নয়াদিল্লি: ছোট্ট ছেলে হাত ঠেকিয়েছিল মাত্র। বল তুলে নিয়েছিল নিজের হাতে। তার পরিণতি হল মারাত্মক। দলিত বালককে চরম অপদস্থ করা, হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠল গুজরাতে। শুধু তাই নয়, প্রতিবাদ জানানোয় ওই বালকের কাকার আঙুলও কেটে নেওয়া হয় বলে সামনে এল অভিযোগ। এই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। দলিত হওয়াতেই এমন 'শাস্তি' বলে দাবি পরিবারের (Gujarat News)।


গুজরাতের পাটান জেলার কাকোশি গ্রামের ঘটনা। রবিবার সেখানে একটি স্কুলের মাঠে ক্রিকেট ম্যাচ চলছিল।  মাঠের ধারে বসে খেলা দেখছিল দলিত সম্প্রদায়ের এক বালক। আচমকা বাউন্ডারি ঘেঁষে বল চলে এলে, হাত দিয়ে বলটি তোলে সে। তা নিয়েই ঝামেলা বাধে বলে জানা গিয়েছে (Dalit Atrocities)। 


বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, দলিত বালকটিকে বলে হাত ছোঁয়াতে দেখে খেলায় গ্রামবাসীদের ব্যাপক ক্ষুব্ধ হন। মাঠেই ওই বালককে রীতিমতো শাসানো হয়। হুমকি দেন সকলে মিলে। এমনকি জাতি বিদ্বেষমূলক কটাক্ষও করা হয় বলে অভিযোগ। এলাকায় বসবাসকারী দলিত সম্প্রদায়ের মানুষের প্রতি হুঁশিয়ারিও শোনা যায় বলে খবর। 


আরও পড়ুন: Odisha Train Accident: রেলের সেফটি কমিশন থাকতে তদন্তে CBI কেন? ট্রেন দুর্ঘটনায় সুর চড়াল কংগ্রেসও


স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এমন পরিস্থিতিতে ওই বালকের কাকা, ধীরজ পারমার তীব্র প্রতিবাদ জানান। জাতি বিদ্বেষমূলক কটাক্ষ নিয়ে ঝামেলা বাধে। কোনও রকমে সেই সময় পরিস্থিতি সামাল দেওয়া সম্ভব হয়। মধ্যস্থতা হয়ে গিয়েছে ভেবে বাড়ি ফিরে যান সকেল। কিন্তু এর পর, রবিবার সন্ধেয় ধারাল অস্ত্র নিয়ে, দলবল মিলে ওই পরিবারের উপর চড়াও হয় বলে অভিযোগ। 


সংবাদ সংস্থা পিটিআই সূত্রে পাওয়া খবর অনুযায়ী, সন্ধেয় ধীরজ এবং তার ভাই কীর্তির উপর চড়াও হয় একটি দল। তাদের হাতে ধরাল অস্ত্র ছিল। হামলাকারীরা কীর্তির হাতের একটি আঙুল ধারাল অস্ত্রের আঘাতে কেটে দেয় বলে অভিযোগ। এই ঘটনায় ৩২৬ (ইচ্ছাকৃত ভাবে বিপজ্জনক অস্ত্র দিয়ে কাউকে আঘাত), ৫০৬ (অপরাধমূলক হুমকি) এবং তফসিলি জাতি ও উপজাতি (নৃশংসতা প্রতিরোধ) আইনে মামলা দায়ের হয়েছে। তবে এখনও পর্যন্ত কারও গ্রেফতার হওয়ার খবর মেলেনি। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।


এর আগেও, একাধিক বার গুজরাত থেকে দলিত এবং সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে এমন অপরাধের ঘটনা সামনে এসেছে। ২০২২ সালে দলিতবিরোধী হিংসা নিয়ে একটি রিপোর্ট প্রকাশ করে গুজরাত পুলিশ। ততে দেখা যায়, শুধুমাত্র আমদাবাদেই সে বছর এমন ১৮০টি ঘটনা ঘটে। গোটা রাজ্যে এই সংখ্যা ছিল ১ হাজার ৪২৫। গড় হিসেব অনুযায়ী, ২০২২ সালে দৈনিক চারটি করে এমন ঘটনা ঘটে।