নয়াদিল্লি: আগামী দু'বছরের মধ্যেই দেশের মাটিতে বুলেট ট্রেন ছোটানোর সব ব্যবস্থা হয়ে যাবে। লোকসভা নির্বাচনের কয়েক মাস বাকি থাকতে, বুধবার কেন্দ্রের তরফে এই ঘোষণা করা হল। কেন্দ্র জানিয়েছে, আগামী দিনে দেশের রেল যোগাযোগ ব্যবস্থার আরও বিস্তার ঘটানো হবে। রেল পরিষেবাকে উন্নত করে তোলা হবে আরও। ট্রেনযাত্রাকে আরও নিরাপদ করে তুলতে দেশীয় পদ্ধতিতে তৈরি আরও প্রযুক্তি ট্রেনে বসানোর পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানানো হয়েছে। (Bullet Train India)
বুধবার দিল্লিতে এ নিয়ে সাংবাদিক বৈঠক করেন রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণো। তিনি জানান, গুজরাতের বিলিমোরা এবং সুরতের মধ্যে ৫০ কিলিমিটার রেল রুটে প্রথম বুলেট ট্রেন সেকশনটি গড়ে তোলা হবে। সেই কাজ সম্পন্ন হবে ২০২৬ সালের অগাস্ট মাসের মধ্যে। এর পাশাপাশি, ট্রেন দুর্ঘটনা রুখতে ট্রেনে দেশীয় কবচ প্রযুক্তি বসানোর কাজ আরও বাড়ানো হবে বলে জানানো হয়েছে। ট্রেনের ধাক্কায় হাতির মৃত্য়ু রুখতে দেশীয় পদ্ধতিতে তৈরি 'গজরাজ' প্রযুক্তির কথাও জানান অশ্বিনী। (Bullet Train Corridor)
এর আগে, বুলেট ট্রেন নিয়ে কথা হলতে গিয়ে, গত সপ্তাহে অশ্বিনী জানান, ১০০ কিলোমিটার রেলসেতু তৈরির কাজ ইতিমধ্যেই সম্পন্ন হয়েছে। রেলসেতুকে ধরে রাখার জন্য স্তম্ভ বসানো হয়। সেই কাজ ২৩০ কিলোমিটার পর্যন্ত সম্পন্ন হয়েছে বলে জানান। মুম্বই-আমদাবাদ বুলেট ট্রেন করিডরের জন্য, বিলিমোরা-সুরত রেল রুটও যার অন্তর্ভুক্ত, সেই কাজই অনেকটা এগিয়েছে বলে সপ্তাহ খানেক আগে মুখ খোলেন অশ্বিনী। তার পরই ২০২৬ সালের অগাস্ট মাসের মধ্যে দেশে বুলেট ট্রেন চালানোর মতো পরিকাঠামো তৈরি হয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
এদিন সাংবাদিক বৈঠকে অশ্বিনী জানান, দেশের বিভিন্ন প্রান্তকে রেলপথে সংযুক্ত করতে, আরও রেললাইন বসানো হবে। করোনার জেরে উদ্ভুত অতিমারি পরিস্থিতির আগে, দেশে এক্সপ্রেস ট্রেনের সংখ্যা ছিল ১ হাজার ৭৬৮। নতুন ট্রেন যুক্ত করায়, বর্তমানে তা বেড়ে ১ হাজার ১২৪ হয়েছে। শহরতলিতে ৫ হাজার ৬২৬ ট্রেনের পরিষেবা মিলত আগে, এখন তা বেড়ে ৫ হাজার ৭৭৪ হয়েছে এবং যাত্রীবাহী ট্রেনের সংখ্যাও বেড়ে ২ হাজার ৭৯২ থেকে বেড়ে হয়েছে ২ হাজার ৮৫৬। ২০২২-'২৩ সালে যেখানে যাত্রীসংখ্যা ছিল ৬৪০ কোটি, ২০২৩-'২৪ সালে তা বেড়ে হয়েছে ৭৫০ কোটি।
২০২১ সালের নভেম্বর মাসে মুম্বই-আমদাবাদ বুলেট ট্রেন করিডর নির্মাণের কাজ শুরু হয়। প্রথম ছ'মাসের মধ্যেই এক কিলোমিটার রেলসেতু তৈরি করা সম্ভব হয়। এ বছর এপ্রিল পর্যন্ত ৫০ কিলোমিটার রেলসেতুর নির্মাণ হয়। এর পাশাপাশি, ছ'টি নদীর উপর দিয়ে রেলসেতু তৈরির কাজ চলছে, যার মধ্যে রয়েছে ভালসাডের পার-ঔরঙ্গা, পূর্ণা, মিন্ধোলা, অম্বিকা এবং নবসারির বেঙ্গনিয়া। এর সবক'টি মুম্বই-আমদাবাদ বুলেট ট্রেন করিডরের অন্তর্গত। এই করিডর গড়তে খরচ হবে ১ লক্ষ কোটির বেশি। এর মধ্যে কেন্দ্র ১০ হাজার কোটি টাকা দেবে। গুজরাত-মহারাষ্ট্র সরকার ৫ হাজার টাকা করে দেবে। বাকি টাকা ন্যূনতম ০.১ শতাংশ সুদের জাপানের থেকে ঋণ নেওয়া হবে।