নয়াদিল্লি : করোনার সংক্রমণ লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। যার জেরে বৃহস্পতিবার থেকেই নাইট কার্ফু জারি করা হল নয়াদিল্লিতে। প্রাথমিকভাবে দিল্লি সরকার জানিয়েছে, ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত জারি থাকবে নাইট কার্ফু। অত্যাবশ্যকীয় প্রয়োজনে যাতায়াতে অবশ্য ছাড় থাকছে। 


নাইট কার্ফু চলাকালীন করোনা টিকাকরণ সংক্রান্ত বিষয়ে যাতায়াতে ছাড় থাকছে। পাশাপাশি চিকিৎসক, নার্স, চিকিৎসা ক্ষেত্রে যুক্ত সমস্ত কর্মী ও সংবাদমাধ্যমের কর্মীদের চলাচলে নিষেধাজ্ঞা থাকছে না। তবে তাদের নাইট কার্ফুতে বাইরে বেরোতে হলে পরিচয়পত্র সঙ্গে থাকা আবশ্যিক। আপদকালীন চিকিৎসা প্রয়োজনীয়তা, অন্তঃস্বত্ত্বা মহিলাদের প্রয়োজনে যাতায়াতেও থাকছে ছাড়। বিমানবন্দরে বা ট্রেন স্টেশনে যাওয়ার পথেও টিকিট সঙ্গে থাকা বাধ্যতামূলক।


গত শুক্রবারই সাংবাদিক সম্মেলনে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল জানিয়েছিলেন, এখনই লকডাউনের কথা ভাবা হচ্ছে না। তবে পরিস্থিতির দিকে কড়া নজর রাখা হচ্ছে, আর পরবর্তী যে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে জনসাধারণের মতামত নিয়েই।


সোমবার দিল্লিতে ৩৫৪৮ জন নতুন করে করোনার সংক্রমণে পড়েছেন। গত নভেম্বরের মতো অবস্থা এখনও সেখানে না হলেও আগেভাগে পরিস্থিতি সামলাতে পদক্ষেপ নিল দিল্লি সরকার। দেশের যে জায়গাগুলি করোনার জেরে সবথেকে বেশি প্রভাবিত হয়েছিল, তার মধ্যে অন্যতম ছিল দিল্লি। গত নভেম্বরে দৈনিক প্রায় ৯ হাজার লোক সংক্রমিত হয়েছিলেন দিল্লিতে।


মহামারির এই কালো মেঘ দেখে উদ্বেগ বাড়ছে। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকসূত্রে খবর, গত ২৪ ঘণ্টায় রেকর্ড সংক্রমণের প্রায় ৮২ শতাংশই ৮টি রাজ্যে--মহারাষ্ট্র, কর্ণাটক, ছত্তিশগড়, দিল্লি, তামিলনাড়ু, উত্তরপ্রদেশ, পঞ্জাব ও মধ্যপ্রদেশেও। জটিল পরিস্থিতি মোকাবিলায় রবিবার উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব থেকে শুরু করে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যসচিব এবং প্রশাসনের শীর্ষ কর্তা ব্যক্তিরা ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। সূত্রের খবর, এদিনের বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী পাঁচটি বিষয়ে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন। তা হল বেশি করে পরীক্ষা, চিহ্নিতকরণ, চিকিৎসা, কোভিড-উপযুক্ত ব্যবহার এবং টিকাকরণ। 


কেন্দ্রের তরফে রাজ্যগুলিকে বলা হয়েছে, সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে সবাই যেন আরও সচেতন হয়। বিশেষ করে মাস্কের ব্যবহার, দূরত্ব বিধি মেনে চলা, পরিচ্ছন্নতা, এই বিষয়গুলিতে বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করেছে কেন্দ্র। সেই সঙ্গে জোর দেওয়া হচ্ছে টিকাকারণে। দেশে তৃতীয় দফার কোভিড ভ্যাক্সিনেশন চলছে পুরোদমে। সংক্রমণ শৃঙ্খল ভাঙতে ৪৫ বছরের বেশি বয়সি নাগরিকদের কাছে আরও বেশি করে প্রতিষেধকের সুবিধা পৌঁছে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার।