আমদাবাদ: নদীতে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা। এবং তার আগে ভিডিও রেকর্ডিং করে নিজের শেষ বার্তা দেওয়া। এমনই চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটেছে গুজরাতে! সবরমতী নদীতে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করলেন এক তরুণী। আর সেই ঘটনার আগে ভিডিও করে গেলেন তিনি। এবং সেই ভিডিও মুহূর্তে ভাইরাল হয়ে গেল।
আয়েশা আরিফ খান নামের ওই মহিলা সবরমতী নদীতে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহননের পথ বেছে নিয়েছেন। নদীতে ঝাঁপ দেওয়ার আগে একটি ভিডিও করেন আয়েশা। সেখানে তিনি বলেন, কারও চাপে বা প্ররোচনায় নয়, নিজের ইচ্ছেতেই তিনি নিজেকে শেষ করার পথ বেছে নিয়েছেন।
মোবাইলে রেকর্ড করা ভিডিওতে আয়েশা তাঁর বাবার উদ্দেশে বার্তা দিয়েছেন। আয়েশা বলেছেন, ‘আমি খুব খুশি আর শান্তিতে মরতে চাই। আমি লড়াই করতে চাই না। আমি আরিফকে ভালবাসি।’
আত্মহত্যার আগে স্বামী আরিফকে ওই তরুণী ফোন করেছিলেন। যদিও আরিফের বিরুদ্ধে স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে মামলা রুজু করেছে পুলিশ। দমকলের উদ্ধারকর্মীরা ওই মহিলার দেহ উদ্ধার করে তা পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছেন। গোটা ঘটনার নেপথ্যে কী কারণ, তদন্ত করে দেখছে পুলিশ।
জানা গিয়েছে, রাজস্থানের বাসিন্দা আরিফ খানের সঙ্গে ২০১৮ সালে বিয়ে হয়েছিল আয়েশার। বিয়ের পর থেকেই আরিফ এবং তার বাড়ির লোকেরা পণের জন্য আয়েশার ওপর অত্যাচার করত বলে অভিযোগ। ভাতভা থানায় স্বামী, শ্বশুর ও শাশুড়ির বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগও দায়ের করেছিলেন আয়েশা। শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা চলেছে।
ওই ভিডিওতে আয়েশা বলেছেন, ‘বাবা, আর কতদিন আমরা আপনজনদের সঙ্গে লড়াই করব? আয়েশাকে আর লড়াই করতে বোলো না কারণ আয়েশা আর যুদ্ধ করতে চায় না। আরিফ যদি স্বাধীনতা চায়, তাহলে বলি ও মুক্ত। আসো বাঁচি, এটাই সুযোগ। আমি খুশি। ঈশ্বরের সঙ্গে দেখা হলে আমি জানতে চাইব কী ভুল করেছিলাম আমি? দারুণ বাবা-মা, বন্ধুদের পেয়েছিলাম। তবু ভাগ্যে কিছু একটার অভাব রয়ে গেল। আমার আর কিছু বলার নেই। মেনে নিচ্ছি যে ঈশ্বর আমাকে স্বল্প আয়ু দিয়েছেন।’
তাঁর শেষ কথা, ‘এই নদীটা ভীষণ সুন্দর। আশা করছি এটা আমাকে গ্রহণ করবে। আমি হাওয়ার মতো, আমি বয়ে যেতে চাই, আমি খুশি, আমার জন্য প্রার্থনা করুন। জানি না স্বর্গে যেতে পারব কি না।’