর্ণ নগ্ন করে ঘোরানোর ঘটনায় অপহরণ, গণধর্ষণ এবং খুনের মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলাটি অজ্ঞাতপরিচয় দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে থৌবাল জেলার নোঙ্গপোক সেঙ্গমাই পুলিশ স্টেশনে রুজু করা হয়েছে। এর মধ্য়ে তদন্তও শুরু করেছে রাজ্য পুলিশ।' যদিও ঠিক কোথায় ঘটনাটি ঘটেছিল, তা নিয়ে ধোঁয়াশা ছিল গত কালও। তবে তুমুল চাপের মুখে ভিডিও ভাইরাল হওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ধরা পড়ে মূল অভিযুক্ত। দিনদুয়েকের মধ্যে গ্রেফতার আরও তিন জন। 


আরও পড়ুন:গতবছর বৃষ্টিতে ভিজে বক্তৃতা করেছিলেন অভিষেক, এবারও কি ভিজবে সমাবেশ-মঞ্চ? কী বলছে আবহাওয়া দফতর?   


 


 


এবিপি আনন্দ এখন টেলিগ্রামেও
https://t.me/abpanandaofficia