নয়াদিল্লি: সামনে লোকসভা নির্বাচন। তার আগে অন্তবর্তীকালীন বাজেট। ১ ফেব্রুয়ারি সংসদে অন্তর্বর্তীকালীন বাজেট পেশ করবে কেন্দ্র (Interim Budget)। বেলা ১১টায় সংসদে বাজেট পেশ করবেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। লোকসভা নির্বাচনের আগে এই অন্তর্বর্তীকালীন জনমোহিনী বাজেট হতে চলেছে বলে এখন থেকেই দাবি করছেন অর্থনীতিবিদরা। এই মুহূর্তে সেই দিকেই তাকিয়ে গোটা দেশ। কিন্তু অন্তর্বর্তীকালীন এবং পূর্ণাঙ্গ বাজেটের মধ্যে বিস্তর ফারাক রয়েছে। (Interim Budget 2024)
অন্তর্বর্তীকালীন এবং পূর্ণাঙ্গ বাজেটের মধ্যে ফারাক
বাজেটের মাধ্যমে অর্থনৈতিক পরিকল্পনা গোটা দেশের সামনে তুলে ধরে সরকার। এই বাজেট হয় দুই রকমের, একটি অন্তর্বর্তীকালীন বাজেট, অন্যটি পূর্ণাঙ্গ বাজেট। এমনিতে ফেব্রুয়ারি মাসের শেষে লোকসভায় ধ্বনিভোটের মাধ্যমে যে বাজেট পেশ হয়, তাকে বলা হয় পূর্ণাঙ্গ বাজেট। এর মাধ্যমে নির্দিষ্ট অর্থবর্ষে নিজেদের পরিকল্পনার কথা জানায় কেন্দ্রের নির্বাচিত সরকার।
অন্তর্বর্তী কালীন বাজেট এই পূর্ণাঙ্গ বাজেটের থেকে একেবারে আলাদা। নির্বাচনের বছরে সংসদে অন্তর্বর্তীকালীন বাজেট পেশ করে কেন্দ্রের ক্ষমতাসীন সরকার। এর মাধ্যমে দু’-চার মাসের অর্থনৈতিক পরিকল্পনার কথা জানায় কেন্দ্র। এক্ষেত্রে লোকসভায় ধ্বনিভোটের প্রয়োজন পড়ে না। নির্বাচনকে মাথায় রেখে, অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে জনমোহিনী প্রকল্পের ঘোষণা হয় অন্তর্বর্তীকালীন বাজেটে।
অন্তর্বর্তীকালীন বাজেট কেন পেশ হয়?
নির্বাচনের কয়েক মাস আগে এই অন্তর্বর্তীকালীন বাজেট পেশ করা হয়।নির্বাচনের সময় যাতে দেশের অর্থনৈতিক বৃদ্ধি ব্যাহত না হয়, তার সপক্ষে আশ্বাস দেয় কেন্দ্র। নয়া সরকার নির্বাচিত না হওয়া পর্যন্ত, স্বল্পমেয়াদে সরকার কত আয় করছে, কত ব্যয় করছে, তার হিসেব তুলে ধরা হয়। নির্বাচনের পর নয়া সরকার তার পর পূর্ণাঙ্গ বাজেট পেশ করে।
অন্তর্বর্তীকালীন বাজেটে যে বিষয়গুলির উপর বিশেষ করে জোর দেওয়া হয়-
১) চালু প্রকল্প থেকে আপদকালীন প্রয়োজন, কোন খাতে সরকার কত বরাদ্দ হয়েছে, কত টাকা ব্যয় করছে সরকার, নতুন কী প্রকল্প আনা হচ্ছে, তার হিসেব থাকে।
২) নীতি নিয়ম বা দীর্ঘমেয়াদি সংস্কার এড়িয়ে যাওয়া হয়। প্রশাসনের উপর অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড ধরে রাখার দায় বর্তায়।
৩) পূর্ণাঙ্গ বাজেটের মতো অন্তর্বর্তীকালীন বাজেটে সমর্থনের প্রয়োজন পড়ে না। সরকার শুধু নিজেদের পরিকল্পনা সম্পর্ক অবগত করায় দেশবাসীকে।
অন্তর্বর্তীকালীন বাজেট যে কারণে গুরুত্বপূর্ণ
তবে পূর্ণাঙ্গ বাজেট নয় বলে অন্তর্বর্তীকালীন বাজেটকে হেলাফেলা করা যায় না। অন্তর্বর্তীকালীন বাজেটের মাধ্যমে দেশবাসীর মনজয়ের চেষ্টা করে ক্ষমতাসীন সরকার। আর কয়েক মাসের মধ্যেই লোকসভা নির্বাচন, তাই এবারের অন্তর্বর্তীকালীন বাজেট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ নরেন্দ্র মোদি সরকারের জন্য। তৃতীয় বার কেন্দ্রে ক্ষমতায় ফেরার আগে তাঁর সরকার কী ঘোষণা করে, সেদিকে তাকিয়ে গোটা দেশ। আগামী ৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত অন্তর্বর্তীকালীন বাজেট অধিবেশন চলবে সংসদে। আগামী ১ এপ্রিল থেকে নতুন ২০২৪'-২৫ অর্থবর্ষের সূচনা হচ্ছে। মে-জুন মাস নাগাদ লোকসভা নির্বাচন মিটে গিয়ে নয়া সরকার ক্ষমতায় আসবে। তার পর পূর্ণাঙ্গ বাজেট পেশ হবে সংসদে।