নয়াদিল্লি: সন্ত্রাসে মদত জোগানো নিয়ে কাটাছেঁড়া শুরু হয়েছে আন্তর্জাতিক মহলে। সেই আবহেই পাকিস্তানকে ঋণের দ্বিতীয় কিস্তির অর্থ দিল আন্তর্জাতিক অর্থ ভাণ্ডার (IMF)। পহেলগাঁওয়ে হামলার পর পাকিস্তানকে ওই অর্থ দেওয়ারই বিরোধিতা করেছিল ভারত। সেই নিয়ে ভোটাভুটি হলে, ভোটদান থেকেও বিরত ছিল। শেষ পর্যন্ত বুধবার পাকিস্তানকে দ্বিতীয় কিস্তির অর্থ দেওয়ার কথা জানাল IMF. (IMF Bailout package for Pakistan)
পাকিস্তান সেনেটে বাজেট অধিবেশনের আগেই তাদের দ্বিতীয় কিস্তি বাবদ ১.০২৩ বিলিয়ন ডলার দিল IMF. Extended Fund Facility অর্থাৎ দীর্ঘমেয়াদি ঋণ প্রকল্পের আওতায় এই অর্থ দেওয়া হয়েছে পাকিস্তানকে। ইতিমধ্যে একবার পাকিস্তান যাওয়ার কথাও ছিল IMF আধিকারিকদের। কিন্তু ভারতের সঙ্গে সংঘাত পরিস্থিতিতে নিরাপত্তার খাতিরেই সেই সফর পিছিয়ে দেওয়া হয়। ২০২৫-’২৬ সালের ২ জুন পাক সরকার বাজেট পেশ করতে পারে। IMF-এর সঙ্গে তাদের আলোচনা চলবে ১৬ মে পর্যন্ত। (Pakistan News)
পাকিস্তানের সেন্ট্রাল ব্যাঙ্ক, State Bank of Pakistan জানিয়েছে, IMF-এর কাছ থেকে পাওয়া দ্বিতীয় কিস্তির অর্থ আপাতত সঞ্চিত বিদেশি মুদ্রার ভাঁড়ারে রাখবে তারা। গত সপ্তাহেই IMF বোর্ডের বৈঠকে পাকিস্তানকে দ্বিতীয় কিস্তির অর্থ দেওয়ায় অনুমোদন পড়ে। পাকিস্তান সরকার অর্থনৈতিক সংস্কারের যে নীল নশা তৈরি করেছে, তা নিয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করে IMF. দেশের অর্থনীতিকে স্থিতিশীল করে তুলতে, আত্মবিশ্বাস গড়ে তুলতে পাকিস্তান অনেকটা এগিয়েছে বলে জানায় তারা। এমনকি অভ্যন্তরীণ উৎপাদনের হারেও পাকিস্তান লক্ষ্যপূরণের দিকে এগোচ্ছে বলে জানানো হয়।
এপ্রিলের শেষে পাকিস্তানের মোট সঞ্চয় ছিল ১০.২ বিলিয়ন ডলার, যা ২০২৪ সালের অগাস্ট মাসের ৯.৪ বিলিয়ন ডলারের চেয়ে বেশি। ২০২৫ সালের জুন মাস শেষ হতে হতে তাদের সঞ্চয় ১৩.৯ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। IMF-এর কাছ থেকে মোট ৭ বিলিয়ন ডলার ঋণ নিচ্ছে পাকিস্তান। ৩৭ মাস ধরে কিস্তিতে কিস্তিতে সেই অর্থ হাতে পাবে তারা। গত বছর সেপ্টেম্বর মাসে প্রথম কিস্তির অর্থ হাতে পেয়েছিল পাকিস্তান।
গত সপ্তাহে IMF-এর এগজিকিউটিভ বোর্ডেের বৈঠকে পাকিস্তানকে দ্বিতীয় কিস্তির অর্থ দেওয়া নিয়ে যে ভোটাভুটি হয়, তা থেকে নিজেকে সরিয়ে নেয় ভারত। ভারত জানায়, পাকিস্তান থেকে দুর্দশা থেকে তুলে আনতে যে বিপুল পরিমাণ ঋণ দিচ্ছে IMF, তার শর্তাবলী পালনে ব্যর্থ তারা। তাদের ঋণের পরিমাণ যে হারে বাড়ছে, তা আদৌ মেটাতে পারবে কি না পাকিস্তান, তা নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করে ভারত। পাশাপাশি, ঋণের অর্থ থেকেও পাকিস্তান সীমান্ত সন্ত্রাসে মদত জোগাতে পারে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। দেশের অর্থনীতিতে তাদের সেনার ভূমিকা যে কতখানি, সেখানে অর্থনৈতিক সংস্কার ঘটানো কতটা মুশকিল, তুলে ধরা হয় ভারতের তরফে।