নয়াদিল্লি: কৃষক আত্মহত্যা থেকে জনসংখ্যা বৃদ্ধি, সবকিছুকে ছাড়িয়ে গেল পড়ুয়াদের আত্মহত্যা। ভারতে পড়ুয়াদের মধ্যে আত্মহত্যার হার উদ্বেগজনক জায়গায় পৌঁছল। ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরো (NCRB)-র পরিসংখ্যান অন্তত তেমনই জানান দিচ্ছে। ভারতে পড়ুয়াদের আত্মহত্যা মহামারির আকার ধারণ করেছে বলে জানিয়েছে তারা। (NCRB Student Suicide Data)


NCRB-র তরফে 'Student Suicides: An Epidemic Sweeping India' শীর্ষক একটি রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে। IC3 কনফারেন্স অ্যান্ড এক্সপো ২০২৪ অনুষ্ঠানে বুধবার রিপোর্টটি প্রকাশ করা হয়। ওই রিপোর্টে বলা হয়েছে, বার্ষিক হিসেবে, ভারতে সার্বিক আত্মহত্যার হার ২ শতাংশ বেড়ে গিয়েছে। আর পড়ুয়াদের আত্মহত্যার হার বেড়েছে ৪ শতাংশ। (India Student Suicide)


NCRB জানিয়েছে, এমনিতে পড়ুয়াদের আত্মহত্যার ঘটনা তেমন প্রকাশ্যে আসে না। তার পরও ৪ শতাংশ বৃদ্ধি যথেষ্ট চিন্তাজনক। গত দুই দশকে পড়ুয়াদের আত্মহত্যার হার বেড়ে গিয়েছে ৪ শতাংশ, যা জাতীয় গড়ের চেয়ে দ্বিগুণ। ২০২২ সালে যত পড়ুয়া আত্মঘাতী হন, তাঁদের মধ্যে ৫৩ শতাংশ ছিল ছেলে। ২০২১ থেকে ২০২২ সালে ছেলে পড়ুয়াদের আত্মহত্যার হার ৬ শতাংশ যাও বা কমে, মেয়ে পড়ুয়াদের আত্মহত্যার হার ৭ শতাংশ বেড়ে যায়।


রিপোর্টে বলা হয়েছে, দেশের জনসংখ্যা এবং সার্বিক আত্মহত্যার চেয়েও পড়ুয়াদের আত্মহত্যার হার বেশি। বিগত দশকে  ০ থেকে ২৪ বযর বয়সি জনসংখ্যার বৃদ্ধি ৫৮.২ কোটি থেকে কমে ৫৮.১ কোটি হয়েছে। সেই নিরিখে পড়ুয়াদের আত্মহত্যা ৬ হাজার ৬৫৪ থেকে বেড়ে ১৩ হাজার ৪৪ হয়েছে।


IC3 একটি অলাভজনক সংস্থা। পৃথিবীর সর্বত্র স্কুল, কলেজ পড়ুয়া, শিক্ষক-শিক্ষিকা, অধ্যাপক, কাউন্সেলরদের প্রশিক্ষণ দেয় তারা। তাদের সহযোগিতায় এই রিপোর্টি তৈরি করেছে NCRB. বলা হয়েছে, মহারাষ্ট্র, তামিলনাড়ু এবং মধ্যপ্রদেশেই সবচেয়ে বেশি সংখ্যক পড়ুয়া আত্নহত্যা করেন। গোটা দেশে যত পড়ুয়া আত্মঘাতী হন, ওই তিন রাজ্যেই তার এক তৃতীয়াংশ ঘটে। দক্ষিণের রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিতে মোট পড়ুয়া আত্মহত্যার ২৫ শতাংশ ঘটে। রিপোর্টে দেখা গিয়েছে, গত এখ দশকে আত্মঘাতী পড়ুয়াদের মধ্যে ছেলেদের আত্মহত্যা বেড়েছে ৫০ শতাংশ, মেয়েদের ৬১ শতাংশ।


২০১৭ সালের মেন্টাল হেলথকেয়ার অ্যাক্ট আইন অনুযায়ী, মানসিক ভাবে অসুস্থরা আত্মঘাতী হলে, তা অপরাধের আওতায় পড়ে না। কিন্তু আত্মহত্যার চেষ্টা এবং তাতে কারও কোনও সংযোগ উঠে এলে, তা অপরাধের আওতায় পড়ে। ফলে পড়ুয়া আত্মহত্যা করলেও, অনেক সময় পরিবারের লোকজন তা প্রকাশ হতে দেন না।