নয়াদিল্লি: নয়াদিল্লির পাকিস্তানি হাইকমিশনের কাছে পাকিস্তানের পঞ্জাব প্রদেশে ‘নিয়মমাফিক সংখ্যালঘু হিন্দুদের ঘরবাড়ি টার্গেট করে ভেঙে দেওয়া’র তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে ডিমার্শে দিল ভারত। ডিমার্শেতে পঞ্জাবের বাহাওয়ালপুরের চক ৫২/ডিবি ঠিকানায় সংখ্যালঘু হিন্দুদের ঘরবাড়ি ভাঙার নিন্দা করা হয়েছে।
বিষয়টি সম্পর্কে ওয়াকিবহাল এক ব্যক্তি বলেছেন, পাকিস্তানে জাতিগত, ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের লাগাতার নিপীড়নে ভারতের নাগরিক সমাজ, বিদ্বজনেরা গভীর উদ্বিগ্ন। বিশেষত, যে ঘটনায় সংখ্যালঘু হিন্দুরা জায়গাজমির মালিকানা, ঘরবাড়ির বৈধ নথিপত্র দেখানোর পরও, তা ভাঙার বিরুদ্ধে আইনি সুরক্ষা থাকা সত্ত্বেও স্থানীয় রাষ্ট্রীয় প্রশাসন তাঁদের টার্গেট করেছে, তার কঠোর নিন্দা করেছেন তাঁরা।
তিনি বলেছেন, আমরা পাকিস্তানি হাইকমিশনের কাছে উদ্বেগ জানিয়েছি যাতে দ্রুত সুরাহার জন্য পাকিস্তান সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের গোচরে বিষয়টি আনা হয়। পাকিস্তান সরকার যেন দায়দায়িত্ব পালন করার ক্ষেত্রে সংখ্যলঘু গোষ্ঠীগুলির নিরাপত্তা, সুরক্ষা, তাদের স্বাধীনতা, অধিকার রক্ষায় নজর দেয়।
পাকিস্তান ভারতে মুসলিমদের অবস্থা নিয়ে প্রায়ই উদ্বেগ জানায়, কাঠগড়ায় তোলে নয়াদিল্লিকে। সেই প্রেক্ষাপটেই পাকিস্তানের হিন্দুদের ব্যাপারে পাল্টা নয়াদিল্লির এই তত্পরতা। পাকিস্তানের অভিযোগের মুখে প্রায়ই ভারত উল্লেখ করে যে, ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান সৃষ্টির সময় সেখানকার জনসংখ্যার ২০ শতাংশের ওপর ছিল সংখ্যালঘুরা। কিন্তু ক্রমাগত তা কমতে কমতে এখন মাত্র ৩ শতাংশে এসে ঠেকেছে।
স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন হিউম্যান রাইটস কমিশন অব পাকিস্তান সম্প্রতি তথ্যানুসন্ধান চালিয়ে বাহাওয়ালপুরের স্থানীয় কর্তৃপক্ষ হিন্দুদের ঘরবাড়ি ভাঙচুর হওয়ার জন্য দায়ী বলে জানায়। এক বিবৃতিতে তারা বলেছে, অতীতে নানা সময় হুমকি, ভীতিপ্রদর্শনের পর এমনটা হওয়ার আশঙ্কায় হিন্দু সম্প্রদায় বাহাওয়ালপুর আদালতের বেঞ্চের এক সিনিয়র দায়রা বিচারপতির কাছে পিটিশন দিয়েছিল, যাতে এই জাতীয় কোনও পদক্ষেপে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। তা সত্ত্বেও ঘরবাড়ি ভেঙে দেওয়া হয়েছে। গত ২০ মে ঘরবাড়ি ভাঙা থেকে বিরত থাকার আদেশ জারি হওয়ার পরও ২৫টি বাড়ি ধুলোয় মিশিয়ে দেওয়া হয়, ১০টি অন্য বাড়ি আংশিক ভাঙা পড়ে। ফলে কাচ্চাবাচ্চা সমেত সেখানকার বাসিন্দারা বেঘর হয়েছে। গভীর উদ্বেগ নিয়ে কমিশন বলেছে, হিন্দু সম্প্রদায় এমনিতেই ধর্মীয় সংখ্যালঘু বলে কোণঠাসা, তার ওপর স্থানীয় জমি মাফিয়াদের স্বার্থরক্ষায় ধর্মীয় কারণে নিশানা করা হচ্ছে তাদের।