কলকাতা: একেবারে অন্য গোলার্ধ। বাংলার মতো সেখানেও ভরা শরৎকাল কিনা জানা নেই। কিন্তু শারদ উৎসব আছে ষোলোআনা। আর তা সম্ভব হয়েছে একঝাঁক বাঙালির হাত ধরে।


দেশটার নাম কানাডা (Canada)। সেই দেশের ডারহাম (Durham) শহরের আকাশে-বাতাসে এখন শারদ উৎসবের ছোঁয়া। সৌজন্যে আগমনী দুর্গা পুজো। আগমনী কালচারাল অ্যাসোসিয়েশনের হাত ধরে হয় এই পুজো। কানাডার মাটিতে বাঙালি সংস্কৃতি চর্চা এই সংগঠনের অন্যতম আগ্রহের বিষয়। দুর্গাপুজো বাদ রেখে যেটা সম্ভব নয়। তাই হাজার ব্যস্ততার মধ্য়েও সময় বের করেছেন সেখানকার প্রবাসী বাঙালিরা। ধুমধাম করে হতে চলেছে বাঙালির সবচেয়ে প্রিয় উৎসব। হাত মিলিয়েছেন আরও অনেকেই।


শরৎ কালের দুর্গাপুজো (Durga Pujo) আসলে 'অকালবোধন'। রামচন্দ্রের হাতে শরৎকালে পুজো পেয়েছিলেন দেবী দুর্গা। সেই পুজো অবশ্য কানাডার (Canada) ডারহামে আরও একটু অন্যসময়ে হচ্ছে। সেখানে পিতৃপক্ষেই শুরু হচ্ছে দুর্গোৎসব। ২৪ ও ২৫ সেপ্টেম্বর হচ্ছে আগমনী কালচারাল অ্যাসোসিয়েশনের এই দুর্গাপুজো। ডারহামের চেস্টনাট হিল ডেভেলপমেন্টস রিক্রিয়েশন কমপ্লেক্সে (Chestnut Hill Developments Recreation Complex) হবে এবারের পুজো। 


ভরপুর উৎসাহ:
ডারহামে আগমনী দুর্গা পুজো ২দিনের হলেও উদ্যোগে ছিটেফোঁটা ঘাটতিও নেই। দিনভর ব্যস্ততা, তুমুল কাজের চাপ সব সামলে ধীরে ধীরে নেওয়া হয়েছে যাবতীয় প্রস্তুতি। দীর্ঘদিন ধরে পরিকল্পনা করা হয়েছে। যা যা প্রয়োজনীয় জিনিস লাগবে তার তালিকা তৈরি করা হয়েছে। সুষ্ঠুভাবে পুজো করার জন্য হাতে সময় নিয়ে সেসব জোগাড়ও করেছেন পুজো উদ্য়োক্তারা। ২৩ সেপ্টেম্বর রাত থেকেই শুরু শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। সাজানো হয়েছে পুজোর জায়গা। ২৪ এবং ২৫ সেপ্টেম্বর ধুমধাম করে হতে চলেছে পুজোর আয়োজন। ২০২১-এ প্রথম বার পুজো করেছে আগমনী। কিন্তু সেই সময় ছিল কোভিডের দাপট। ফলে নানা কোভিড প্রোটোকল মেনে পুজো করতে হয়েছে। এবার অবশ্য সেই ছবি আর নেই। ফলে এবার যাবতীয় বিধিনিষেধ ছাড়াই দুর্গাপুজোয় মাতছেন উৎসাহীরা। আয়োজনও হচ্ছে জমাটি।


কবে কীভাবে পুজো:
২৪ সেপ্টেম্বর কলাবউ স্নানের মধ্যে দিয়ে শুরু হবে পুজো। ওইদিনই সপ্তমীর অঞ্জলি এবং অষ্টমীর পুজোও হবে। তার পরের দিন ২৫ সেপ্টেম্বর হবে নবমীর যজ্ঞ। সেদিনই দশমীও পালন হবে। সঙ্গে থাকবে ধুনুচি নাচের আসর।


জমাটি ভোগ:
বাঙালির দুর্গাপুজোয় গুরুত্বের দিক থেকে ২টি বিষয় একেবারে প্রথম দিকে থাকে। তার একটি হল ভোগ। ডারহামের পুজোর ভোগে থাকছে নিখাদ বাংলার গন্ধ। উদ্যোক্তারা জানাচ্ছেন, ভোগে থাকছে খিচুড়ি, পাঁচ রকমের ভাজা, পায়েস এবং চাটনি।



গত বছরেও ছিল ভোগের আয়োজন


সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান:
একটু আগেই যে ২টি বিষয়ের কথা বলা হল, তার একটি ভোগ, আর অন্যটি হল সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। সেই কথা মাথায় রেখেই সন্ধেয় থাকছে মনকাড়া সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের সম্ভার। তার জন্য় অবশ্য দীর্ঘদিন ধরে চলেছে মহড়া। সময় বের করে সেই মহড়াতে অংশ নিয়েছেন শিল্পীরা। 


কানাডার ডারহামের এই পুজোর প্রতিমাতেও রয়েছে বাংলার ছোঁয়া। কুমোরটুলির শিল্পী কৌশিক ঘোষের তৈরি প্রতিমাতেই শারদ-আবাহনে মাতছেন এই শহরের প্রবাসী বাঙালিরা।


আরও পড়ুন:  পঞ্জিকা মেনে একই দিনে দেবী বোধন অ্যাডিলেডে, অস্ট্রেলিয়ায় যেন এক টুকরো তিলোত্তমার ছোঁয়া