নয়াদিল্লি: ভারতে ক্রমশ বাড়ছে ক্যান্সার। আগামী ৫ বছরে দেশে ক্যান্সার রোগীর সংখ্যা ১২ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে। এমনই রিপোর্ট দিল ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল রিসার্চ ইন্সস্টিটিউট বা আইসিএমআর। ২০২৫ সালের মধ্যে প্রায় ১৫ লক্ষ মানুষ এতে আক্রান্ত হতে চলেছেন।


রিপোর্ট অনুযায়ী, চলতি বছরে ভারতে যত সংখ্যক মানুষ ক্যান্সারে আক্রান্ত হবেন, তার মধ্যে প্রায় ২৭ শতাংশ তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহারের কারণে। এই ধরনের ক্যান্সার রোগীর সিংহভাগ আবার উত্তর-পূর্ব ভারতের।


রিপোর্টে বলা হয়েছে, পুরুষদের ক্ষেত্রে ফুসফুস, খাদ্যনালী, মুখ ও পাকস্থলীর ক্যান্সার বেশি দেখা যায়। মহিলাদের ক্ষেত্রে স্তন ও জরায়ুর ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।


ন্যাশনাল ক্যান্সার রেজিস্ট্রি প্রোগ্রাম রিপোর্ট ২০২০ এই রিপোর্টটি সম্প্রতি যৌথভাবে প্রকাশ করেছে আইসিএমআর ও ন্যাশনাল সেন্টার ফর ডিজিজ ইনফরমেটিকস।


বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সারের গতিপ্রকৃতি, মৃত্যু-হার, ভারতে চিকিৎসার কী বন্দোবস্ত রয়েছে সে সব বলা রয়েছে। সমীক্ষা জানাচ্ছে, চলতি বছরে নতুন করে ৬,৭৯,৪২১ জন পুরুষ আক্রান্ত হতে পারেন ক্যান্সারে। ২০২৫ সালে সেটা পৌঁছতে পারে ৭,৬৩,৫৭৫-এ।


মহিলাদের ক্ষেত্রে আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যাটা কিন্তু অনেকটা বেশি। সমীক্ষা অনুযায়ী এ বছরে আক্রান্ত হতে পারেন ৭,১২,৭৫৮জন। আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে তা ছুঁয়ে ফেলতে পারে ৮,০৬,২১৮ জনকে।


মহিলাদের মধ্যে স্তন ক্যান্সারের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। মোট আক্রান্তের ১৪.৮ % অর্থাৎ ২ লক্ষ মহিলা এতে আক্রান্ত হতে পারেন। জরায়ুর ক্যান্সারে আক্রান্তের হার ৫.৪%। পুরুষ ও মহিলা মিলিয়ে খাদ্যনালীর ক্যান্সারে আক্রান্ত হতে পারেন ২ লক্ষ ৭০ হাজার।


এখনও পর্যন্ত অস্ত্রোপচার, কেমোথেরাপি, রেডিয়েশন ক্যান্সারের মূল চিকিৎসা। তবে আগের থেকে চিকিৎসা ব্যবস্থা অনেক উন্নত ও ফলপ্রসূ হয়েছে। অল ইন্ডিয়া ইন্সস্টিটিউট অব মেডিক্যাল সায়েন্সেসের প্রাক্তন অধিকর্তা ডাঃ পি কে ঝুলকার মতে, গত কয়েক বছরে ক্যান্সারের চিকিৎসায় তাৎপর্যপূর্ণ পরিবর্তন হয়েছে।


আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে ঠিকই, কিন্তু রুপোলিরেখার মতো বেশিরভাগ রোগী প্রথম দিকে আমাদের কাছে আসছেন। ফলে সুস্থের হার বাড়ছে। ক্যান্সার নির্ণয়ে পরীক্ষা পদ্ধতি আগের চেয়ে অনেক উন্নত হয়েছে, যা নির্ভুল রিপোর্ট দেয়। একটা সময় ছিল যখন ফুসফুসের স্টেজ ফোর ক্যান্সারে ৫ বছর বেঁচে থাকার কথা ভাবা যেত না। কিন্তু এখন সেটা সম্ভব।


ক্যান্সার রোগ সম্পর্কে সচেতনতা সুস্থতার হার বৃদ্ধির অন্যতম কারণ বলেও মনে করেন চিকিৎসকেরা।