নয়াদিল্লি: ভারতীয় দণ্ডবিধি, ফৌজদারি দণ্ডবিধি ও ভারতীয় সাক্ষ্য আইন সংশোধন করতে ৩ নতুন বিল এনেছে মোদি সরকার (Central Government)। এবার এই ৩ নতুন বিলের বিরোধিতায় সরব তৃণমূল-সহ ইন্ডিয়া জোট। ভারতীয় ন্যায় সংহিতা, ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতা ও ভারতীয় সাক্ষ্য অধিনিয়ম বিলের বিরোধিতায় সরব হলেন বিরোধীরা।


৩ নতুন বিলের বিরোধিতায় সরব: বিলে আপত্তির কথা জানিয়ে সংসদীয় স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যানকে চিঠি দিলেন সাংসদ ডেরেক ও'ব্রায়েন (MP Derek O'Brien)। চিঠিতে তিনি উল্লেখ করেছেন, 'কোনও আলোচনা না করেই বিল আনা হয়েছে। বিরোধীদের কথায় গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। পুরনো আইনকেই অনুকরণ করা হয়েছে। আগের আইনের থেকে এই আইন আরও বেশি ঔপনিবেশিক। চব্বিশের ভোটের আগে এটা একটা স্টান্ট।' শুক্রবার নতুন ৩ বিল নিয়ে বৈঠক ডেকেছে সংসদীয় স্ট্যান্ডিং কমিটি। 


মোদি সরকারের প্রস্তাবিত আইন নিয়েই গোড়া থেকেই আপত্তি তুলে আসছে বিরোধীরা। তৃণমূলের তরফে এ নিয়ে এর আগেও চিঠিও দেওয়া হয় সংসদের স্ট্যান্টিং কমিটিকে। প্রস্তাবিত তিনটি আইনই ভারতীয় বিচার ব্যবস্থার পরিপন্থী বলে সমস্বরে দাবি তোলে I.N.D.I.A শিবির। আর এবার, সংসদীয় স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যানকে চিঠি দিলেন সাংসদ ডেরেক ও'ব্রায়েন। 


এর আগে বিষয়টি নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় মুখ খুলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি লেখেন, 'ভারতীয় দণ্ডবিধি, নাগরিক সুরক্ষা সংহিতা এবং ভারতীয় সাক্ষ্য অধিনিয়ম যে খসড়া তৈরি করেছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক, তা পড়ছিলাম। তাতে নীরবে যেভাবে নাগরিক-স্বার্থ বিরোধী কঠোর বিধি ঢুকিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হয়েছে, তাতে হতবাক আমি'। মমতা আরও লেখেন, 'আগে ছিল দেশদ্রোহ আইন, তার বিধান প্রত্যাহারের নামে ভারতীয় ন্যায় সংহিতা নামক যে ব্যবস্থা চালুর প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, তা আরও কঠোর এবং স্বেচ্ছাচারী। এতে নাগরিকদের উপর আরও গুরুতর প্রভাব পড়বে'। সেখানেই থামেননি মুখ্যমন্ত্রী। সকলকে ওই মোদি সরকারের প্রস্তাবিত সংশোধনী আইনের খসড়াও পড়ে দেখতে আহ্বান জানান।


মুখ্য়মন্ত্রী আরও লিখেছিলেন, 'বর্তমান আইনগুলিকে অবশ্যই ঔপনিবেশিক শাসনের প্রভাবমুক্ত করা প্রয়োজন, কিন্তু শুধুমাত্র গঠনগত ভাবে নয়, প্রকৃত অর্থে প্রভাবমুক্ত করা প্রয়োজন। দেশেক আইনবিদ এবং সমাজকর্মীদের অনুরোধ করছি, বিচারব্যবস্থায় গণতান্ত্রকে টিকিয়ে রাখার স্বার্থেই গুরুত্ব দিয়ে পড়ে দেখুন প্রস্তাবিত সংশোধনী আইনের খসড়া। সংসদে যখন আলোচনা হবে, আমার সতীর্থরা স্ট্যান্ডিং কমিটির কাছে বিষয়টি উত্থাপন করবেন। অভিজ্ঞতার আলোকে আইনগুলির উন্নতি প্রয়োজন, কিন্তু ঔপনিবেশিক কর্তৃত্ববাদকে পিছনের দরজা দিয়ে দিল্লির অলিন্দে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া উচিত নয়'।