বেঙ্গালুরু: ভারতীয় বায়ুসেনার এক আধিকারিক শিলাদিত্য বোস সম্প্রতি তার সমাজমাধ্যমে একটি ভিডিয়ো পোস্ট করে দাবি করেছিলেন যে তাঁকে বেঙ্গালুরুতে রাস্তার মাঝখানে গাড়ি আটকে হেনস্থা করা হয়েছে, মারধর করা হয়েছে এবং গালিগালাজও করা হয়েছে। আর এই ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়তেই নেটিজেনদের মধ্যে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছিল। তবে এবার (IAF Officer Assault Case) এই ঘটনায় নয়া মোড়। এই বায়ুসেনার আধিকারিকের বিরুদ্ধে দায়ের হয়েছে খুনের চেষ্টার অভিযোগ। এমনকী এও অভিযোগ উঠেছে তাঁর বিরুদ্ধে যে তিনি সেই বাইকচালকের দ্বারা হেনস্থা হওয়ার মিথ্যে দাবি করেছেন। একটি সিসিটিভি ফুটেজ সম্প্রতি প্রকাশ্যে এসেছে, যেখানে দেখা যাচ্ছে সেই বায়ুসেনার (IAF Officer) আধিকারিক নিজেই সেই বাইকচালককে প্রচণ্ড মারধর করছেন। গতকাল সোমবার সকালেই বেঙ্গালুরুর ফ্যাক্টরি জংশনে ঘটেছে এই ঘটনা। এই সময় বায়ুসেনার আধিকারিক শিলাদিত্য বোস এবং তাঁর স্ত্রী বিমানবন্দরের দিকে যাচ্ছিলেন।
রিপোর্ট অনুসারে সেই বাইকচালক বায়ুসেনার আধিকারিকের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেছেন এবং একইসঙ্গে অভিযোগও ফাইল করেছেন। বাইকচালকের নাম জানা গিয়েছে বিকাশ। বায়ুসেনা আধিকারিকের বিরুদ্ধে তার এই এফআইআর দায়ের করা হয়েছে ভারতীয় দণ্ডবিধির ১০৯ নং, ১১৫ (২) নং, ৩০৪, ৩২৪, ৩৫২ নং ধারার অধীনে। শিলাদিত্য বোসের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ দায়ের হয়েছে বায়াপ্পানাহালি থানায়।
আদপে কী ঘটেছিল
শিলাদিত্য বোস এবং তাঁর স্ত্রী স্কোয়াড্রন লিডার মধুমিতা দত্ত ২২ এপ্রিল ভোর ৬টা নাগাদ কলকাতার উদ্দেশে বিমান ধরার জন্য রওনা দিয়েছিলেন। পরে শিলাদিত্য বোস তাঁর এক্স হ্যান্ডলে একটি ভিডিয়ো পোস্ট করেন যেখানে তাঁর রক্তাক্ত মুখ দেখা যায় এবং সেখানে তিনি বলেন যে এক বাইকচালক কন্নড় না বলার জন্য তাঁকে হেনস্থা করেছে। তিনি জানান যে সেই বাইকচালক অনিয়ন্ত্রিতভাবে বাইক চালাচ্ছিলেন, তাদের গাড়ির সামনে হঠাৎ করে চলে আসে এবং তাদের হেনস্থা করা শুরু করে। তিনি সেই ভিডিয়োতে এও জানান যে স্থানীয় কিছু প্রবীণ ব্যক্তি ছাড়া আর কেউ এই সময়য় ছুটেও আসেননি তাঁকে উদ্ধার করতে।
সিসিটিভি ফুটেজে কী দেখা যাচ্ছে
কিন্তু সিসিটিভি ফুটেজ প্রকাশ্যে আসার পরে ঘটনার মোড় বদলে যায়। এই ভিডিয়োতে দেখা যাচ্ছে শিলাদিত্য বোস অর্থাৎ সেই উইং কমান্ডার রাস্তার মধ্যেই সেই বাইকচালককে মারধর করছেন, তাঁর মুখে ঘুষি মারছেন। এই দৃশ্য দেখে ভাষাজনিত অভিযোগ নস্যাৎ করেছে বেঙ্গালুরু পুলিশ। বেঙ্গালুরু ইস্টের ডিসিপি দেবরাজ স্পষ্টই সংবাদমাধ্যমকে জানান যে, এখানে ভাষাঘটিত কোনও সমস্যাই ঘটেনি। সেই উইং কমান্ডারের স্ত্রী যখন সেই বাইকচালককে প্রশ্ন করেন যে সে কেন ভুল দিক থেকে এসেছে, সেই থেকেই রাস্তার মধ্যে ঝামেলা বাড়ে। তিনি এও জানান যে সিসিটিভি ফুটেজ অনুসারে দুই-তিনজন ব্যক্তি তাদের সেই ঝামেলা থামানোর চেষ্টা করেছিলেন। এই মুহূর্তে আরও কিছু প্রমাণ সংগ্রহের চেষ্টা করছে বেঙ্গালুরু পুলিশ, জানান ডিসিপি দেবরাজ।