কলকাতা: পূর্ব লাদাখের গালওয়ান উপত্যকায় চিনা সেনাবাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে ভারতীয় জওয়ানদের মৃত্যুর নিন্দায়, প্রতিবাদে জোম্যাটোর একদল কর্মী সম্প্রতি কোম্পানিতে চিনা বিনিয়োগের প্রসঙ্গ তুলে কোম্পানির টি-শার্ট পুড়িয়ে বিক্ষোভ দেখান। তাঁরা চিন-বিরোধী স্লোগান দেন। খাবার ডেলিভারি দেওয়া কোম্পানির বিরুদ্ধেও ক্ষোভ উগরে দেন তাঁরা। বেহালায় গত শনিবারের প্রতিবাদ কর্মসূচিতে সামিল ওই লোকজন দাবি করেন, গালওয়ানে যে চিনা সেনার হাতে ভারতীয় জওয়ানরা নিহত হয়েছেন, সেই চিন অর্থ বিনিয়োগ করছে জোম্যাটোয়। এজন্য তাঁরা জোম্যাটোর চাকরি ছেড়েছেন। সাধারণ মানুষকেও জোম্যাটোয় খাবার অর্ডার দেওয়া বন্ধ করার আবেদন করেন তাঁরা।
এবার পাল্টা জোম্যাটো জানাল, বিক্ষোভ দেখানো ওই কর্মীদের সম্প্রতি সংস্থা থেকে ছাঁটাই করা হয়েছে, তাঁরা ‘স্পর্শকাতর আবেগের ঢেউ’য়ে গা ভাসিয়ে নিজেদের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছেন। সেদিনের বিক্ষোভে সামিল হওয়ায় ওই কর্মীদের বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে অভিযোগও দায়ের করেছে জোম্যাটো।
গত মে মাসে জোম্যাটো করোনাভাইরাস অতিমারির প্রভাবে আর্থিক সঙ্কটের ধাক্কায় মোট কর্মীবাহিনীর ১৩ শতাংশ (৫২০ জন)-কে ছাঁটাই করে। কোম্পানির জনৈক মুখপাত্র বলেন, ওই বিক্ষোভ দেখিয়েছে হাতেগোনা কিছু ডেলিভারিকর্মী, যাদের সম্প্রতি আমাদের প্ল্যাটফর্ম গাইডলাইন বারবার ভাঙায় কাজ থেকে ছাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। দুর্ভাগ্যের বিষয়, রাগের মাথায় তারা একটা আবেগের জোয়ারে সামিল হয়েছে। এই ‘দুষ্কৃতীদের’ বিরুদ্ধে পুলিশি অভিযোগ রুজু করেছি আমরা। যদিও অভিযোগ কী ধরনের, তা জানানো হয়নি। মুখপাত্রটি আরও জানান, ‘বিভ্রান্তিকর প্রতিবাদে’ সামিল হননি বেশিরভাগ ডেলিভারি বয়, ফলে কলকাতায় জোম্যাটোর পরিষেবা ঠিকমতোই চলছে।
ঘটনা হল, ২০১৮ সালে অ্যান্ট ফিনান্সিয়াল নামে চিনা কোম্পানি আলিবাবা-র অধীন একটি সংস্থা জোম্যাটো ২১০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করে তার ১৪.৭ শতাংশ শেয়ারের মালিকানার জন্য। সম্প্রতি অ্যান্ট ফিনান্সিয়াল থেকে আরও ১৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার নেয় জোম্যাটো।
সেদিন এক বিক্ষোভকারী বলেন, চিনা কোম্পানিগুলি এখানে মুনাফা করছে,আর ওদিকে আমাদের দেশের সেনাবাহিনীর ওপর চিনা সেনারা হামলা করছে। আমাদের ভূখন্ড দখলের চেষ্টা করছে ওরা। এটা হতে দেওয়া যায় না। আরেক বিক্ষোভকারী না খেয়ে মরবেন, তবুও চিনের বিনিয়োগে চলা কোম্পানিতে কাজ করবেন না বলে জানিয়ে দেন।