নয়াদিল্লি: আয়ুর্বেদ বিশেষজ্ঞরা অস্ত্রোপচার করতে পারবেন- কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ঘোর আপত্তি জানিয়ে এবার সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করল ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন বা আইএমএ। গ্যাংগ্রিন, টিউমার, নাকের এবং ছানি সার্জারি করতে পারবেন স্নাতকোত্তর আয়ুর্বেদিক চিকিৎসকরা, এমনই নির্দেশিকা সম্প্রতি জারি করেছে আয়ুষ মন্ত্রকের অধীনে সেন্ট্রাল কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়ান মেডিসিন। ৩৯ ধরনের সাধারণ অস্ত্রোপচার এবং চোখ, কান, গলা সহ ১৯ ধরনের অপারেশনের একটি তালিকা দিয়েছে কাউন্সিল। সেই তালিকাভুক্ত অস্ত্রোপচারের নাকি প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে আয়ুর্বেদ চিকিৎসকদের। তালিকায় টিউমার, সিস্ট অপসারণ, অ্যাম্পিউটেশন (‌গ্যাংগ্রিনের কারণে অঙ্গচ্ছেদ)‌, ছানি কাটার মতো গুরুত্বপূর্ণ অস্ত্রোপচারও রয়েছে। এই ব্যাপারেই তীব্র আপত্তি জানিয়েছে ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন। আইএমএ-র চিকিৎসকরা আয়ুর্বেদ পদ্ধতিতে অস্ত্রোপচারের ঘোরতর বিরোধী। রোগীদের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত হয়ে বিষয়টি রুখতে তাঁরা এ বার দেশের সর্বোচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন।


আইএমএ–র মতে এ রকম হলে সবথেকে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন রোগীরাই। কারণ আয়ুর্বেদের পদ্ধতি ও প্রক্রিয়া একেবারেই আলাদা। চিকিৎসকদের এই সংগঠনের অনেকগুলি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তুলে দিয়েছেন। তাঁরা জানতে চাইছেন আযুর্বেদ অনুসারে অপারেশন করা হলে রোগীকে কী পদ্ধতিতে অজ্ঞান করা হবে?‌ অস্ত্রোপচারের পরেই বা রোগীর কীভাবে চিকিৎসা হবে?‌ সেক্ষেত্রে কি অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া হবে না?‌ সেপসিস রোখার ক্ষেত্রে কী ব্যবস্থা নেবেন আয়ুর্বেদ চিকিৎসকরা?‌ তাঁদের মতে, এসব বিষয়ে যদি আয়ুর্বেদ চিকিৎসকদের আধুনিক চিকিৎসার ওপরেই নির্ভর করতে হয়, তাহলে তা একটি মিশ্র জটিল প্রক্রিয়া হয়ে যাবে অনেকটা খিচুড়ির মতো।

কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়ান মেডিসিনের বোর্ড অফ গভর্নরের চেয়ারম্যান বৈদ্য জয়ন্ত দেব পূজারী অবশ্য দাবি করেছেন যে  এই অপারেশন প্রক্রিয়া আয়ুর্বেদ প্রতিষ্ঠানগুলিতে গত দু'দশক ধরেই হয়ে আসছে। নির্দেশিকা জারি করে সেগুলিকে বৈধতা প্রদান করা হল। আয়ুষ মন্ত্রকের সচিব বৈদ্য রাজেশ কোটেচা জানান, কাউন্সিল কোনওভাবেই নীতি পরিবর্তন করছে না এই নির্দেশিকার মাধ্যমে। আয়ুর্বেদ শাস্ত্র নিয়ে পড়াশোনা করা পড়ুয়াদের ভবিষ্যতের জন্য উদ্বুদ্ধ করতেই এই পদক্ষেপ বলে জানিয়েছেন তিনি।

তবে যাঁরা শল্য ও শলক্য পদ্ধতিতে বিশেষজ্ঞ তাঁরাই অস্ত্রোপচার করার জন্য অনুমোদন পাবেন বলে জানিয়েছেন কোটেচা। কিন্তু এই সিদ্ধান্ত মানতে কোনও মতেই রাজি নয় আইএমএ। সুপ্রিম কোর্টের কাছে তারা আবেদন জানিয়েছে, রোগীদের কথা ভেবেই এই বিষয়টি বন্ধ করা দরকার।