নয়াদিল্লি: ন্যাশনাল হেরাল্ড সংবাদপত্র তছরুপ মামলায় এ বার কংগ্রেস (Congress) সভানেত্রী সনিয়া গাঁধী (Sonia Gandhi) এবং সাংসদ রাহুল গাঁধীকে (Rahul Gandhi) তলব করল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (Enforcement Directorate)। আগামী ৮ জুন তদন্তকারীদের সামনে হাজিরা দিতে বলা হয়েছে সনিয়াকে। রাহুলকে ডাকা হয়েছে ২ জুন। সনিয়া নির্ধারিত দিনেই হাজিরা দেবেন বলে ইতিমধ্যেই নিশ্চিত করেছেন দলের সাংসদ অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি। বিদেশে থাকায় রাহুল ২ জুন হাজিরা দিতে পারবেন না বলে জানিয়েছেন তিনি।


সনিয়া-রাহুলকে তলব ইডি-র


রাহুলের জন্য ৫ জুনের পর কোনও দিন হাজিরার জন্য ঠিক করতে আবেদন জানাবে কংগ্রেস। ইডি সূত্রে জানা গিয়েছে, আর্থিক তছরুপ মামলায় অপরাধ ধারায় (Money Laundering Act/PMLA) গাঁধীদের বয়ান রেকর্ড করা হবে। তবে গাঁধীদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের কোনও সত্যতা নেই বলে দাবি কংগ্রেসের।  কংগ্রেস আরও জানিয়েছে, সনিয়া এবং রাহুল তদন্তকারীদের সঙ্গে হাজিরা দিতে বদ্ধপরিকর। কোনও রকম স্থগিতাদেশই চান না। কারণ তাঁদের কাছে এটি রাজনৈতিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক এবং আইনি লড়াই। এই মামলায় সম্প্রতি মল্লিকার্জুন খড়্গে, পবন জয়সওয়ালদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। 


ন্যাশনাল হেরাল্ড সংবাদপত্রটি অ্যাসোসিয়েটেড জার্নালস লিমিটেড (AJL) থেকে প্রকাশিত হত, যার মালিক সংস্থা ছিল ইয়ং ইন্ডিয়ান প্রাইভেট লিমিটেড। জওহরলাল নেহরু প্রতিষ্ঠিত ওই সংবাদপত্র নিয়ে আগে দুর্নীতির অভিযোগ উঠলেও,  ২০১৪ সালে নরেন্দ্র মোদি সরকার ক্ষমতায় আসার পর বিষয়টি নিয়ে নতুন করে জলঘোলা শুরু হয়, যার মূল হোতা ছিলেন প্রাক্তন বিজেপি সাংসদ সুব্রহ্মণ্যম স্বামী। আদালতে তিনি জানান, যে এজেএল সংস্থার হাতে সংবাদপত্রটির মালিকানা ছিল, বাজারে ৯০ কোটি টাকা দেনা ছিল তাদের, যার বেশিরভাগটাই কংগ্রেসের কাছ থেকে নেওয়া হয়েছিল। ২০০৮ সালে সংবাদপত্রটির প্রকাশনা বন্ধ হয়ে যায়। সেই অবস্থাতেই মাত্র ৫০ লক্ষ টাকার বিনিময়ে সংস্থাটি অধিগ্রহণ করে কংগ্রেস মালিকানাধীন  ইয়ং ইন্ডিয়ান প্রাইভেট লিমিটেড সংস্থা, যার পর ন্যাশনাল হেরাল্ডের কয়েক হাজার কোটি টাকার সম্পত্তি ইয়ং ইন্ডিয়ানের দখলে চলে আসে। আবার ৯০ কোটি টাকা উদ্ধারের বাড়তি সুবিধাও।


আরও পড়ুন: Political Donations: অতিমারিতে চাঁদা-অনুদানে ঘাটতি, আয় কমেছে বিজেপি-কংগ্রেসের, এখনও ধনীতম পদ্মই


স্বামীর অভিযোগ, ইয়ং ইন্ডিয়ান সংস্থাটিতে কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া এবং রাহুলের ৮৬ শতাংশ টাকার শেয়ার রয়েছে। তা নিয়ে আদালতে স্বামী জানান, নামমাত্র মূল্যে এজেএল তথা ন্যাশনাল হেরাল্ডকে কিনে নিয়ে বিপুল অঙ্কের সম্পত্তির অধিকারী হয়েছে সনিয়া-রাহুলদের সংস্থা ইয়ং ইন্ডিয়ান। দলের টাকাকে সনিজেদের ব্যক্তিগত সম্পত্তিতে রূপান্তর করা হয়েছে।  শুধু সনিয়া-রাহুলের বিরুদ্ধে শুধু নয়, এই মামলায় মতিলাল বোহরা, অস্কার ফার্নান্ডেজ, সুমন দুবে এবং স্যাম পিত্রোদার বিরুদ্ধেও আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। বিপুল টাকার করফঁকির অভিযোগও রয়েছে।


রাজনৈতিক প্রতিহিংসার অভিযোগ কংগ্রেসের


তবে কংগ্রেসের দাবি, মিথ্যে অভিযোগ এনে দলের নেতাদের হেনস্থা করা হচ্ছে। আসল সমস্যা থেকে নজর ঘোরানোর কারসাজি। এর আগে ইডি-র তরফে মামলাটি বন্ধ করে দেওয়া হলেও, বিজেপি প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতে, নতুন আধিকারিক নিয়োগ করে সেটি পুনরায় খুলিয়েছে বলে দাবি কংগ্রেসের।