নয়াদিল্লি: ভারতে কোভিড-১৯ সংক্রমণ বাড়ছে বটে, তবে কমিউনিটি ট্রান্সমিশন বা গোষ্ঠী সংক্রমণ ঘটেনি বলে দাবি করল ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিকেল রিসার্চ বা আইসিএমআর। দেশের শীর্ষ মেডিকেল গবেষণা সংক্রান্ত প্রতিষ্ঠানের ডিরেক্টর জেনারেল প্রফেসর ডঃ বলরাম ভার্গব বৃহস্পতিবার সাংবাদিক বৈঠকে বলেন, দেশে সংক্রমণের হার ছোট জেলাগুলিতে এক শতাংশের কম, শহুরে এলাকায় এক শতাংশের কিছুটা বেশি। ভারত এত বড় একটা দেশ। সেই তুলনায় সংক্রমণ খুবই কম দেখেছি। ছোট জেলাগুলিতে এক শতাংশেরও নীচে, শহরে এক শতাংশের কিছুটা হয়তো বেশি, কনটেনমেন্ট এলাকাগুলিতে তার সামান্য ওপরে। ভারত গোষ্ঠী সংক্রমণের পর্যায়ে নেই। যদিও তিনি একইসঙ্গে
পরীক্ষা করা, সংক্রমিতের সংস্পর্শে আসা লোকজনকে খুঁজে বের করা, নজরদারি চালানো, কোয়ারান্টিন করার মতো কৌশল বহাল রাখতে ও কনটেনমেন্ট পদক্ষেপ চালিয়ে যেতে হবে, কেননা এতে এপর্যন্ত সাফল্য এসেছে বলে অভিমত জানিয়েছেন তিনি। এখন কোনওরকম ঢিলেমি দেওয়া ঠিক হবে না বলে মন্তব্য করেছেন ভার্গব।
দেশে কত সংখ্যায় করোনা পরীক্ষা করা হচ্ছে, সে সম্পর্কে তিনি বলেন, আমরা বর্তমানে প্রতিদিন ১.৫১ লক্ষ টেস্ট করছি, গতকালের হিসাব মতো। দিনে ২ লক্ষ টেস্ট করার ক্ষমতা আছে আমাদের। কয়েকদিন আগে ৫০ লক্ষ পরীক্ষার মাত্রা পেরিয়ে এসেছি আমরা। সব রাজ্য সরকারকে তিনি টেস্টিং বাড়াতে সরকারি ও বেসরকারি, দুধরনের ল্যাবকেই কাজে লাগানোর পরামর্শ দিয়েছেন।
কোনও অতিমারীর গোষ্ঠী সংক্রমণ বা স্টেজ থ্রি চিহ্নিত করা হয় যেসব ক্ষেত্রে সংক্রমণের কোনও উত্স খুঁজে পাওয়া যায় না।
নানা মহল থেকে দেশে, বিশেষত দিল্লি ও মুম্বইয়ে দিনদিন করোনাভাইরাস সংক্রমিত ও মৃত্যুর সংখ্যা বাড়তে থাকায় উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে এই বলে যে, সম্ভবত, দেশে গোষ্ঠী সংক্রমণ শুরু হয়ে গিয়েছে। গতকালই দিল্লির স্বাস্থ্যমন্ত্রী সত্য়েন্দর জৈন গোষ্ঠী সংক্রমণ হয়তো শুরু হয়ে গিয়েছে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন। যদিও সরকারি তরফে তা আগেও অস্বীকার করা হয়েছে। এ নিয়ে বিতর্কের আবহে আজ আইসিএমআরের ডিজি আরও বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) পর্যন্ত গোষ্ঠী সংক্রমণের কোনও সংজ্ঞা দেয়নি। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকও বলছে, দেশের বিরাট আয়তনের সাপেক্ষে প্রাণঘাতী ভাইরাসের উপস্থিতি খুবই কম। ভারত নিশ্চিত ভাবেই গোষ্ঠী সংক্রমণের স্তরে নেই। এদিন মন্ত্রকের যুগ্ম সচিব লব অগ্রবাল দেশে অ্যাক্টিভ করোনাভাইরাস সংক্রমণের সংখ্যার তুলনায় সুস্থ হয়ে ওঠা মানুষের সংখ্যা বেশি বলে জানান। বলেন, আমাদের সুস্থ হয়ে ওঠার হার ৪৯.২১ শতাংশ।
তাঁকে সন্দেহজনক করোনা রোগীদের হাসপাতালে বেড, বিশেষত আইসিইউ পরিষেবা না পাওয়ার অভিযোগ সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে অগ্রবাল আবেদন করেন, করোনা হয়েছে সন্দেহ হলে প্রথমে লোকে যেন স্টেট হেল্পলাইনে ফোন করে, তারা সুপারিশ করলে তারপর হাসপাতালে আসে। অনেক ক্ষেত্রেই একজন বিশেষ রোগীর হয়তো তার যা শারীরিক অবস্থা, তাতে তার আইসিইউতে ভর্তি হওয়ার দরকারই হবে না।