নয়াদিল্লি: রাহুল গান্ধীই (Rahul Gandhi) প্রথম নন, এর আগেও বিভিন্ন কারণে একাধিক সাংসদের পদ খারিজ হয়েছে। এই তালিকায় আছেন খোদ ইন্দিরা গান্ধীও (Indira Gandhi)। এছাড়াও লালুপ্রসাদ যাদব, জয়ললিতা, আজম খানের মতো রাজনৈতিক হেভিওয়েটরা রয়েছেন এই তালিকায় (MP Disqualification)।


কংগ্রেস নেতা রাহুলের লোকসভার সাংসদ পদ খারিজ হয়েছে


মোদি পদবি নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্যের দায়ে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পরে কংগ্রেস নেতা রাহুলের লোকসভার সাংসদ পদ খারিজ হয়েছে। রাহুল হলেন গান্ধী পরিবারের দ্বিতীয় সদস্য়, যাঁর সাংসদ পদ এ ভাবে খারিজ হল। আজ থেকে ৪৮ বছর আগে, রাহুলের ঠাকুমা, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীকেও আদালতের রায়ে হারাতে হয়েছিল সাংসদ পদ।

তবে ইন্দিরার ক্ষেত্রে প্রেক্ষাপট ছিল ভিন্ন। ১৯৭১ সালের লোকসভা নির্বাচনে, উত্তরপ্রদেশের রায়বরেলি আসনে সংযুক্ত সোশালিস্ট পার্টির প্রার্থী রাজ নারায়ণকে লক্ষাধিক ভোটে হারিয়ে দেন ইন্দিরা। ইন্দিরার বিরুদ্ধে সরকারি অফিসারদের ব্যবহার করে নির্বাচনী বিধিভঙ্গের অভিযোগে আদালতে যান রাজ নারায়ণ।

তাতে ১৯৭৫ সালের ১২ জুন নির্বাচনী বিধিভঙ্গের দায়ে ইন্দিরাকে দোষী সাব্যস্ত করেন এলাহাবাদ হাইকোর্টের তৎকালীন বিচারক জগমোহনলাল সিন্হা। তিনি রায় দেন, ছ'বছরের জন্য নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি পদে তিনি থাকতে পারবেন না। 


আরও পড়ুন: Rahul Gandhi: 'ভারতের জন্য লড়ছি, যে কোনও দাম দিতে প্রস্তুত', ট্যুইট রাহুলের

ইন্দিরা পর্বের পর, ২০১৩ সালে কেন্দ্রীয় সরকার বনাম লিলি টমাস মামলায়, সুপ্রিম কোর্ট ঐতিহাসিক রায় দেয় যে, সাংসদ বা বিধায়ককে, কোনও আদালত যদি দু'বছর বা তার বেশি কারাদণ্ড দেয়, সঙ্গে সঙ্গে তাঁদের জন প্রতিনিধির পদ খারিজ হয়ে যাবে। সেই আইন অনুসারে, প্রথম রাজ্যসভার সাংসদ পদ খারিজ হয় কংগ্রেসের রশিদ মাসুদের। এমবিবিএস-এর আসন কেলেঙ্কারি মামলায় কারাদণ্ডের সাজা হয় তাঁর।

২০১৩ সালেই পশুখাদ্য কেলেঙ্কারি মামলায় দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পরে, রাষ্ট্রীয় জনতা দলের প্রধান লালুপ্রসাদ যাদবের সাংসদ পদ খারিজ হয়।
একই মামলায় সাজাপ্রাপ্ত বিহারের জাহানাবাদের সংযুক্ত জনতা দলের সাংসদ জগদীশ শর্মাও পদ হারান। ২০১৪ সালে আয়ের সঙ্গে সঙ্গতিহীন সম্পত্তি মামলায় তামিলনাড়ুর তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী জয়ললিতাকে দোষী সাব্যস্ত করে  চার বছরের কারাদণ্ড ও ১০০ কোটি টাকার জরিমানা করে ব্যাঙ্গালোরের বিশেষ আদালত। ফলে জয়ললিতা ১০ বছরের জন্য ভোটে লড়ার অধিকার হারান।

২০২২-এর অক্টোবরে ঘৃণা ভাষণের দায়ে সমাজবাদী পার্টির নেতা আজম খানকে দোষী সাব্যস্ত করে কারাদণ্ড দেয় উত্তরপ্রদেশের রামপুর আদালত।
এর পরই উত্তরপ্রদেশ বিধানসভার সদস্যপদ হারান আজম খান। ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে ধর্ষণ মামলায় দোষী সাব্যস্ত হন উন্নাওয়ের বাঙ্গারমাউয়ের বিজেপি বিধায়ক কুলদীপ সেঙ্গার। ফলে উত্তরপ্রদেশ বিধানসভার সদস্য পদ খারিজ হয় কুখ্যাত এই নেতার।


উচ্চ আদালতে যাওয়ার সুযোগ রয়েছে রাহুলের

চলতি বছরের ১৩ জানুয়ারি খুনের চেষ্টার দায়ে আদালতে দোষী সাব্যস্ত হন লাক্ষাদ্বীপের ন্যাশনালিস্ট কংগ্রেস পার্টির সাংসদ মহম্মদ ফয়জল। ফলে লোকসভার সাংসদ পদ খারিজ হয়ে যায় তাঁর। এবার সাংসদ পদ খারিজ হল রাহুলের। তবে উচ্চ আদালতে যাওয়ার সুযোগ রয়েছে রাহুলের। সেখানে নিম্ন আদালতের সিদ্ধান্ত স্থগিত হলে অথবা খারিজ হলে, সাংসদ পদ ফিরে পেতে পারেন তিনি।।