গুয়াহাটি: অনুপ্রবেশ রুখতে বাংলার তৃণমূল (TMC) সরকার কোনও সহযোগিতা করছে না। মঙ্গলবার অসমের বিজেপি সরকারের বর্ষপূর্তির অনুষ্ঠানে এই দাবি করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ (Amit Shah)। অন্যদিকে, অনুপ্রবেশ (Infiltration) রুখতে অসমের (Assam)বিজেপি সরকারের প্রশংসা করেন তিনি। এর পাশাপাশি, অনুপ্রবেশ রুখতে বাংলায় কোনও সমর্থন পাওয়া যায় না বলেও দাবি করেন তিনি।


অসম থেকে বাংলাকে নিশানা শাহের


সম্প্রতি বাংলায় দু'দিনের সফরে এসেও অনুপ্রবেশ নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারকে কাঠগড়ায় তুলতে দেখা যায় শাহকে। রাজ্যে বিজেপি নেতাদের মুখে যখন কথা কথায়৩৫৫ কিংবা ৩৫৬ ধারা জারির কথা শোনা যাচ্ছে, সেই সময় হিঙ্গলগঞ্জে বিএসএফ-এর অনুষ্ঠানে ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য করেন শাহ। বলেন, "অনুপ্রবেশ এবং চোরাচালান স্থানীয় প্রশাসনের সাহায্য ছাড়া রোখা মুশকিল। সেই সাহায্যও খুব তাড়াতাড়ি পাওয়া যাবে এমন রাজনৈতিক পরিস্থিতি দ্রুত এখানে তৈরি হবে। জনতার এমন চাপ তৈরি হবে যে, সাহায্য করতেই হবে।"


এর পাল্টা শাহকে কড়া জবাব দেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, "অমিত শাহ আগুন নিয়ে খেলবেন না। বিএসএফকে রাজ্যের এক্তিয়ারের মধ্যে অনুপ্রবেশ করতে বলবেন না। প্ররোচনা দেওয়া বন্ধ করুন। আপনি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আপনার কাজ গরু পাচার, কয়লা পাচার বন্ধ করা। ইডি, সিবিআই, আইটিকে বাড়িতে বসে কাজে লাগানোর বাইরেও কোনও কাজ করুন।"


আরও পড়ুন: Babul Supriyo: অবশেষে কাটল জট, ডেপুটি স্পিকারের পৌরহিত্যে বুধবার শপথ বাবুলের


তবে শাহের মন্তব্য রাজনৈতিক মহলে স্বাভাবিক ভাবেই কিছু প্রশ্ন উস্কে দেয়। রাজনৈতিক পরিস্থিতি তৈরি হবে বলতে কী বোঝাতে চাইলেন শাহ, তা জানতে কৌতুহলী অনেকেই। কারণ এর আগে বিএসএফ-এর এক্তিয়ার বাড়িয়ে রাজ্যের সঙ্গে সরাসরি সংঘাতে গিয়েছিল কেন্দ্র। গত বছরই রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন হয়েছে। তাতে ২০০ আসনের টার্গেট নিয়ে নামলেও দুই অঙ্ক পেরোতে পারেনি বিজেপি। বরং আগের চেয়ে ক্ষমতা বাড়িয়ে, ২০০-র বেশি আসনে জয়ী হয়েছে তৃণমূল। সেই প্রেক্ষাপটে অমিত শাহর মন্তব্যকে যদিও স্রেফ হাততালি কুড়োনোর চেষ্টা হিসেবেই দাবি করছে তৃণমূল। 


বাংলায় এসেও মমতা সরকারকে নিশানা করেন সম্প্রতি


অনুপ্রবেশ নিয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন কার্যকর করার কথাও সম্প্রতি জানিয়ে যান শাহ। করোনা পরিস্থিতি কাটলেই কাজ শুরু করবেন বলে জানান। শাহকে বলতে শোনা যায়, "সিএএ চালু করা হবে না বলে গুজব রটাচ্ছে তৃণমূল। আজ স্পষ্ট বলে যাচ্ছি আমি, করোনার ঢেউ থিতিয়ে এলেই সিএএ কার্যকর করতে শুরু করবে সরকার। মমতাদি আপনি কি চান অনুপ্রবেশ চলুক? শরণার্থীরা নাগরিকত্ব না পান? কান খুলে শুনে নিন তৃণমূলীরা, সিএএ বাস্তবিক ছিল, আছে এবং আগামী দিনেও থাকবে।" যাঁদের নাগরিক বলে মানছে কেন্দ্র, তাঁরা নাগরিক না হলে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচন করলেন কী ভাবে, এমন পাল্টা প্রশ্ন তোলেন মমতা।