নয়াদিল্লি: হাথরাসের দলিত যুবতীর গণধর্ষণের অভিযোগকে ইস্যু করে উত্তরপ্রদেশে জাতপাতের লাইনে দাঙ্গায় উসকানি, যোগী আদিত্যনাথ সরকারের বদনাম করার ‘আন্তর্জাতিক পরিকল্পনা’র হদিশ মিলেছে বলে দাবি করল রাজ্য় পুলিশ। সূত্রের দাবি, justiceforhathrasvictim.carrd.co নামে একটি ওয়েবসাইটের এই চক্রান্ত, প্ল্যানের সঙ্গে যোগসূত্র আছে। সেই ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, কীভাবে পুলিশকে এড়িয়ে নিরাপদে প্রতিবাদ করতে হয়। দাঙ্গার সময় ও যে পরিস্থিতিতে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ছোঁড়ে, তখন নিরাপদ, সুরক্ষিত থাকতে কী কী করা উচিত, অনুচিত, তার তালিকাও আছে ওয়েবসাইটে। আমেরিকায় ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার্স প্রতিবাদীদের অনলাইনে শেয়ার করা নথি, লিটারেচার থেকে ওয়েবসাইটের অধিকাংশ কনটেন্ট নেওয়া হয়েছে বলে সূত্রটি জানিয়েছে। রবিবারই আদিত্যনাথ সরকারের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের ব্যাপারে হাথরাসের চান্দপা থানায় অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতা সহ ভারতীয় দণ্ডবিধির একাধিক কঠোর ধারায় এফআইআর দায়ের করা হয়েছে।
এফআইআর করা হয়েছে আইপিসির ১০৯ , ১২০বি, ১২৪ এ, ১৫৩এ, ১৫৩ বি ও তার চারটি উপধারায়, ৪২০ ধারায়। এগুলি ফৌজদারি চক্রান্ত, রাষ্ট্রদ্রোহিতা, ধর্ম, জাতপাত, জন্মস্থান, বাসস্থান, ভাষা প্রভৃতির ভিত্তিতে বিভিন্ন গোষ্ঠীর মধ্যে শত্রুতা ছড়ানো, সম্প্রীতি বজায় রাখার পরিপন্থী কাজকর্ম করা, জাতীয় সংহতি বিরোধী কাজ করা, প্রতারণা ও অসত্ ভাবে কোনও সম্পত্তি দেওয়ার প্রলোভন দেখানোর মতো অভিযোগ তোলা হয়েছে এইসব ধারায়। অন্য যেসব ধারা যোগ হয়েছে, সেগুলির মধ্যে আছে মিথ্যা তথ্যপ্রমাণ পেশ করে এমন অপরাধ করা যাতে যাবজ্জীবন কারাবাস হয়, কাউকে মিথ্য়া নথিপ্রমাণ দিতে ভয় দেখানো, অবমাননাসূচক বিষয়বস্তু ছাপানো, সম্মানহানির উদ্দেশে জালিয়াতি করা প্রভৃতি। তথ্য ও প্রযুক্তি আইনের কিছু ধারাও যোগ করা হয়েছে।
সম্প্রতি রাজ্যের সাতটি বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচন সংক্রান্ত রিভিউ মিটিংয়ে মুখ্যমন্ত্রী দলীয় কর্মীদের সাবধান করেন যে, তাঁর সরকারের বিরুদ্ধে চক্রান্ত চলছে। তাদের দেশ ও রাজ্যে জাতপাত ও সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় যারা উসকানি দিতে চায়, তাদের উন্মোচিত করতে বলেন তিনি। বলেন, যারা উন্নয়ন পছন্দ করে না, তারাই দেশে জাতপাত ও সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় প্ররোচনা দিতে চায়। দাঙ্গার প্রেক্ষাপটে এইসব লোকজন রাজনৈতিক ফায়দা তুলতে চায়, সেজন্য়ই প্রতিদিন নতুন নতুন ষড়যন্ত্র করছে। রবিবার দলীয় কর্মীদের মুখোমুখি হয়ে আদিত্যনাথ দাবি করেন, বেশ কিছু উন্নয়নমূলক কাজকর্ম হয়েছে, বিশেষত অতিমারীর সময়, যা তাঁর রাজনৈতিক বিরোধীদের পক্ষে হজম করা কঠিন।