গুয়াহাটি: অভিযোগের সত্যতা যাচাই না করেই গ্রেফতারি। এক মামলায় জামিন পাওয়া মাত্র অন্য মামলায় গ্রেফতারি ফের। গুজরাতের নির্দল বিধায়ক জিগনেশ মেবানিকে (Jignesh Mevani) নিয়ে ঘটে চলা টানাপোড়েনে এ বার অসম পুলিশকে তীব্র ভর্ৎসনা করল আদালত। আদালতের মতে, এ ভাবে চললে পুলিশি শাসন কায়েম হতে সময় লাগবে না (Assam Police)।


বরপেটা আদালতে শুক্রবারই জামিন পেয়েছেন জিগনেশ। পুলিশি আগ্রাসন নিয়ে আলাদা করে পিটিশন দায়ের করেছিলেন তিনি। বিষয়টি নিয়ে গুয়াহাটি আদালতকে বিষয়টিতে হস্তক্ষেপ করার আর্জি জানায় বরপেটা আদালত। তাতেই অসম পুলিশের ভূমিকার তীব্র সমালোচনা করা হয়।


জিগনেশকে হেনস্থা করতে তাঁর বিরুদ্ধে ‘বানানো মামলা’ দায়ের করা হয় বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছে আদালত। আর তা নিয়েই অসম পুলিশকে তীব্র ভর্ৎসনা করা হয়। বিচারক অপরেশ চক্রবর্তী বলেন, “কষ্ট করে অর্জিত গণতন্ত্রকে পুলিশি শাসনে রূপান্তর অকল্পনীয়। মামলা দায়ের হলেই তাকে দ্রুব সত্য বলে ধরে নেওয়া হলে, দেশের আইনশাস্ত্র তাহলে নতুন করে লিখতে হয়!”


প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির (Narendra Modi) উদ্দেশে টুইট করায় গুজরাতে গিয়ে জিগনেশকে কার্যত তুলে নিয়ে আসে অসম পুলিশ। তিন দিন হেফাজতে থাকার পর জামিন মঞ্জুর হলে, অন্য মামলায় ফের তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। যুক্তি দেওয়া হয় যে, গুজরাত থেকে অসমে আসার সময় এক মহিলা পুলিশকর্মীর সঙ্গে অভব্য আচরণ করেছেন জিগনেশ। তাঁর শ্লীলতাহানি করেছেন, অশালীন আচরণ করেছেন। ওই মহিলা পুলিশকর্মীর অভিযোগের ভিত্তিতেই পুনরায় তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে।


আরও পড়ুন: TMC-BJP Conflict: কেন্দ্রের কাছে বকেয়া ৯৭ হাজার কোটি নিয়ে তরজা, 'কল্পনাশক্তি' নিয়ে মমতাকে কটাক্ষ বিজেপি-র


কিন্তু ওই দ্বিতীয় মামলাটির সত্যতা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন বিচারক। এফআইআর এবং ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে দেওয়া ওই মহিলবার বয়ানে পার্থক্য রয়েছে বলে জানান তিনি। জিগনেশকে আরও বেশিদিন আটক করে রেখে, আইন প্রক্রিয়াকে পিছিয়ে দেওয়ার উদ্দেশেই সাজানো মামলা দায়ের করা হয় বলে অভিযোগ করেন। অসম পুলিশের উর্দিতে ক্যামেরা বসানোর পক্ষেও সওয়াল করেন বিচারক, যাতে আগামী দিনে কাউকে গ্রেফতারির সময় সবকিছু রেকর্ড হয়ে থাকে।


দায়রা আদালতের বিচারক আরও বলেন, “এমন মিথ্যা মামলা রুখতে হলে, পুলিশের দাবি যাচাই করতে হলে পুলিশের উর্দিতে বটেই পুলিশ ভ্যানেও সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো উচিত। নইলে অসমে পুলিশি শাসন কায়েম হবে, সমাজের পক্ষে যা মোটেও সুখকর হবে না।” জামিন পেয়ে জিগনেশ অভিযোগ করেন যে, ইচ্ছাকৃত ভাবে তাঁর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়। গুজরাত বিধানসভা নির্বাচনের আগে প্রধানমন্ত্রীর দফতরের নির্দেশেই তাঁকে ফাঁসানো হয় বলে দাবি করেন তিনি।