নয়াদিল্লি: জালিয়াতি এবং কারচুপির অভিযোগ ঘিরে উত্তাল পরিস্থিতি। তার মধ্যেও বাইরে থেকে সহযোগিতা মিলেছে। তবে বাজেট পেশের দিনই ২০ হাজার কোটির ফলো অন পাবলিক অফার বা FPO তুলে নিল আদানি গোষ্ঠী। বর্তমানে বাজারের যা পরিস্থিতি, তাতে FPO নিয়ে এগনো নৈতিক ভাবে সঠিক নয় বলে জানিয়েছে তারা। আদানি গোষ্ঠী জানিয়েছে, বাজেটের দিন যদিও তাদের FPO সফল ভাবেই ক্লোজ করা হয়েছে, কিন্তু বাজারে যে অভূতপূর্ব পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে, তাতে শেয়ার বাজারে তাদেরও দর ওঠানামা করেছে। তার জন্য়ই এমন সিদ্ধান্ত। 


আদানি গোষ্ঠীর তরফে একচটি বিবৃতি প্রকাশ করে বলা হয়, 'পরিস্থিতি বিবেচনা করেই FPO নিয়ে না এগনোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বোর্ড। কারণ তা না করলে নৈতিক ভাবে ভুল অবস্থান নেওয়া হতো। কারণ আমাদের কাছ বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। তাঁদের ক্ষতি হোক, কোনও ভাবে চাইব না আমরা। তাতেই FPO নিয়ে না এগনোর সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে'।


বিনিয়োগকারীদের ধন্যবাদও জানানো হয় আদানি গোষ্ঠীর তরফে। বলা হয়, 'গত সপ্তাহে শেয়ার বাজারে টালমাটাল অবস্থা সত্ত্বেও, আপনারা ভরসা করেছেন আমাদের। আমাদের সংস্থায় আস্থা রেখেছেন, আমাদের ব্যবস্থাপনায় আশ্বস্ত হয়েছেন, তাতে আমরাও বল পেয়েছি।'


শেয়ার বাজারে লগ্নির ক্ষেত্রে ইনিশিয়াল পাবলিক অফার বা IPO এমনিতে খুবই জনপ্রিয়। এ ক্ষেত্রে, প্রথম বার বাজারে শেয়ার ছেড়ে স্টক এক্সচেঞ্জে নাম নথিভুক্ত করে কোনও সংস্থা। তার পর শুরু হয় লেনদেন। পরবর্তী কালে ওই সংস্থা চাইলে আবারও যে কোনও সময় বাজারে শেয়ার ছাড়তে পারে, তাকে বলা হয় FPO। অর্থাৎ এর মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের জন্য অতিরিক্ত কিছু শেয়ার ছেড়ে তহবিল সংগ্রহ করা হয়। একাধিক বার FPO আনতে পারে যে কোনও সংস্থা।


লগ্নি সংক্রান্ত বিষয়ে আমেরিকার গবেষণা সংস্থা হিন্ডেনবার্গ রিসার্চের (Hindenburg Research) একটি রিপোর্টে সম্প্রতি আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে কারচুপির অভিযোগ তোলা হয়। করফাঁকির স্বর্গরাজ্যে একাধিক ভুয়ো সংস্থার মাধ্যমে লেনদেন, বিপুল পরিমাণ ঋণ সংক্রান্ত তথ্য লুকনোর অভিযোগ ওঠে। বলা হয়, ভারতের অন্যতম বৃহৎ শিল্প গোষ্ঠী লাগাতার শেয়ার দরে কারচুপি করেছে, আর্থিক প্রতারণায় যুক্ত থেকেছে। তার পর থেকেই শেয়ার বাজারে লাগাতার ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন আদানি। সেরা ১০ ধনকুবেরের তালিকার বাইরে চলে গিয়েছেন তিনি। 


২৪ জানুয়ারি হিন্ডেনবার্গের ওই রিপোর্ট যে দিন প্রকাশিত হয়, ওই দিনই আদানি গোষ্ঠীর FPO বাজারে আসে। তার প্রভাব পড়েছে আদানি গোষ্ঠীর শেয়ার দরেও। আদানি গোষ্ঠী যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তাদের দাবি ভারতের উপর অযাচিত আঘাত হানা হচ্ছে। এর পাল্টা হিন্ডেনবার্গ জানিয়েছে, জাতীয়তাবাদের দোহাই দিয়ে জালিয়াতি আড়াল করছে আদানি গোষ্ঠী।