ABG Bank Fraud: সিবিআই ব্যাঙ্কিং ইতিহাসে সবচেয়ে বড় দুর্নীতির অভিযোগে এফআইআর দায়ের করেছে। এই জালিয়াতির পরিমাণ ২২ হাজার ৮৪২ কোটি টাকা বলে জানানো হয়েছে। সিবিআইয়ের এফআইআরে দুর্নীতির অভিযোগে গুজরাতের এবিজি শিপইয়ার্ড কোম্পানি ও তার সহযোগী কোম্পানিগুলিকে দায়ী করা হয়েছে। সিবিআই সংশ্লিষ্ট বিবিধ ফৌজদারি ধারায় কোম্পানি ও কোম্পানির বিভিন্ন শীর্ষ আধিকারিক ও অজ্ঞাত পরিচয় আধিকারিকদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে। 


এই জালিয়াতির অভিযোগ নীরব মোদির বহু আলোচিত কেলেঙ্কারির চেয়েও বেশি।  নীরব মোদির প্রতারণার পরিমাণ ছিল ১২ হাজার কোটি টাকা। এবার যে মামলা দায়ের হয়েছে, তাতে সিবিআই ছাড়াও অন্য তদন্তকারী সংস্থাগুলি ঝাঁপাতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। সিবিআই এই দুর্নীতির অভিযোগের ঘটনায় শনিবার মহারাষ্ট্র, গুজরাত সহ বেশ কয়েকটি রাজ্যে ১৩ টি জায়গায় তল্লাশি চালিয়েছে এবং কিছু গুরুত্বপূর্ণ নথি বাজেয়াপ্ত করেছে। এই দুর্নীতির ঘটনা বিধানসভা নির্বাচনের প্রচার ও সংসদের অধিবেশনেও উত্থাপিত হতে পারে। 


দুর্নীতির পর্দাফাঁস কীভাবে হল


সিবিআই সূত্রের খবর, এই মামলায় ব্যাঙ্ক সমূহর পক্ষ থেকে স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার মুম্বই শাখার ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার বালাজি সিংহ সামান্তা সিবিআইয়ের কাছে ২০২০-র ২৫ অগাস্ট একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। সিবিআইয়ের এফআইআর অনুসারে, গুজরাতে সুরাতে জাহাজ, সেই সংক্রান্ত সামগ্রী ও জাহাজ মেরামতি কোম্পানি এবিজি শিপইয়ার্ড ও এবিজি ইন্টারন্যাশনাল প্রাইভেট লিমিটেড সহ সংস্থার ডিরেক্টর কমলেশ আগরওয়ালের নাম রয়েছে এই মামলায়। এফআইআরে কোম্পানির কার্যনির্বাহী নির্দেশক সান্থানাম মুথুস্বামী ও অন্য ডিরেক্টর সুশীল কুমার আগরওয়াল, রবি বিমল নিবেদিতা তথা অন্যান্য অজ্ঞাত পরিচয় আধিকারিকদের নাম রয়েছে। 


সিবিআইয়ের এফআইআরে ফৌজদারি ষড়যন্ত্র, প্রতারণা দুর্নীত প্রতিরোধ আইন ও সরকারি সম্পত্তি প্রতারণার মাধ্যমে হাতানোর মতো গুরুতর ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। অভিযোগ প্রমাণ হলে এই মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড পর্যন্ত সাজা হতে পারে। সিবিআইয়ের এফআইআর অনুসারে, ২৮ টি ব্যাঙ্কের সঙ্গে প্রতারণা করা হয়েছে বলে অভিযোগ। স্টেটব্যাঙ্ক ছাড়াও আইসিআইসিআই, আইডিবিআই, ব্যাঙ্ক অফ বরোদা, ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া, পিএনবির মতো ব্যাঙ্কগুলির সঙ্গে প্রতারণা করা হয়েছে বলে অভিযোগ।


সিবিআই সূত্র অনুসারে, এবিজি শিপইয়ার্ড কোম্পানি সুরাতে রয়েছে এবং এর অফিস রয়েছে গুজরাতের দহেজেও। জানা গেছে, এই কোম্পানি তাদের তৈরি অনেক জাহাজ বিদেশেও বিক্রি করেছে। কোম্পানি বিভিন্ন প্রকার ফ্লোটিং ক্রেন ইন্টারসেপ্টর বোটও তৈরি করেছে। 


অভিযোগ অনুসারে, কোম্পানি ব্যাঙ্কগুলির থেকে ঋণ ছাড়াও বিভিন্ন প্রকার ক্রেডিডের সুবিধাও নিয়েছিল। ব্যাঙ্ক থেকে প্রাপ্ত অর্থ এই কোম্পানি তাদের অন্য সহযোগী কোম্পানিগুলির সাহায্যে বিদেশেও পাঠিয়েছ এবং সেখানে শেয়ার ইত্যাদি কিনেছে বলে অভিযোগ। এই মামলায় ২৩৬ কোটি টাকা সিঙ্গাপুরে পাঠানোর কথাও জানতে পারা গিয়েছে বলে খবর। এও জানা গেছে যে, যে কাজের জন্য ঋণ বা ক্রেডিট গ্যারান্টি নেওয়া হয়েছিল, সেই কাজে অর্থ লগ্নি না করে বিভিন্ন সম্পত্তি কেনা হয়েছে। সেইসঙ্গে নিয়ম না মেনে অর্থ এক কোম্পানি থেকে অন্য কোম্পানিতে পাঠানো হয়েছে বলেও অভিযোগ।


২০১২-২০১৭ র মধ্যে কেলেঙ্কারির অভিযোগ


এই মামলায় ব্যাঙ্ক ফরেনসিক অডিট রিপোর্টও করিয়েছিল। এতে স্পষ্টবাবে জানা গেছে, ব্যাঙ্ক সমূহর সঙ্গে প্রতারণা করা হয়েছে। এই দুর্নীতির সময় ২০১২-র জুলাই থেকে ২০১৭-র জুলাই। অর্থাৎ দুর্নীতির ঘটনা কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউপিএ ও বর্তমান নরেন্দ্র মোদি সরকার-উভয়ের আমলেই ঘটেছে।