বালেশ্বর: সিগনালে গন্ডগোল ছিল, নাকি পয়েন্টের বিভ্রাট! চার দিন হতে চললেও, ওড়িশার বালেশ্বর দুর্ঘটনার নেপথ্য কারণ নিয়ে ধন্দ কাটেনি এখনও। ট্রেনে দুর্ঘটনা প্রতিরোধী যন্ত্র কেন ছিল না, প্রশ্ন উঠছে তা নিয়েও। এ সবের মধ্যে মঙ্গলবার দুর্ঘটনাস্থলে পৌঁছে তদন্ত শুরু করল কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা CBI. রেলের সেফটি কমিশন থাকতে তদন্তে, CBI কেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন বিরোধীরা (Odisha Train Accident)। 


রেলের তরফেই দুর্ঘটনার তদন্তভার CBI-এর হাতে তুলে দেওয়ার সুপারিশ করা হয়। তা নিয়ে গোড়াতেই আপত্তি তোলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার এর বিরুদ্ধে সরব হল কংগ্রেসও। দলের সাংসদ জয়রাম রমেশ (Jairam Ramesh) কেন্দ্রের মোদি সরকারকে তীব্র বিঁধেছেন। রেলের সেফটি কমিশন থাকতে কেন CBI তদন্ত, প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। 


এ দিন ট্যুইটারে কেন্দ্রকে আক্রমণ করেন জয়রাম। তাঁর কথায়, 'বালেশ্বর ট্রেন দুর্ঘটনা নিয়ে রেলওয়ের সেফটি কমিশনার রিপোর্ট জমা দেওয়ার আগেই, CBI তদন্তের ঘোষণা। ব্যর্থতা ঢাকতে নতুন শিরোনাম তৈরি করার প্রচেষ্টা ছাড়া আর কিছুই নয় এটা। ক্রোনোলজিটা ভেবে দেখুন'।



আরও পড়ুন: Odisha Train Accident: জীবিত করমণ্ডল এক্সপ্রেসের দুই চালক, প্রাথমিক বয়ান রেকর্ড করেছেন, পেয়ে গিয়েছেন ক্লিনচিটও


এ প্রসঙ্গে ২০১৬ সালের ২০ নভেম্বর ঘটে যাওয়া ইন্দোর-পটনা এক্সপ্রেসের বেলাইন হয়ে যাওয়ার উদাহরণ টানেন জয়রাম। তিনি লেখেন, '১) ২০২০ সালের ২০ নভেম্বর: ইন্দোর-পটনা এক্সপ্রেস কানপুরে লাইনচ্যূত হয়। প্রাণ হারান ১৫০ জন যাত্রী। ২) ২০১৭ সালের ২৩ জানুয়ারি: তৎকালীন রেলমন্ত্রী সুরেশ প্রভু কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রককে চিঠি লিখে NIA তদন্তের সুপারিশ করেন। ৩) ২০১৭ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি: প্রধানমন্ত্রী কানপুরে বললেন, ওই দুর্ঘটনা আসলে ষড়যন্ত্র। ৪) ২০১৮ সালের ২১ অক্টোবর: সংবাদপত্রের রিপোর্টে বলা হয়, NIA কোনও চার্জশিট জমা দেবে না। ৫) ৬ জুন ২০২৩:  কানপুর রেল দুর্ঘটনা নিয়ে কোনও রিপোর্ট NIA জমা দিয়েছে বলে খবর নেই। দায় নেই কারও'।


এর আগে, একই প্রশ্ন তোলেন মমতা। এককালে রেলমন্ত্রকের দায়িত্ব সামলানো মমতার যুক্তি ছিল, সাঁইথিয়া এবং জ্ঞানেশ্বরী দুর্ঘটনার তদন্তভার CBI-কে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু একযুগ কেটে গেলেও, কিছু হয়নি। তাই বালেশ্বরের ক্ষেত্রে রেলের সেফটি কমিশনকে তদন্তভার দেওয়া উচিত বলে জানান মমতা।


এ নিয়ে তৃণমূলের সাংসদ শান্তনু সেন বক্তব্য, "CBI-এর কনভিকশনের হার কতটা, তা আমরা জানি। তার পরেও তদন্ত দেওয়ার অর্থ, রেলকে ক্লিনচিট দেওয়া বলে আশঙ্কা। বিগত কয়েক বছরের কর্মকাণ্ডে তা ইতিমধ্যেই প্রমাণিত।"


এ দিকে, মঙ্গলবারই ওড়িশার বালেশ্বরে দুর্ঘটনাস্থলে পৌঁছয় CBI. ১০ সদস্যের একটি দল পৌঁছয় দুর্ঘটনাস্থলে, যার নেতৃত্বে রয়েছেন CBI জয়েন্ট ডিরেক্টর বিপ্লব চৌধুরী। দুর্ঘটনার দিন সকালের ডিউটিতে কারা ছিলেন, কারা ছিলেন বিকেলের ডিউটিতে, কতজন কর্মী উপস্থিত ছিলেন, সিগনাল রুমে কী হচ্ছিল, প্যানেল কন্ট্রোল রুমে কারা ছিলেন, পয়েন্ট পাল্টাতে কে নির্দেশ দেন, খুঁটিয়ে জানতে চান তাঁরা।