মন (নাগাল্যান্ড) : প্রতি সপ্তাহের মতোই পরিবারের সঙ্গে ছুটি কাটানোর জন্য ফিরছিলেন। কিন্তু, এভাবে মৃত্যু ঘনিয়ে আসবে তা তাঁরা ভাবেননি ! নিরাপত্তাবাহিনীর অতর্কিতে অভিযানে মৃত্যু ১৩ জনের। আহত ১১। নাগাল্যান্ডের মন জেলার ঘটনা। 


শনিবার সন্ধেয় কয়লা খনি থেকে পিকআপ ট্রাকে বাড়ি ফিরছিলেন কয়েকজন মজুর । তাঁদের জঙ্গি ভেবে ভুল করে প্যারা কম্যান্ডো। আচমকা হামলা চালায়। কোন্যাক(আদিবাসী) নেতৃত্ব জানিয়েছেন, শনিবার সন্ধ্যাতেই মারা যান ছয় জন। রবিবার সকালে মারা যান আরও সাত জন।


এদিকে অসম রাইফেলসের জওয়ানদের ওপরে পাল্টা হামলা চালানোর অভিযোগ উঠেছে গ্রামবাসীর বিরুদ্ধে। উত্তেজিত জনতা জওয়ানদের কয়েকটি গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। স্থানীয়দের অভিযোগ, জঙ্গি সন্দেহে কয়েকজন গ্রামবাসীকে দেখে গুলি চালায় অসম রাইফেলস।


ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে রাজ্যবাসীকে শান্ত থাকার আবেদন জানিয়েছেন নাগাল্যান্ডের মুখ্যমন্ত্রী নেফিউ রিও। ট্যুইটে এটিকে দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা বলে উল্লেখ করে নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন তিনি। ঘটনার তদন্তে উচ্চ পর্যায়ের তদন্তকারী দল গঠন করা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন নাগাল্যান্ডের মুখ্যমন্ত্রী। শোক প্রকাশ করে ট্যুইট করেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শা-ও।


ঘটনার পর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা আদিবাসী সম্প্রদায়ের এক নেতা বলেন, মোট ১৩ জন সাধারণ মানুষের মৃত্যু হয়েছে। আহত ১১। এর পাশাপাশি নিখোঁজ দুই জন। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হোক। যদি বিচার না মেলে, তাহলে মৃতদেহ নেবে না পরিবারগুলি। আমরা সব জাতীয় ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনের কাছে যাব।


এদিকে ঘটনার পর মন জেলা সদরে মৃতদেহগুলি আনার উদ্যোগ নেওয়া হয়। যদিও পরিস্থিতি ছিল উদ্বেগজনক। কোন্যাকের এক নেতা বলেন, নিহতদের গ্রাম থেকে ১৫ কিলোমিটার দূরে রয়েছে কয়লাখনি। প্রতি শনিবার তাঁরা বাড়ি ফেরেন। রবিবারটা পরিবারের সঙ্গে কাটান। সোমবার সকালে তাঁরা কাজে যোগ দেন। 


এদিকে ঘটনার প্রতিবাদে বাৎসরিক হর্নবিল উৎসব প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দ্য ইস্টার্ন নাগাল্যান্ড পিপলস অর্গানাইজেশন। উল্লেখ্য, রাজধানী কোহিমার কাছে কিসামা গ্রামে এই উৎসব চলছএ। এই ENPO ছটি আদিবাসী সম্প্রদায়কে প্রতিনিধিত্ব করে। এই এলাকায় রক্তপাতের বিরুদ্ধে এর আগেই এই সংগঠনের তরফে রেজ্যুলিউশন গ্রহণ করা হয়েছে। এক কোন্যাক নেতার প্রশ্ন, "যখন আমাদের লোকেদের খুন করা হচ্ছে তখন আমরা কী করে উৎসবে নাচতে পারি ? "