নয়াদিল্লি: করোনা পাড়ার কাছাকাছি এসে পৌঁছেছে খবর এলেই কাঁপুনি ধরে যাচ্ছে সকলের মধ্যে। অথচ দিল্লির মুকুল গর্গের পরিবারের ১৭ জন এই রোগে আক্রান্ত হন। চূড়ান্ত সতর্ক জীবনযাপন করে করোনাকে হার মানিয়েছেন তাঁরা।


৩৩ বছরের মুকুল বলেছেন, একবার একজনের সংক্রমণ দেখা দেওয়ার পর তাঁরা বুঝতে পেরেছিলেন, সকলেই করোনা পজিটিভ হবেন। ঠিক তাই-ই ঘটে। ৩ মাসের সর্বকনিষ্ঠ সদস্য থেকে মুকুলের ৯০ বছরের শয্যাশায়ী ঠাকুর্দা- অল্প কদিনের মধ্যে গর্গ পরিবারের ১৭ জন করোনা আক্রান্ত হন। বাদ যাননি তাঁর ৬২ বছর বয়স্ক ডায়াবিটিস রোগী বাবা এবং উচ্চ রক্তচাপে ভোগা ৮৭ বছরের ঠাকুমাও। বাড়ির বাইরে সেঁটে দেওয়া হয় কোয়ারান্টাইন নোট, অবশিষ্ট বিশ্বের সঙ্গে তাঁদের সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।

গর্গরা প্রত্যেক ভাই বাড়ির আলাদা আলাদা তলায় থাকতেন। ফলে দূরত্ব রাখা তাঁদের পক্ষে সহজ ছিল। সংক্রমণ রুখতে চূড়ান্ত সতর্ক ছিলেন তাঁরা, একবার একজনই বাড়ি থেকে বেরিয়ে জিনিসপত্র কিনে আনতেন। মুকুলের মা মীনা দেবী বলেছেন, এত সাবধানতা অবলম্বন করেছিলেন বলেই তাঁদের আশা ছিল, তাঁদের কারও করোনা হবে না। কিন্তু তারপর একজন একজন করে প্রত্যেকের জ্বর আসতে শুরু করে। স্বাস্থ্যের অবনতি হওয়ায় মুকুলের পিসি অনিতাকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়। তখন তাঁরা সকলে খুব ভয় পেয়ে গিয়েছিলেন। মুকুল নিজে চিকিৎসক, ছোট ভাইকে সঙ্গে নিয়ে শুশ্রুষায় নেমে পড়েন তিনি। সকলের হাতে নিয়ম করে তুলে দেন ভিটামিন সাপ্লিমেন্ট, প্যারাসিটামল ও কাফ সিরাপ। অনিতা সুস্থ হয়ে ১০ দিন পর হাসপাতাল থেকে ফিরে আসার পর থেকেই পরিস্থিতি একটু একটু করে বদলাতে থাকে। তাঁকে দেখে প্রতিবেশীরা হাততালি দিয়ে, ঘণ্টা বাজিয়ে অভিনন্দন জানান। আত্মবিশ্বাস পান বাড়ির অন্যরাও।

এরপর গত মাসের শুরুতে সকলে করোনা নেগেটিভ হন। সবাই মিলে করেন দুর্দান্ত ডিনার।

এটা সহজে হারিয়ে দেওয়ার মত কোনও অসুখ নয়। আমাদের ভাগ্যটাই শুধু ভাল ছিল। মুকুল বলেছেন।