নয়াদিল্লি: দেশের মাটিতে আত্মঘাতী হামলার জন্য এবার ভারতকে কাঠগড়ায় তুলল পাকিস্তান। ওয়াজিরিস্তানে আত্মঘাতী হামলার জন্য সরাসরি ভারতের দিকে আঙুল তুলল তারা। যদিও ইসলামাবাদের তোলে সেই অভিযোগ খারিজ করে দিয়েছে দিল্লি। পাকিস্তানের দাবিকে অবজ্ঞাপূর্ণ সুরে প্রত্যাখ্যান করা হচ্ছে বলে জানানো হয়েছে। (Pakistan News)
শনিবার পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়ার উত্তরের ওয়াজিরিস্তানে ভয়াবহ আত্মঘাতী বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। আত্মঘাতী বিস্ফোরণটি ঘটানো হয় মীল আলি এলাকায়, সেনার কনভয়ে। আফগানিস্তান সীমান্তের কাছে ওই আত্মঘাতী বিস্ফোরণে প্রাণ হারান পাক সেনার ১৩ জন কর্মী। আহত হন সেনাকর্মী-সহ সাধারণ মানুষও। (India-Pakistan Conflict)
আফগানিস্তানের Fitna-al-Khawarji সংগঠন ওই আত্মঘাতী হামলার দায় স্বীকার করে। ওই সংগঠন আবার আফগানিস্তানের Hafiz Gul Bahadur-এর আত্মঘাতী হামলা শাখা। Hafiz Gul Bahadur আবার Tehrik-i-Taliban Pakistan-এর সঙ্গে সংযুক্ত। সাম্প্রতিক কালে ওয়াজিরিস্তানে এত বড় হামলা হয়নি। ফলে ওই এলাকার আইনশৃঙ্খলা নিয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
আর সেই আবহেই হামলার জন্য ভারতের দিকে আঙুল তোলে পাকিস্তান। পাকিস্তান সেনার তরফে বিবৃতি প্রকাশ করে হামলার তীব্র নিন্দা করা হয়। ওই হামলাকে ‘দুর্ভাগ্যজনক’ এবং ‘বর্বরোচিত’ বলে উল্লেখ করা হয় বিবৃতিতে। হামলায় নিরীহ নাগরিক, এক মহিলা ও দুই শিশুর প্রাণ গিয়েছে বলে জানানো হয়। আর তাতেই হামলায় ভারতযোগ রয়েছে বলে দাবি করে পাক সেনা। হামলাকারী জঙ্গিদের ভারত মদত জোগাচ্ছে বলে অভিযোগ করা হয়।
ওয়াজিরিস্তানে হামলার তীব্র নিন্দা করেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফও। ওই হামলাকে তিনি ‘কাপুরুষোচিত’ বলে উল্লেখ করেন। কিন্তু ভারতের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ তোলে পাক সেনা, তার সপক্ষে কোনও প্রমাণ দিতে পারেনি তারা। এর পরই ভারতের বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বিবৃতি দেন। বলা হয়, ‘পাকিস্তান সেনার বিবৃতি দেখেছি, যাতে ওয়াজিরিস্তান হামলার জন্য ভারতকে দোষারোপ করা হয়েছে। ওই বিবৃতিকে ততটাই অবজ্ঞাভরে প্রত্যাখান করছি আমরা, যতটা অবজ্ঞা সেটির প্রাপ্য’।
সাম্প্রতিক কালে পাকিস্তানে নতুন করে নাশকতার ঘটনা ঘটতে শুরু করেছে। কয়েকদিন আগেই দুই সেনাকর্মীর মৃত্যু হয় সেখানে। ১১ জঙ্গির মৃত্যু হয় সংঘর্ষে। বিশ্ব সন্ত্রাস সূচকে এই মুহূর্তে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে পাকিস্তান। গত এক বছরে সেখানে সন্ত্রাসী কাজকর্ম ৪৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। পরিসংখ্য়ান বলছে, গত এক বছরের বেশি সময় সেখানে নাশকতায় প্রাণ গিয়েছে ১০৮১ জনের। পাকিস্তান ইনস্টিটিউট ফর কনফ্লিক্ট অ্যান্ড সিকিওরিটি স্টাডিজের হিসেব বলছে, মে মাসে ৮৫টি নাশকতার ঘটনা ঘটেছে সেখানে। এপ্রিল মাসে হামলা গয় ৮১টি।