নয়াদিল্লি : উত্তরাখণ্ডের সিল্কিয়ারা সুড়ঙ্গ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ৪১ জন শ্রমিককে। এতদিন সুড়ঙ্গের মধ্যে থাকতে হয়েছে তাঁদের। যা এককথায় কঠিন। কিন্তু, এই পরিস্থিতিতেও কীভাবে নিজেদের উজ্জীবিত রাখলেন সুড়ঙ্গে আটকে পড়া শ্রমিকরা ? সেকথা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে জানালেন শ্রমিকরা। তাঁদের বক্তব্য, সকালে হাঁটাহাঁটি করে আর যোগ চর্চা করেই নিজেদের সতেজ রাখতে সক্ষম হয়েছেন তাঁরা।


এদিকে, শেষমেশ সুড়ঙ্গ থেকে বেরোতে পারায় তাঁরা প্রধানমন্ত্রী, উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামি ও উদ্ধারকারী দলকে তাদের চেষ্টার জন্য ধন্যবাদ জানিয়েছেন। সেই সময় উদ্ধারকারী এক শ্রমিক বলেন, 'আমরা কোনও চিন্তাই করিনি। কারণ, সরকার যখন বিদেশে থাকা ভারতীয়দের উদ্ধার করেছে, আমরা জানতাম আমরা তো দেশের মধ্যেই আছি।'


মঙ্গলবার রাতে উদ্ধার হওয়ার শ্রমিকদের সঙ্গে ফোনে কথোপকথনের সময় মোদি তাঁদের বলেন, "এতদিন বিপদে থাকার পর নিরাপদে বেরিয়ে আসার জন্য় আপনাদের অভিনন্দন। এটা আমার কাছে খুব খুশির খবর। ভাষায় প্রকাশ করতে পারব না। যদি খারাপ কিছু ঘটে যেত, বলে বোঝাতে পারব না সেটা কীরকম হতো। ঈশ্বরের আশীর্বাদে আপনারা সকলে নিরাপদে আছেন।"


 






PMO থেকে প্রকাশ করা সেই ভিডিওয় প্রধানমন্ত্রীকে উদ্ধার হওয়া শ্রমিকদের বলতে শোনা যাচ্ছে, '১৭ দিন কম সময় নয়। আপনারা সকলে প্রচুর সাহস ও উৎসাহ দেখিয়েছেন।'


৪০০ ঘণ্টার লড়াই শেষে গতকাল সুড়ঙ্গ থেকে ৪১ জন শ্রমিকই উদ্ধার করা হয়। মৃত্যুর সঙ্গে যুদ্ধে জীবনেরই জয়, মুক্তির আলো দেখেন ৪১ জন শ্রমিক।  বিপর্যয়ের ১৭ দিনের মাথায় উত্তরকাশীর সুড়ঙ্গ থেকে উদ্ধার করা হয় শ্রমিকদের। সুড়ঙ্গ থেকে প্রথম উদ্ধার করা হয় ২ শ্রমিকে। যাঁরা ঝাড়খণ্ডের বাসিন্দা বিজয় হোরো, গণপতি হোরো। এরপর ধীরে ধীরে উদ্ধার করা হয় বাকি শ্রমিকদের। ৪১ শ্রমিককে উদ্ধারের পর প্রাথমিক চিকিৎসা করাতে নিয়ে যাওয়া হয়। উদ্ধারকারী শ্রমিকদের সঙ্গে দেখা করেন মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামি।


উত্তরকাশীর সিল্কিয়ারা থেকে বারকোটের মধ্যে নির্মীয়মাণ সুড়ঙ্গে আটকে পড়েন বাংলার ৩ শ্রমিক-সহ ৪১ জন। তাঁদের মধ্যে ২ জনের বাড়ি হুগলির পুরশুড়ায়। এই দুই যুবকের মধ্যে একজন হলেন পুরশুড়ার হরিণাখালি গ্রামের বাসিন্দা সৌভিক পাখিরা। অপরজন নিমডাঙ্গির বাসিন্দা জয়দেব প্রামাণিক। অন্যদিকে, কোচবিহারের বলরামপুরের মানিক তালুকদারও আটকে পড়েন সুড়ঙ্গ বিপর্যয়ে। ১৭ দিনের মাথায় গতকাল খোলা আকাশ দেখতে পান তাঁরাও। বাড়িতে সে খবর পৌঁছতেই খুশির হাওয়া সেই সকল শ্রমিকের বাড়িতে। উদ্ধার হওয়া শ্রমিকরা সুস্থ আছেন বলে জানা গেছে।