নয়া দিল্লি: রবিবারই আফগানিস্তান দখল করেছে তালিবান। আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনি পদ থেকে সরে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটির নিয়ন্ত্রণ চলে যায় তালিবানদের হাতে। এই আবহে রবিবার কাবুল থেকে দিল্লিতে ১২৯ যাত্রী নিয়ে নামে এয়ার ইন্ডিয়ার বিশেষ বিমান। এদিকে প্রাণে বেঁচে দিল্লিতে এসে আতঙ্কে, কান্নায় ভেঙে পড়লেন এক আফগান মহিলা।
রবিবার দিল্লির ইন্দিরা গান্ধী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নেমে সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে কাবুল থেকে আসা এক মহিলা কান্নায় ভেঙে পড়েন। তিনি বলেন, আমি এই পরিস্থিতি বিশ্বাস করতে পারছি না। দুনিয়ার সব দেশ আফগানিস্তান ছেড়ে চলে যাবে। তালিবান আমাদের বন্ধুদেরও বাঁচতে দেবে না।"
ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠে মহিলা বলেন, "আমরা স্বাধীনতা চাই। ওখানে পরিস্থিতি প্রচণ্ড বিপজ্জনক। চাদারি ছাড়া মেয়েদের বাড়ির বাইরে বেরোতে দেওয়া হচ্ছে না। মেয়েদের কোনও অধিকার আর থাকবে না।" দিল্লিতে আসা আরেকজন যাত্রী যিনি এয়ার ইন্ডিয়ার ফ্লাইট-এ কাবুল থেকে দিল্লি এসেছিলেন সেই সোনিনী সরকার এক সংবাদমাধ্যমকে বলেন যে তিনি কাবুল থেকে বের হওয়ার সময় কোনও হিংসার মুখোমুখি হননি। উল্লেখ্য, সোনিনী সরকার আফগানিস্তানে একটি অসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত।
আতঙ্কেই কাবুল ছেড়ে চলে যাচ্ছেন একাধিক মানুষ। ভারত সরকার জরুরি বিমান পাঠিয়ে তাঁদের দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য ভারতীয় বিমান বাহিনীর C-17 গ্লোবমাস্টার সামরিক পরিবহন বিমানকে ব্যবহার করছে। সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, আফগানিস্তানের উন্নয়নের ওপর নজর রাখছে ভারত। কাবুলে অবস্থিত ভারতের দূতাবাস থেকে ভারতীয় নাগরিকদের পাশাপাশি তার কর্মীদের সরিয়ে নেওয়ার সহ সব ধরনের ব্যবস্থা প্রস্তুত করছে।
আফগানিস্তানের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে শুরু থেকে উদ্বেগ প্রকাশ করছে আমেরিকাও। জো বাইডেনের দেশ অবিলম্বে তাঁদের নাগরিক-কূটনীতিকদের সে দেশ থেকে ফিরিয়ে আনছে। নষ্ট করা হয়েছে গুরুত্বপূর্ণ নথি। বন্ধ করা হয়েছে দূতাবাসও।
পাশাপাশি আফগান নাগরিকদের আশ্রয় দানের সিদ্ধান্ত নিল ভারত, আমেরিকা, কানাডা-সহ একাধিক দেশ। নয়াদিল্লি সূত্রের খবর, বিপদের কারণে ভারতে বসবাস করার জন্য দীর্ঘমেয়াদী ভিসা পাবেন এই নাগরিকরা। যদিও সরকারিভাবে এখনও কিছু জানান হয়নি। আফগানদের ইতিমধ্যেই ভিসা দেওয়া শুরু করেছে বাইডেন প্রশাসন। এর মধ্যে রয়েছেন লেখক, সমাজসেবী ও মানবাধিকার কর্মীরা।