কাঠমান্ডু: নেপালের প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা অলির অনুরোধে দেশের পার্লামেন্ট ভেঙে দিলেন রাষ্ট্রপতি বিদ্যা দেবী ভাণ্ডারী। বলা হয়েছে, এপ্রিল-মে মাসে হবে ভোট। কিন্তু কোনও দলের সঙ্গে আলোচনা ছাড়াই যেভাবে পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়া হল তাতে আপত্তি জানিয়েছে নেপাল কমিউনিস্ট পার্টি। দলের ৭ ক্যাবিনেট মন্ত্রী ইস্তফা দিয়েছেন।

নেপালি রাষ্ট্রপতি জানিয়েছেন, আগামী বছর ৩০ এপ্রিল ও ১০ মে দুই পর্যায়ে ভোট হবে।

রবিবার অলি একটি জরুরি বৈঠক ডাকেন। তাতে ঠিক হয়, ক্ষমতাসীন দলের ভেতরে গভীর সঙ্কট এড়াতে পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়া হবে। কিন্তু এই পদক্ষেপ ভালভাবে নেয়নি বেশিরভাগ মহল। অলির নিজের দলের নেতারাও নির্ধারিত ভোটের ২ বছর আগে এভাবে পার্লামেন্ট ভেঙে ভোটে যাওয়ার বিরোধিতা করেছেন, এই পদক্ষেপ অসাংবিধানিক ও অগণতান্ত্রিক আখ্যা দিয়েছেন তাঁরা। প্রধান বিরোধী দল নেপালি কংগ্রেসও অলির সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছে।

ওয়াকিবহাল মহল বলছে, পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়ায় অলি ইচ্ছেমত সরকার চালাতে পারবেন। ২০১৮ সালে তাঁর কমিউনিস্ট পার্টি অফ নেপাল (ইউনিফায়েড মার্ক্সসিস্ট-লেনিনিস্ট) আর প্রচণ্ডর কমিউনিস্ট পার্টি অফ নেপাল- মাওইস্ট সেন্টার মিশে গিয়ে যে দল তৈরি হয়, তা ভেঙে দিতেও পারবেন তিনি। প্রচণ্ড বেশ কিছুদিন ধরে অলিকে পদচ্যুত করার চেষ্টা করছেন, বেশ কয়েকবার প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছেন তিনি। তিনি সরকারে আরও ক্ষমতা চান কিন্তু তাতে নারাজ অলি।

এখন দুই কমিউনিস্ট পার্টির এই মিলিজুলি সরকার ভেঙে যাওয়ায় তীব্র আপত্তি রয়েছে চিনের। নেপালে কর্মরত চিনা রাষ্ট্রদূত হু ইয়াঙ্কি গত এপ্রিল-মে মাসে এ ব্যাপারে একের পর এক বৈঠক করেছেন, যে সময়টা চিনা সেনারা লাদাখ ভূখণ্ডে ঢুকছিল। চিন তখন থেকে চেষ্টা করছিল, ভারতের প্রতিবেশী রাষ্ট্রের এই দুই কমিউনিস্ট পার্টিকে এক জোট রাখতে। কিন্তু অলি তো ভাবছেনই, ওয়াকিবহল মহলও বলছে, প্রথমে অলিকে সমর্থন করলেও চিন এখন তাঁর পাশে আর আগের মত নেই, উল্টে দুই কমিউনিস্ট পার্টিকে এক জোট রাখতে চায় তারা। সেটা অলির পছন্দ নয়, চিনা রাষ্ট্রদূতকে তিনি বলেছেন, নেপালের সমস্যা নেপাল নিজেই মিটোতে পারবে, অন্য রাষ্ট্রের সাহায্য দরকার নেই।

এদিকে নেপালের জনতা তাদের পুরনো হিন্দুরাষ্ট্রের দাবি তুলে পথে নেমেছে। ফলে ঘরে বাইরে চাপে নাজেহাল অলি পার্লামেন্ট ভেঙে দিয়ে পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রমে আনার চেষ্টা চালাচ্ছেন।