নয়াদিল্লি: কাশ্মীরে জঙ্গি হামলার জেরে উত্তজনার পরিবেশ। সেই আবহেই সাগরে মাইন বিস্ফোরণ ঘটাল ভারত। অত্যাধুনিক সাবমেরিন ধ্বংস করতে এই মাইন তৈরি করা হয়। পাশাপাশি, শত্রুপক্ষের অত্যাধুনিক যুদ্ধজাহাজ, যা সহজে রেডারে ধরা পড়ে না, তা প্রতিহত করতেও এই জল-মাইন ব্য়বহার করা হয়। পহেলগাঁও হামলার জেরে পাকিস্তানের সঙ্গে সংঘাত যে আকার ধারণ করেছে, সেই আবহে সাগরে মাইন বিস্ফোরণ ঘটানো যছেষ্ট ইঙ্গিতবাহী বলে মনে করছে কূটনৈতিক মহল। (India-Pakistan Conflict)

ভারতীয় নৌবাহিনীর তরফে সাগরের নীচে অত্যাধুনিক Multi-Influence Ground Mine (MIGM) বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। পরীক্ষামূলক ভাবেই এই বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। এই জল-মাইন তৈরি হয়েছে ভারতের  বিশাখাপত্তনমের Naval Science and Technological Laboratory-তে। জল-মাইন প্রযুক্তি তৈরিতে নৌবাহিনীকে সহায়তা জুগিয়েছে Defence Research of Development Organisation (DRDO). (Underwater Mine)

সাগরে, জলের নীচে মাইন বিস্ফোরণের ভিডিও সকলের সঙ্গে ভাগ করে নিয়েছে DRDO এবং কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহের দফতর। ভিডিওয় দেখা গিয়েছে, নীলচে সবুজ জলের নীচ থেকে হঠাৎই ঘোলা কুণ্ডলী উপরের দিকে উঠে এল। জলের উপরে উঠে আসার পর ক্রমশ তা ছড়িয়ে পড়ে। জল-মাইনের সফল পরীক্ষাও একসঙ্গে জোট বেঁধে সম্পন্ন করল DRDO এবং ভারতীয় নৌবাহিনী। তাদের অভিনন্দন জানিয়েছেন রাজনাথ। তাঁর বক্তব্য, 'জলের নীচে ভারতীয় নৌবাহিনীর যুদ্ধক্ষমতা আরও বৃদ্ধি করল এই প্রযুক্তি'।

এই প্রযুক্তি উৎপাদনে যুক্ত ছিল Bharat Dynamics Limited. তারা জানিয়েছে, MIGM জল-মাইন একাধিক সেন্সর বসানো রয়েছে। জলযানের উপস্থিতি টের পাওয়ার জন্য বিশেষ প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে জল-মাইনে। নৌবাহিনীর রণকৌশলে জল-মাইনের ব্যবহার চলে আসছে বহু শতক ধরে। ব্রিটেন, আমেরিকা, জাপান এবং জার্মানির মতো দেশ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় সমুদ্রপথে জল-মাইন পেতে রাখত। পরিসংখ্যান বলছে, সেই সময় জলের নীচে প্রায় ৫ লক্ষ মাইন পাতা ছিল। 

ভারতের হাতেও জল-মাইন প্রযুক্তি রয়েছে। তবে যে সময় সেটি পরীক্ষা করে দেখা হল, তা অত্যন্ত ইঙ্গিতবাহী। কারণ পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার জেরে এই মুহূর্তে পাকিস্তানের সঙ্গে নতুন করে সংঘাত দেখা দিয়েছে। জল, স্থল, আকাশ, সর্বত্রই নজরদারি বাড়ানো হচ্ছে এই মুহূর্তে। পাশাপাশি, শক্তি প্রদর্শনে সামরিক সাজ-সরঞ্জামও ঝালিয়ে নেওয়া হচ্ছে। এর আগে, আরব সাগরে ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষাও করে ভারত। সমুদ্রে টহল দিচ্ছে নৌবাহিনীর জাহাজও। আকাশে চক্কর দিচ্ছে হেলিকপ্টার, নামানো হয়েছে সাবমেরিনও।