নাসার জেট প্রোপালসন ল্যাবরেটরি (জেপিএল) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে যে, পৃথিবীর সঙ্গে ওই ২০২০ কিউ জি গ্রহাণুর সংঘর্ষ বেঁধে গেলেও ক্ষয়ক্ষতি কিছু ঘটত না বললেই চলে। তেমনটা হলে আকাশে অগ্নিবলয় বা কোনও উল্কাপাতের মতো বায়ুমন্ডলেই ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে যেত।
গত রবিবার জিএমটি অনুসারে ভোর চারটে ৮ মিনিট নাগাদ দক্ষিণ ভারত মহাসাগরের ওপর দিয়ে উড়ে গিয়েছে ১০ থেকে ২০ ফুট লম্বা ওই গ্রহাণু।
সেকেন্ডে ১২.৩ কিমি গতিবেগে গ্রহাণুটি পৃথিবীর খুব কাছ দিয়ে বেরিয়ে গেছে। কাছ দিয়ে বলতে ২২,০০০ মাইল দূরত্বে ভূসমালয় কক্ষ, যেখানে অধিকাংশ টেলিকমিউনিকেশন উপগ্রহ থাকে, তার অনেকটা নিচ গিয়ে বেরিয়ে গিয়েছে গ্রহাণুটি।
পৃথিবীর কাছাকাছি চলে আসার পর আকাশে এক লম্বা আলোর রেখা হিসেবে ওই গ্রহাণুটি ধরা পড়ে ক্যালিফোর্নিয়া ইন্সস্টিটিউট অফ টেকনোলজির পালোমার পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের টেলিস্কোপ জুইকি ট্রান্সিয়েন্ট ফেসিলিটিতে।
মার্কিন মহাকাশ সংস্থা বলেছে, এ ধরনের আকারের গ্রহাণু প্রতি বছরই বেশ কয়েকবার একই ধরনের দূরত্ব দিয়ে বেরিয়ে যায়। কিন্তু সেগুলিকে সব সময় রেকর্ড করা সম্ভব হয় না, যতক্ষণ না সেগুলি পৃথিবীর দিকে সরাসরি ধেয়ে আসায় অনেক সময় বায়ুমন্ডলে বিস্ফোরণ দেখা যায়। যেমনটা ২০১৩-তে রাশিয়ায় চেলয়াবিন্সকে ঘটেছিল। ৬৬ ফুট লম্বা একটি বস্তুর বিস্ফোরণে বেশ কয়েক মাইল জুড়ে বাড়িঘরের জানালা বিধ্বস্ত হয়ে পড়েছিল, এতে জখম হয়েছিলেন প্রায় এক হাজার মানুষ।
নাসা-র একটি মিশন রয়েছে বড়সড় গ্রহাণু (৪৬০ ফুট)-র গতিবিধি পর্যবেক্ষণের জন্য। এ ধরনের গ্রহাণুগুলিই পৃথিবীর পক্ষে ঝুঁকির কারণ হয়ে উঠতে পারে। এই মিশনের যন্ত্রপাতিতে এ ধরনের ছোটখাটো গ্রহাণুর গতিবিধির ওপর নজর রাখে।
নাসা-র নিয়ার-আর্থ অবজেক্ট স্টাডিজের ডিরেক্টর পল চোড়াস বলেছেন, এ ধরনের ছোট গ্রহাণুকে এত কাছে আসতে দেখাটা বেশ গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, আমরা দেখতে পাই যে, পৃথিবীর মাধ্যকর্ষণ শক্তি এর গতিপথ নাটকীয়ভাবে বাঁকিয়ে দেয়।
জেপিএলের হিসেব অনুযায়ী, পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ শক্তির টানে ওই গ্রহাণু প্রায় ৪৫ ডিগ্রি ঘুরে গিয়েছিল।