পটনা : বিজেপি-সঙ্গ ছেড়ে ইস্তফা দিলেন বিহারের (Bihar) মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার (Nitish Kumar)। "বিজেপির সঙ্গে কাজ করা মুশকিল হয়ে পড়ছিল।" বিজেপি-সঙ্গ ছাড়ার পরেই সুর চড়ালেন নীতীশ। ইস্তফা দিয়েই রাবড়ী দেবীর বাসভবনে গেলেন নীতীশ কুমার। কংগ্রেসের সমর্থনে বিহারের মসনদে ফের লালু-নীতীশ জুটি ? এমনই জল্পনা শুরু হয়েছে বিহারের রাজনীতিতে।


এর আগে ২০১৫-য় বিজেপির সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেছিলেন নীতীশ। এর পার হাত ধরেন রাষ্ট্রীয় জনতা দল ও কংগ্রেসের। জেডিইউ-আরজেডি ও কংগ্রেসের 'মহাগাঁটবন্ধন' ২০১৫-র বিধানসভা নির্বাচনের জয়লাভ করে। মুখ্যমন্ত্রী হন নীতীশ কুমার এবং তাঁর ডেপুটি হন তেজস্বী যাদব। যদিও সেই জোট টেকেনি। ২০১৭-য় ফের জোট বাঁধে বিজেপি-জেডিইউ। ৫ বছর পর ফের ভাঙল জোট। এই পরিস্থিতিতে আজ পাটনায় নিজের বাসভবনে দলীয় সাংসদ, বিধায়কদের নিয়ে বৈঠক করেন নীতীশ। বিরোধীদল আরজেডি-র ডাকে রাবড়ি দেবীর বাসভবনে বৈঠক বসেন কংগ্রেস ও বাম নেতারা। বিকেলে পাটনায় বৈঠকে বসছে বিজেপির কোর কমিটি।


আরও পড়ুন ; জেডিইউ-বিজেপি জোটে ভাঙন, গেরুয়া শিবিরের বিরুদ্ধে ফের একজোট নীতীশ-তেজস্বী 


এদিকে সূত্রের খবর, এই পরিস্থিতিতে নীতীশ কুমার তেজস্বী যাদবকে বলেছেন, ২০১৭ সালে যা ঘটেছিল তা ভুলে যান। নতুন করে শুরু করা যাক।


বিহার বিজেপির প্রধান সঞ্জয় জয়সওয়াল অবশ্য বলছেন, এনডিএ-র ব্যানারে আমরা ২০২০ সালে একসঙ্গে লড়াই করেছিলাম। জনাদেশ ছিল জেডিইউ ও বিজেপির দিকে। আমরা বেশি আসনে জিতেছিলাম। তা সত্ত্বেও, নীতীশ কুমারকে মুখ্যমন্ত্রী করা হয়েছিল। কিন্তু, আজ যা ঘটল তা বিহারের মানুষ ও বিজেপির সঙ্গে প্রতারণা। এই পরিস্থিতিতে নীতীশ কুমারকে নিয়ে একাধিক প্রশ্ন উঠছে। 


একনজরে বিহারের রাজনীতিতে নীতীশ-


রাজনৈতিক মহল বলছে, নীতীশ কুমার এমন একজন নেতা যাঁর রাজনীতিতে স্থায়ী কোনও বন্ধু বা শত্রু নেই। অতীতে ক্ষমতার জন্য নাটকীয়ভাবে শরিক বদল করেছেন। বিজেপির সঙ্গে মিলে বিহারে শাসন করাকালীনই তিনি এনডিএ-র সঙ্গে ছেড়েছিলেন। আরজেডি-র সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধেন। পরে আবার আরজেডি-কে ছেড়ে বিজেপি নেতৃত্বাধীন জোটে যোগ দেন। তাদের আরও বক্তব্য, সেই সময় বিজেপি-র সঙ্গে ছেড়ে এবং আরজেডি-র সঙ্গে জোট বেঁধে বিহারে নিজের অস্তিত্ব টিকিয়ে রেখেছিলেন নীতীশ। জেডিইউ 'জুনিয়র পার্টনার' হওয়া সত্ত্বেও নীতীশ কুমারকে মুখ্যমন্ত্রী করেছিল বিজেপি। তবে, ওয়াকিবহাল মহলের বক্তব্য, ঘন ঘন ইউ-টার্নের জন্য জনপ্রিয়তা কমেছে নীতীশের। ২০১৩ সালে বিহারে যে দাপট ছিল তাঁর, আজ ২০২২-এ এসে দাঁড়িয়ে সেই জায়গায় তিনি নেই। অন্যদিকে, বিহার রাজনীতিত বিরোধী নেতা হিসাবে নিজের বিশ্বাসযোগ্যতা অনকেটাই গড়ে তুলেছেন তেজস্বী যাদব।