আগরতলা: নৈশ কার্ফু না মেনে বিয়েবাড়ির আয়োজন। অভিযান চালিয়ে বন্ধ করে দিয়েছিলেন আগরতলার জেলাশাসক। বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতারের পাশাপাশি ওসি-কেও সাসপেন্ড করা হয় ৷ তবে বিষয়টা যে একটু ‘বাড়াবাড়ি’ হয়ে গিয়েছে, তা ঘটনার পরই টের পেয়ে যান ওই জেলাশাসক ৷ তাঁর সমালোচনায় সোশ্যাল মিডিয়ায় কমেন্টে ভরিয়ে দেন নেটিজেনরা ৷ শেষপর্যন্ত ক্ষমা চাইতে বাধ্য হন পশ্চিম ত্রিপুরার জেলা শাসক ও কালেক্টর শৈলেশ কুমার যাদব ৷ একটি স্থানীয় নিউজ চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘‘ আমার এই আচরণে কেউ আঘাত পেয়ে থাকলে আমি দুঃখিত ৷ আমি এর জন্য ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি ৷ এমনটা করেছিলাম সমাজের বৃহৎ অংশের স্বার্থের কথা ভেবে ৷ সবাইকে এটাই বার্তা দিতে চেয়েছিলাম, যে সরকারের দেওয়া বিধিনিষেধগুলি (SOP) মেনে চলুন ৷ ’’
ত্রিপুরার পশ্চিম জেলার জেলাশাসক শৈলেশ কুমার যাদব। সোমবার শহরের দুটি বিয়েবাড়িতে পুলিশ-সহ উপস্থিত হন তিনি। মাণিক্য কোট এবং গোলাপ বাগানে অভিযান চালায় পুলিশ। তার নেতৃত্বে ছিলেন ওই জেলাশাসক।
ঘটনার ভিডিও দ্রুত ভাইরাল হয়। যেখানে দেখা যায় বিয়ে বাড়িতে ঢুকে লাঠিচার্জ করে পুলিশ। কেন নৈশ কার্ফু না মেনে বিয়েবাড়ি আয়োজন করা হয়েছে? রীতিমতো ধমকান ওই জেলাশাসক। বিয়েবাড়িরই এক সদস্য বোঝানোর চেষ্টা করেন অনুমতিপত্র রয়েছে তাঁদের কাছে। এরপর সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি-সহ পুরোহিতকে গ্রেফতারের নির্দেশ দেন ওই জেলাশাসক। শুধু তাই নয়, পশ্চিম আগরতলা থানার ওসি-কে বরখাস্ত করার নির্দেশ দেন জেলাশাসক।
ভিডিওতে দেখা যায়, বিয়েবাড়িতে উপস্থিত এক মহিলা জেলাশাসককে অনুমতিপত্র দেখাতে এলে তিনি ওই কাগজ ছিড়ে ফেলেন। ওই মহিলা বলেন, স্যর এই অনুমতি পত্রটা দেখুন। সঙ্গে সঙ্গে মহিলার হাত থেকে কাগজ নিয়ে টুকরো টুকরো করে ছিড়ে ফেলেন তিনি। জেলাশাসক বলেন, অনুমতিটা বিয়ের জন্য, কিন্তু রাত ১০টার পর বিয়ের অনুষ্ঠান করার জন্য নয়।
অন্য আরেকটি বিয়েবাড়িতে গিয়েও আমন্ত্রিত-সহ বাড়ির লোকজনকে বের করে দেন ওই জেলাশাসক। বিয়েবাড়ির আলো বন্ধ করে দিতেও দেখা যায়। হঠাৎ কেন বিয়েবাড়িতে পুলিশ, তা দেখে হকচকিয়ে যান অনেকেই। শুধু তাই নয়, বিয়েবাড়িতে বরকে ঘাড় ধাক্কাও দেন শৈলেশ কুমার যাদব।
আগরতলার জেলাশাসকের অভিযান ঘিরে শুরু হয় বিতর্ক। এত বাড়াবাড়ি কেন? প্রশ্ন তুলে ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকারের। সমালোচনার মুখে শেষপর্যন্ত ক্ষমা চাইলেন জেলাশাসক শৈলেশ কুমার যাদব।