ভোপাল: বুধবার দুপুরের পরেই ভোপালের গোবিন্দপুরা শিল্পাঞ্চলের একটি কারখানায় ক্লোরিন গ্যাস লিকের খবর প্রকাশ্যে আসে। আর এই খবর পেতেই আতঙ্কিত হয়ে পড়ে এলাকাবাসী। গতকাল বুধবার বিকেল সাড়ে তিনটে নাগাদ গোবিন্দপুরা এলাকার হিন্দ ফার্মা ফ্যাক্টরিতে এই গ্যাস লিকের ঘটনা (Bhopal Gas Leak) ঘটেছে বলে জানা গিয়েছে। আর এই ঘটনার পরে সঙ্গে সঙ্গে এলাকার পুলিশ তৎপর হয়ে ওঠে, ফায়ার ব্রিগেড টিম অবস্থা নিয়ন্ত্রণে আনার (Chlorine Gas Leak) কাজ শুরু করে দেয়। এমনকী সংশ্লিষ্ট সমস্ত প্রশাসনিক বিভাগ কাজে নেমে পড়ে।

রিপোর্ট অনুসারে বিষাক্ত গ্যাস বাতাসে ছড়িয়ে পড়ার কারণে আশেপাশের এলাকাবাসীদের চোখে জল আসতে থাকে, চোখ জ্বালা করতে শুরু করে এবং শ্বাসকষ্ট ও কাশির মত লক্ষণ দেখা যায়। ফলে সাময়িকভাবে পরিস্থিতি ভয়াবহ হয়ে উঠেছিল সেই অঞ্চলে। তবে উদ্ধারকারী দল কস্টিক সোডা ব্যবহার করে গ্যাস নিষ্ক্রিয় করার পরে এক ঘন্টার মধ্যেই ফের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। সাব-ডিভিশনাল ম্যাজিস্ট্রেট রবীশ কুমার শ্রীবাস্তবের মতে, ‘সময়ের খুব একটা বড় গুরুত্ব ছিল, আর খুব কম সময়ের মধ্যেই আমরা কোনও হতাহত ছাড়াই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসতে পেরেছি।’ তিনি আশ্বস্ত করেছেন যে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের চিকিৎসা সেবা দেওয়া হচ্ছে, দীর্ঘমেয়াদী কোনও সমস্যা যাতে না হয় তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। গোবিন্দপুরা শিল্পাঞ্চলে অনেকগুলি উৎপাদন ইউনিট রয়েছে, যেগুলি এই গ্যাস লিকের খবর পাওয়া মাত্রই সতর্কতা হিসেবে খালি করে দেওয়া হয়েছিল দ্রুত। এনডিআরএফ ও এসডিআরএফ দল মোতায়েন করা হয়েছিল এলাকায়।

ভোপাল গ্যাস দুর্ঘটনার ছায়া

১৯৮৪ সালে এই ভোপালেই ঘটেছিল ভারতের ইতিহাসের সবথেকে ভয়ঙ্কর এক দুর্ঘটনা- ভোপাল গ্যাস ট্রাজেডি। বিশ্বের মধ্যে সবথেকে ভয়াবহ শিল্প কারখানার দুর্ঘটনাগুলির মধ্যে একটি। ১৯৮৪ সালের ২-৩ ডিসেম্বর রাতে ইউনিয়ন কার্বাইড ইন্ডিয়া লিমিটেডের কীটনাশক কারখানায় বিষাক্ত গ্যাস লিক হওয়ার কারণে হাজার হাজার মানুষের প্রাণ কেড়ে নিয়েছিল। আরও অনেক মানুষকে দীর্ঘমেয়াদি অক্ষমতার অন্ধকূপে ঠেলে দিয়েছিল এই গ্যাস দুর্ঘটনা। এর ৪০ বছর পরে ২০২৫ সালে জানুয়ারি মাসে ইউনিয়ন কার্বাইড ইন্ডিয়া লিমিটেডের চত্বরে পড়ে থাকা বিষাক্ত বর্জ্য ইন্দোর থেকে ৩০ কিমি দূরে পীতমপুর ডাম্পিং সাইটে স্থানান্তরিত করা হয়। ১২টি কন্টেনার ট্রাকে করে প্রায় ৩৩৭ মেট্রিক টন রাসায়নিক বর্জ্য পীতমপুরে নিয়ে যাওয়া হয়।