রাঁচি: ঝাড়খণ্ডের আইএএস (Jharkhand IAS Arrested) অফিসার পূজা সিঙ্ঘলকে (Pooja Singal) গ্রেফতার করল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (Enforcement Directorate/ED)। কেন্দ্রের ১০০ দিনের কাজের তহবিল থেকে অর্থ তছরুপের অভিযোগ রয়েছে ঝাড়খণ্ডের খনিসচিব পূজার বিরুদ্ধে। দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদের পর তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। এর আগে সোমবার প্রায় ৯ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল ওই আইএএস অফিসারকে। এই মামলায় গত ৭ মে, চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট সুমন কুমারকে গ্রেফতার করেছিল ইডি। 


দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার পূজা সিঙ্ঘল


ইডি সূত্রে জানা গিয়েছে, তদন্তে নেমে এখনও পর্যন্ত রাঁচির দু'জায়গা থেকে ১৯ কোটি ৩১ লক্ষ টাকা উদ্ধার করা গিয়েছে। এর মধ্যে পূজা এবং তাঁর পরিবারের ঘনিষ্ঠ এক চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট তথা তাঁদের অর্থনৈতিক উপদেষ্টা সুমন কুমারকে গ্রেফতার করা হয়। তাঁর কাছ থেকেই শুধুমাত্র নগদে ১৭ কোটি ৫১ লক্ষ টাকা উদ্ধার করেন তদন্তকারীরা। এ ছাড়াও, অন্য একটি জায়গা থএকে নগদে আরও ১ কোটি ৮০ লক্ষ টাকা উদ্ধার করা হয়। পাহাড়প্রমাণ টাকা গুনতে স্থানীয় ব্যাঙ্ক থেকে আনতে হয় টাকা গোনার যন্ত্রও।  ১০০, ২০০, ৫০০ এবং ২০০০ টাকার নোটের বান্ডিল থরে থরে সাজানো অবস্থায় সেই ছবি এবং ভিডিও সামনে আসে। 


ঝাড়খণ্ড সরকারের খনি এবং ভূতত্ত্ব বিভাগের সচিব পূজা। ঝাড়খণ্ডের খুঁটি জেলার ডেপুটি কমিশনারের দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি পূর্বতন বিজেপি সরকারের কৃষি সচিব হিসেবেও কর্মরত ছিলেন। ইন্ডিয়ান অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস ২০০০ ব্যাচের অফিসার পূজা। ১০০ দিনের কাজ প্রকল্প থেকে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ তাঁর বিরুদ্ধে। তা খতিয়ে দেখতেই সম্প্রতি পূজার বাড়ি, দফতর-সহ একাধিক জায়গায় হানা দেন ইডি-র তদন্তকারীরা।



আরও পড়ুন: Narendra Modi: আগামীকাল দ্বিতীয় গ্লোবাল কোভিড সামিটে মোদি, কী বার্তা প্রধানমন্ত্রীর?


আর্থিক তছরুপের এই মামলায় ঝাড়খণ্ড, বিহার, পশ্চিমবঙ্গ, দিল্লি, পঞ্জাব মিলিয়ে প্রায় ১৮টি জায়গায় তল্লাশি চালান তদন্তকারীরা। রাঁচিতে একটি হাসপাতালেও তল্লা চালান ED আধিকারিকরা। এই মামলায় এর আগে ঝাড়খণ্ড সরকারে কর্মরত জুনিয়র ইঞ্জিনিয়ার রাম বিনোদপ্রসাদ সিনহাকে পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগনা জেলা থেকে ২০২০-র ১৭ জুন গ্রেফতার করে ED। আর্থিক তছরুপের মামলা দায়ের হয় তাঁর বিরুদ্ধে। এ ছাড়াও ১৬টি এফআইআর এবং চার্জশিটে ধরে তদন্ত এগোয়। জানা যায়, পুজা যখন খুঁটির দায়িত্বে ছিলেন, সেই সময় সরকারি প্রকল্প থেকে নিয়মিত মোটা টাকা নিজের এবং পরিবারের অন্য সদস্যদের অ্যাকাউন্টে জমা করতেন তিনি। তাঁর ৪ কোটি ২৮ লক্ষ টাকার সম্পত্তি আগেই বাজেয়াপ্ত হয়।



পূজার বিরুদ্ধে দুর্নীতির একাধিক অভিযোগ


পূজার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ যদিও এই প্রথম নয়। তদন্তে জানা গিয়েছে, রাঁচি থেকে কলকাতা, একাধিক সম্পত্তির মালকিন তিনি। কলকাতার রাজার হাটে একটি বাড়ি রয়েছে তাঁর। সেখান থেকে বছরে প্রথম পক্ষের স্বামীর সঙ্গে মিলে ভাড়াবাবদই ৬ লক্ষ টাকা আয় ছিল তাঁর। ২০০৮-’০৯ সালে রাঁচিতে সিভিল সার্ভিস অফিসারদের কোঅপারেটিভ সোসাইটে-তে ৭৮ হাজার বর্গফুটের একটি জমি নিজের নামে নেন পূজা রাঁচির একটি ব্যবসায়িক ভবনে ৪ হাজার ৫০০ বর্গফুটের একটি দোকানও রয়েছে তাঁর।


ওই দোকানটি দ্বিতীয় স্বামীর নামে করে রেখেছেন তিনি। সেখান থেকে ভাড়া বাবদ আয় হয় ১০ লক্ষ টাকা। এ ছাড়াও, রাঁচির অশোক নগরে দ্বিতীয় স্বামীর সঙ্গে মিলে ৮০ লক্ষ টাকা দিয়ে একটি বাড়ি কিনেছেন তিনি। সেখান থেকে তিন লক্ষ টাকা ভাড় পান বছরে।