নয়াদিল্লি: কাশ্মীরে জঙ্গিদের হাতে নিরীহ পর্যটকদের প্রাণ চলে গিয়েছে। সেই আবহে পাকিস্তানকে নিয়ে কড়া অবস্থান নিল ভারত। সিন্ধু জলচুক্তি বাতিল করা হল। অর্থাৎ পাকিস্তানকে আর জল দেবে না ভারত। পাকিস্তানি নাগরিকরা ভিসা পাবেন না ভারতের। বন্ধ করে দেওয়া হল আটারি-ওয়াঘা সীমান্ত। (India Pakistan Relations)

কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলায় একদিকে যেমন শোকের ছায়া, তেমনই ক্ষোভে ফুঁসছে গোটা দেশ। সেই আবহেই বুধবার রাতে পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্নর ঘোষণা করল ভারত। বিদেশ মন্ত্রকের তরফে এদিন একাধিক পদক্ষেপের ঘোষণা করা হয়। (Kashmir Terror Attacks) জানানো হয়েছে---

  • এই মুহূর্তে ভারতে রয়েছেন যে পাকিস্তানিরা, অবিলম্বে বেরিয়ে যেতে হবে তাঁদের। আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ভারত ছাড়তে হবে পাকিস্তানি নাগরিকদের।
  • আটারি-ওয়াঘা সীমান্ত বন্ধ করে দেওয়া হল। ভারত থেকে যাঁরা বৈধ নথিপত্র নিয়ে পাকিস্তান গিয়েছেন, তাঁদের দেশে ফিরতে হবে ১ মে-র মধ্যে।
  • কোনও পাকিস্তানি নাগরিক আর ভারতে আসতে পারবেন না। পাকিস্তানি নাগরিকরা পাবেন না ভারতের ভিসা। SAARC ভিসা নিয়ে আর ভারতে আসা যাবে না। যে সমস্ত পাকিস্তানি নাগরিককে SPES ভিসা দিয়েছিল ভারত, তা বাতিল বলে গণ্য হবে। যাঁরা ওই ভিসা নিয়ে ভারতে রয়েছেন, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ভারত ছেড়ে বেরিয়ে যেতে হবে।
  • পাকিস্তানের যত কূটনীতিক ভারতে রয়েছেন, অবিলম্বে ভারত ছেড়ে চলে যেতে হবে তাঁদের। সকলকে এক সপ্তাহ সময় দেওয়া হয়েছে ভারত ছেড়ে চলে যেতে। দিল্লিতে পাকিস্তানি হাই কমিশনে প্রতিরক্ষা, সেনা, নৌবাহিনী, বায়ুসেনার উপদেষ্টা রয়েছেন যাঁরা, তাঁদের ভারত ছেড়ে চলে যেতে হবে। ওই সব পদ বাতিল বলে গণ্য হবে।
  • পাকিস্তানের ইসলামাবাদে ভারতীয় হাইকমিশনে ভারতের প্রতিরক্ষা, সেনা, নৌবাহিনী, বায়ুসেনার উপদেষ্টা রয়েছেন যাঁরা, তাঁদের ফিরিয়ে নেবে ভারত। ওই সব পদ বাতিল করা হল।
  • পাঁচ সাপোর্ট স্টাফেদেরও ফিরিয়ে নিতে হবে দুই দেশের হাইকমিশন থেকেই। 
  • হাইকমিশনের মোট সদস্য সংখ্যা ৫৫ থেকে ৩০-এ কমিয়ে আনা হল। ১ মে থেকে নয়া নিয়ম কার্যকর।
  • পাকিস্তানের সঙ্গে ১৯৬০ সালের সিন্ধু জলচুক্তি বাতিল করল ভারত। অর্থাৎ আর জল পাবে না পাকিস্তান। সীমান্তের এপারে সন্ত্রাস নিয়ে পাকিস্তান কড়া পদক্ষেপ না করা পর্যন্ত এই সিদ্ধান্ত বহাল থাকবে।

বিদেশ মন্ত্রক জানিয়েছে,সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে 'জিরো টলারেন্স' নীতি নিয়ে চলবে ভারত। তাই পহেলগাঁওয়ের ঘটনায় কড়া পদক্ষেপ করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। মন্ত্রিসভার বৈঠকে নিরাপত্তা পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে দেখা হয়েছে। দেশের সব বাহিনীকে সতর্ক থাকতে হবে। এই হামলার সঙ্গে যারা যুক্ত এবং যারা হামলায় মদত জুগিয়েছে, তাদের কড়া শাস্তি দেওয়া হবে। যেভাবে তাহাবুর রানাকে প্রত্যর্পণ করা হয়েছে আমেরিকা থেকে, সেভাবেই পহেলগাঁওয়ের সন্ত্রাসীদের খুঁজে বের করে শাস্তি দেওয়া হবে।