নয়াদিল্লি: কেরলের স্থানীয় নির্বাচনে নাম লিখিয়েছেন সনিয়া গাঁধী। তবে কংগ্রেসের হয়ে ভোটে লড়ছেন না তিনি। বরং সনিয়াকে প্রার্থী করেছে বিজেপি। রাজনীতিতে দলবদল নৈমিত্তিক ঘটনা হয়ে দাঁড়ালেও, এই সনিয়া গাঁধী, রাহুল গাঁধীর মা নন, বরং কেরলের এক তরুণী। দু’জনের নাম শুধু এক। যদিও বিজেপি সনিয়া গাঁধীকে প্রার্থী করেছে শুনেই ভিরমি খেয়েছেন অনেকে। (BJP Candidate Soniya Gandhi)
কেরলের মুন্নর পঞ্চায়েতের অন্তর্গত ১৬ নম্বর ওয়ার্ডে বিজেপি যে তরুণীকে প্রার্থী করেছে, তাঁর নাম সনিয়া। পদবী গাঁধী। বয়স ৩০ বছর। প্রাক্তন কংগ্রেস সভানেত্রী এবং এই তরুণীর নাম একই। তবে রাজনৈতিক মতাদর্শ আলাদা। তরুণী সনিয়ার বাবা দুরাইরাজ যদিও কংগ্রেস অনুরাগী। রাজীব গাঁধী-জায়াকে দেখে অনুপ্রাণিত হয়েই মেয়ের নামকরণ করেছিলেন। কিন্তু মেয়ে এখন সাবালিকা। তিনি বিজেপি-র প্রার্থী হয়েছেন। (Kerala News)
বাবার দরুণ কংগ্রেস সমর্থক পরিবারেই বেড়ে ওঠেন সনিয়া। কিন্তু তাঁর রাজনৈতিক অবস্থান বদলে গিয়েছে বিয়ের পর। বিজেপি সমর্থক সুভাষকে বিয়ে করেন সনিয়া। আর সেই থেকেই তাঁর জীবন ও রাজনীতির গতিপ বদলে গিয়েছে। এই মুহূর্তে ভোটের প্রচারে ব্যস্ত সনিয়া। গেরুয়া চাদর গায়ে চাপিয়ে ভোটারদের দরজায় পৌঁচ্ছে যাচ্ছেন। কোনও রকম ইতস্তত না করেই বলছেন, “আমি সনিয়া গাঁধী। পদ্মে ভোট দিন।”
নামের দরুণই বিশেষ করে সকলের নজর কেড়েছেন সনিয়া। সেই নিয়ে প্রশ্ন করলে বলেন, “বাবা কংগ্রেস কর্মী ছিলেন। নেহরু পরিবার এবং সনিয়া গাঁধীকে দেখে অনুপ্রেরণা পান। সেই অনুযায়ী আমার নাম রাখেন সনিয়া গাঁধী। আমার স্বামী যদিও বিজেপি কর্মী। তাই আমিও বিজেপি-র সমর্থক হয়ে গিয়েছি। কয়েক বছর আগে আমার পরিবার বিপদে পড়ে। সেই সময় না কংগ্রেস, না সিপিএম-এর কাছ থেকে সাহায্য় পেয়েছিলাম। তাই বিজেপি-তে যোগ দিই।”
সনিয়া যদি ইংরেজিতে নাম লেখার সময় বাড়তি 'y' যোগ করেন। কিন্তু স্থানীয় ভাষায় Sonia এবং Soniya একই ভাবে লেখা হয়। ফলে প্রচারে নামই সবচেয়ে বড় USP হয়ে উঠেছে সনিয়ার। এমনকি প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা কেরল বিজেপি-র সভাপতি পর্যন্ত সনিয়ার নামের উপর জোর দিয়েছেন।
সনিয়া জানিয়েছেন, নাম নিয়ে বরাবরই অস্বস্তিতে পড়তে হয়েছে তাঁকে। স্কুলে বন্ধুরা তো বটেই, শিক্ষক-শিক্ষিকারাও তাঁকে নিয়ে রসিকতা করতেন। অনেক বার নাম পাল্টানোর কথাও ভেবেছেন। কিন্তু এখন নামের সুফল পাচ্ছেন। নামের জন্যই তাঁকে নিয়ে কথা হচ্ছে, যা তাঁর প্রচারের জন্য ইতিবাচক। সনিয়া বলেন, “লোকজন ব্যঙ্ক করত বলে কখনও নিজের পুরো নাম বলতাম না। শুধু সনিয়া বা সোনি বলতাম। নির্বাচনী পোস্টার দেখে অনেকে আমার পুরো নাম জেনেছেন। এখন নাম নিয়ে আনন্দই হচ্ছে।”
ওই ওয়ার্ডে ত্রিমুখী লড়াই হতে চলেছে এবার। সনিয়ার বিরুদ্ধে লড়ছেন কংগ্রেসের মঞ্জুলা রমেশ এবং সিপিএম-এর বলরামাথি। আগামী ৯ ডিসেম্বর মুন্নর পঞ্চায়েতে নির্বাচন। দু’দফায় নির্বাচন হচ্ছে সেখানে।